সুনামগঞ্জ সীমান্তে চোরাকারবারীরা বেপরোয়া, মদসহ গ্রেপ্তার ২
![]()
নিউজ ডেস্ক
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্তে ঈদকে সামনে রেখে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাকারবারীরা। একাধিক মামলার আসামিরা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে কয়লা, পাথর, পান-সুপারী, বিড়ি, চিনি, কাঠ, মদ-গাঁজা, ছাগল, গরু, মহিষ ও ইয়াবাসহ অস্ত্র পাচার করছে। আর এসব অবৈধ মালামাল আটক করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে বিজিবি সদস্যরা।
গত ২৫ মার্চ শনিবার রাত ৮টায় জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার নরশিংপুর ইউনিয়নের চাটুরপাড় গ্রামে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন (২৮) ও ইয়াছিন (২৭) কে ৬০ বোতল ভারতীয় মদসহ গ্রেপ্তার করেছে।
অন্যদিকে উপজেলার মৌলারপাড় সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাকারবারীরা ভারত থেকে বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্যসহ মহিষ পাচার করার সময় বাংলাবাজার ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ২টি মহিষ আটক করে। পরে সেই মহিষ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার সময় চোরাকারবারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। ওই সময় আত্মরক্ষার্থে বিজিবি ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করলে চোরাকারবারীরা পালিয়ে যায়।
এঘটনার প্রেক্ষিতে গতকাল রবিবার (২৬ মার্চ) রাতে বাংলাবাজার বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার মনোয়ার পারভেজ বাদী হয়ে ১২জনের নাম উল্লেখ্যসহ আরো ২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি দিয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অপরদিকে গত শনিবার (১৮ মার্চ) ভোরে জেলার তাহিরপুর উপজেলার বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সামনে অবস্থিত দুধের আউটা গ্রামের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সামনে পাটলাই নদীতে চোরাকারবারী ও সোর্সদের গডফাদার হাবিব সারোয়ার আজাদের (তোতলা আজাদ) নেতৃত্বে ১টি ইঞ্জিনের নৌকায় প্রায় ১ শত মেঃ টন চোরাই কয়লা বোঝায় করছিল সোর্স জিয়াউর রহমান জিয়াগং। এ খবর পেয়ে টেকেরঘাট ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার ইয়াহিয়া খান অভিযান চালিয়ে অবৈধ কয়লার নৌকা আটক করার পর গডফাদার তোতলা আজাদ ও তার বাহিনীর তোপের মুখে পড়ে।
এরপর সকাল ৮টায় আটককৃত সেই অবৈধ কয়লা বোঝায় নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয় বৈধ কয়লা বলে। আর এই এঘটনাটি তাৎক্ষণিক ভাবে জানাজানি হলে পুরো সীমান্ত এলাকা জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। এরপর থেকে কোন প্রকার বাঁধা ছাড়াই কয়লা পাচার হচ্ছে।
এ ব্যাপারে তাহিরপুর সীমান্তের টেকেরঘাট কোম্পানীর বিজিবি কমান্ডার ইয়াহিয়া খান বলেন- বিএসএফের গুলিতে ১জনের মৃত্যু হওয়ার পর আমি টেকেরঘাট যোগদান করে চোরাচালান অনেক নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলাম। কিন্তু আমি বনগাঁও সীমান্ত ক্যাম্পে বদলী হয়ে গেছি।
দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেবদুলাল ধর সাংবাদিকদের বলেন- বিজিবির ওপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত অভিযোগের অভিযুক্ত চোরাকারবারীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক মাহবুবুর রহমান বলেন- বিজিবির ওপর চোরাকারবারীদের হামলার ঘটনাটি জানতে পেরেছি, দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার সীমান্ত সিলেট জোনের অংশ, তবে সীমান্ত চোরাচালান ও চাঁদাবাজি প্রতিরোধ করার জন্য আমরা নিয়মিত কাজ করছি।