সীমান্ত হত্যা ও ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ

সীমান্ত হত্যা ও ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ

সীমান্ত হত্যা ও ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

মৌলভীবাজার ও লালমনিরহাট সীমান্তে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের অপপ্রচারের প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ-এর উদ্যোগে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি লেঃ কর্নেল খন্দকার ফরিদুল আকবর এর সভাপতিত্বে এবং প্রধান সমন্বয়ক মোঃ মোস্তফা আল ইহযায এর সঞ্চালনায় কর্মসূচি শুরু হয়।

প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জিয়া আইনজীবী ফোরামের সহ-সভাপতি এডভোকেট এ এম এন আবেদ রাজা। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন জঙ্জু নরমাল ইউনিভার্সিটি, চীনের ভিজিটিং প্রফেসর ড. আবু মূসা মোঃ আরিফ বিল্লাহ। আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামি বুদ্ধিজীবী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ আব্দুল হান্নান আল হাদী, জাতীয়তাবাদী তাতীদলের যুগ্ম সম্পাদক ড. মনিরুজ্জামান, আরজেএফ চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম, মিলন মল্লিকা, আব্দুল আলীম, এবং মৌলভীবাজার–লালমনিরহাট থেকে আগত বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।

সভায় বক্তারা সাম্প্রতিক দুই সীমান্ত হত্যা—মৌলভীবাজারের কর্মধা ইউনিয়নে শুকুরাম উরাং (২৫) এবং লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে সবুজ ইসলাম (২৫)—হত্যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সীমান্তে বিএসএফ-এর গুলিতে বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ড এখন ‘নিয়মিত ঘটনা’তে পরিণত হয়েছে, যা একটি স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য মারাত্মক হুমকি।

বক্তারা বলেন, সীমান্তে যে কোনো সময়, যে কোনো অজুহাতে বিএসএফ-এর গুলিতে বাংলাদেশের নিরীহ মানুষ নিহত হচ্ছেন। শুধু ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই জেলায় দুই যুবকের প্রাণহানি এর ভয়াবহতারই প্রমাণ। তিনি আরও স্মরণ করিয়ে দেন—২৯ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে শহিদুল ইসলামকে হত্যার পরদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে দুই বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যা করে পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়, যা সীমান্ত ইতিহাসের এক নৃশংস উদাহরণ।

এডভোকেট আবেদ রাজা তার বক্তব্যে বলেন, কেবল মৌলভীবাজারেই গত এক বছরে পাঁচজন বাংলাদেশি বিএসএফ-এর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন। সিলেট বিভাগের বিভিন্ন সীমান্তে একই সময়ে আরও অন্তত নয়জন নাগরিক নিহত হন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, গত ১১ বছরেই বিএসএফ-এর হাতে ৩৪৮ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। ২০২৪–২৫ সালে সীমান্ত হত্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সীমান্ত নিরাপত্তা ও দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

বক্তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিনের দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি ও সুফলহীন দ্বিপাক্ষিক আলোচনার কারণে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তারা অবিলম্বে সীমান্ত হত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে তোলার দাবি জানান এবং সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারের আহ্বান জানান।

প্রতিবাদ সভা শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে কদম ফোয়ারা এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে আবার প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্ত হত্যা বৃদ্ধি ও পার্বত্য চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে ভারতীয় গণমাধ্যমের বিতর্কিত প্রচার দেশের ভেতরে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এ কর্মসূচি তারই ধারাবাহিক অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *