পাল্টা হামলায় ৫৮ পাক সেনা হত্যার দাবি আফগানিস্তানের, গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত বন্ধ করল পাকিস্তান

পাল্টা হামলায় ৫৮ পাক সেনা হত্যার দাবি আফগানিস্তানের, গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত বন্ধ করল পাকিস্তান

পাল্টা হামলায় ৫৮ পাক সেনা হত্যার দাবি আফগানিস্তানের, গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত বন্ধ করল পাকিস্তান
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলসহ দেশটির ভূখণ্ডে পাকিস্তানের বিমান হামলার পাল্টা জবাব দিয়েছে তালেবান বাহিনী। এই হামলায় পাকিস্তানের অন্তত ৫৮ সেনা নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন আফগান কর্মকর্তারা।

রোববার (১২ অক্টোবর) তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক এক্স পোস্টে বলেন, আফগান বাহিনী বিপুল পরিমাণ পাকিস্তানি অস্ত্রও দখল করেছে। অভিযানে আফগান তালেবান বাহিনীরও ২০ জনের বেশি সদস্য নিহত বা আহত হয়েছে।

পাকিস্তান এখনও আফগান সরকারের এই দাবির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

এর আগে হেলমান্দ প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র মৌলভী মোহাম্মদ কাসিম রিয়াজ গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতে বাহরামপুর জেলার ডুরান্ড লাইনের কাছে আফগান বাহিনীর পাল্টা অভিযানে ১৫ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, অভিযানে তিনটি পাকিস্তানি সামরিক ফাঁড়ি দখল ও অস্ত্র-গোলাবারুদ জব্দ করেছে আফগান বাহিনী।

আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, পাল্টা হামলায় এক ডজনেরও বেশি পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। তবে এ বিষয়ে ইসলামাবাদ এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

গত বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল ও পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিকা প্রদেশে পাকিস্তানের বিমান হামলার অভিযোগ তুলে তালেবান সরকার প্রতিশোধ নেয়ার অঙ্গীকার করেছিল।

ইসলামাবাদ বিমান হামলার অভিযোগ স্বীকারও করেনি, আবার অস্বীকারও করেনি। তবে কাবুলকে আহ্বান জানিয়েছে ‘পাকিস্তানবিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন’ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) আশ্রয় দেয়া বন্ধ করতে।

সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের হামলার জবাবে শনিবার রাতে হেলমান্দ, কান্দাহার, জাবুল, পাকতিকা, খোস্ত, নাঙ্গারহার এবং কুনার প্রদেশে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর চৌকি লক্ষ্য করে হামলা চালায় আফগান বাহিনী। এই প্রদেশগুলো পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে অবস্থিত।

আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এনায়েতুল্লাহ খোয়ারাজমি বলেছেন, এটি পাকিস্তানের আফগান আকাশসীমা লঙ্ঘনের জবাবে পাল্টা অভিযান ছিল। তিনি বলেন, স্থানীয় সময় মধ্যরাতে আক্রমণটি শেষ হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘যদি প্রতিপক্ষ আবারও আফগানিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে, তাহলে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আকাশসীমা রক্ষায় প্রস্তুত আছে এবং কঠোর জবাব দেবে।

এদিকে নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে রোববার পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম পিটিভি জানিয়েছে, আফগানিস্তানের তালেবানের হামলার জবাবে দেশটির সীমান্তের ১৯টি আফগান সীমান্ত চৌকি দখল করেছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।

সূত্র আরও জানিয়েছে, চৌকিতে থাকা আফগান তালেবান নিহত হয়েছেন এবং বাকি সদস্যরা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়েছেন। কিছু চৌকিতে আগুন লাগার ঘটনাও ঘটেছে।

রেডিও পাকিস্তান জানিয়েছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তালেবানের মনোজবা ক্যাম্প ব্যাটালিয়ন সদর দফতর, জান্দুসার পোস্ট, তুর্কমেনজাই ক্যাম্প এবং খারচর দুর্গ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তানের দিক থেকে গোলাগুলির লক্ষ্য ছিল খাওয়ারিজ গঠনগুলোকে পাকিস্তানের সীমান্তে প্রবেশ করানো। তবে, সতর্ক ও প্রস্তুত পাকিস্তানি পোস্ট দ্রুত এবং জোরালো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

পাল্টা হামলায় ৫৮ পাক সেনা হত্যার দাবি আফগানিস্তানের, গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত বন্ধ করল পাকিস্তান

গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত বন্ধ করল পাকিস্তান

রাতভর গুলি বিনিময়ের পর প্রতিবেশী আফগানিস্তানের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রোববার (১২ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।

শনিবার (১১ অক্টোবর) গভীর রাতে পাকিস্তানের সীমান্ত চৌকি লক্ষ্য করে হামলা চালায় আফগান বাহিনী। দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, সপ্তাহের শুরুতে আফগানিস্তানে পাকিস্তানের বিমান হামলার জবাব দিয়েছে তালেবান বাহিনী।

পাকিস্তান জানিয়েছে, পাল্টা হামলায় বেশ কয়েকটি আফগান সীমান্ত চৌকি ধ্বংস হয়েছে।

পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রোববার সকালে দুই পক্ষের গুলি বিনিময় শেষ হয়েছে। তবে স্থানীয় কর্মকর্তা ও বাসিন্দারা বলছেন, পাকিস্তানের কুররাম এলাকায় গুলিবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।

কর্মকর্তারা জানান, আফগানিস্তানের সাথে পাকিস্তানের দুটি প্রধান সীমান্ত ক্রসিং তোরখাম ও চামান রোববার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া খারলাচি, আঙ্গুর আদা ও গুলাম খানে কমপক্ষে তিনটি ছোট ক্রসিংও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

সীমান্ত বন্ধের বিষয়ে কাবুলের তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মধ্যরাতে পাকিস্তানে তাদের অভিযান শেষ হয়েছে।

তালেবান প্রশাসনের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, আফগানিস্তানের ভূখণ্ডের কোনো অংশেই কোনো ধরনের হামলার হুমকি নেই।

স্থলবেষ্টিত আফগানিস্তানের সাথে পাকিস্তানের ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার (১ হাজার ৬০০ মাইল) দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ইসলামাবাদ তালেবান প্রশাসনকে পাকিস্তানে হামলকারী ‘জঙ্গিদের’ আশ্রয় দেয়ার অভিযোগ করে আসছে। তবে কাবুল বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে।

পাকিস্তানের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার কাবুলে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) গোষ্ঠীর নেতাকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।