মানবজাতির জন্য মারাত্মক সতর্কবার্তা জাতিসংঘের - Southeast Asia Journal

মানবজাতির জন্য মারাত্মক সতর্কবার্তা জাতিসংঘের

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক কুপ্রভারে ফলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বন্যা, খরা, অস্বাভাবিক উচ্চ তাপমাত্রা, দাবানলের মতো মারত্মক বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটছে।

পৃথিবীর জলবায়ু অল্প সময়ে যেভাবে বদলেছে, তেমনটা লাখো বছরেও ঘটেনি। পৃথিবীর উষ্ণতা যেভাবে বাড়ছে তাতে চূড়ান্ত বিপদের খুব কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে মানবসভ্যতা। আর সেজন্য মানুষকেই পুরোপুরি দায়ী করেছে জাতিসংঘের পরিবেশ বিজ্ঞান সংগঠন আইপিসিসি।

সোমবার জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তঃসরকার প্যানেলের (আইপিসিসি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই পরিবর্তন অনেক ক্ষেত্রে আর সংশোধনের উপায় নেই, যা মানবজাতিকে অনিবার্য পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।

নীতিনির্ধারকদের জন্য সারসংক্ষেপ’ শিরোনামে সোমবার প্রকাশিত ৪২ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী দুই দশকের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রাক শিল্পায়ন যুগের তুলনায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে, ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে উষ্ণায়নকে যে মাত্রায় বেধে রাখার অঙ্গীকার বিশ্বনেতারা করেছিলেন, তা পূরণ করা হয়ত সম্ভব হচ্ছে না।

আর এই উষ্ণতা বৃদ্ধির ফল হবে মানবজাতির জন্য মারাত্মক। এ শতকের শেষে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা দুই মিটার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনার বিষয়টিকে বিজ্ঞানীরা আর উড়িয়ে দিতে পারছেন না।

তবে একটি আশার আলো দেখিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়ছে, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণ ব্যাপক হারে কমিয়ে আনা গেলে বাড়তে থাকা উষ্ণতায় ভারসাম্য ফিরে আসতে পারে।

সোমবার থেকে জাতিসংঘের পরিবেশ বিজ্ঞান সংগঠন আইপিসিসি মোট চারটি রিপোর্ট প্রকাশ করতে চলেছে৷ ফলে গ্লাসগো শহরে শীর্ষ সম্মেলনের আগে বিশ্বনেতাদের উপর আরো চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। জলবায়ু প্রবণতায় রাশ টানতে দ্রুত হস্তক্ষেপ করার জন্য চাপ ও তাগিদও বাড়ছে৷ নভেম্বর মাসে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে বিশ্বনেতারা সেই লক্ষ্যে সম্মিলিত লক্ষ্যমাত্রা স্থির করবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷

এমনই প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব সম্পর্কে মূল্যায়ন পেশ করেছে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট দপ্তর৷ জেনেভায় আজ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মোট চারটি রিপোর্ট প্রকাশিত হবে৷ ৬৬টি দেশের ২৩৪ জন লেখক বিশ্বের সম্মিলিত বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সমন্বয়ে সেই সংকলন তৈরি করছেন৷ সাত বছর আগে শেষ বার সার্বিক পরিস্থিতির এমন বিস্তারিত মূল্যায়ন করা হয়েছিল৷ ১৯৯০ সাল থেকে এই নিয়ে মোট ছয়বার জাতিসংঘ এমন রিপোর্ট পেশ করছে৷

২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির আওতায় গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমিয়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছিল৷ সেই প্রবণতা বড়জোর দুই ডিগ্রি, সম্ভব হলে দেড় ডিগ্রির বেশি যাতে না বাড়তে পারে, তা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছিলেন বিশ্বনেতারা৷ কিন্তু কার্যক্ষেত্রে আন্তরিকতার অভাব দেখা গেছে৷ কিন্তু সাম্প্রতিক বিপর্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে গ্লাসগো সম্মেলনে আরো জোরালো পদক্ষেপ নেবার জন্য চাপ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে৷