খাগড়াছড়িতে ভুয়া সনদে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন - Southeast Asia Journal

খাগড়াছড়িতে ভুয়া সনদে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

খাগড়াছড়িতে জাতীয়তা সনদ জালিয়াতি করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের ঘটনায় খাগড়াছড়ি জেলা সমাজ সেবার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামকে প্রধান তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। ১৪ নভেম্বর খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ এ তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিকে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল্লাহ।

অভিযোগ রয়েছে, রাঙ্গামাটি পৌর এলাকার উৎপল চাকমার ছেলে তিংকু চাকমা খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার বোয়ালখালী ইউনিয়ন পরিষদ ও সার্কেল প্রধানের জাতীয়তা সনদ জালিয়াতি করে চলতি বছরের ১০ জুন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অধীনস্থ প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পান। তিনি এখন খাগড়াছড়ি জেলার সিন্দুকছড়ি সরকারী প্রাথমিকি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত রয়েছেন। এ নিয়ে গত ১১ নভেম্বর গণমাধ্যমে একটি সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে খাগড়াছড়ির স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার শর্ত থাকায় ইউনিয়ন পরিষদ ও সার্কেল প্রধানের সনদ জালিয়াতি করে আবেদন করেন রাঙ্গামাটি পৌর এলাকার উৎপল চাকমার ছেলে তিংকু চাকমা। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের এক কর্মকর্তা ও নিকট আত্মীয়ের সহযোগীতায় জাল সনদ সংগ্রহ করে আবেদন ও চাকরী পায় অভিযুক্ত ব্যক্তি। নিজের দ্বৈত বাসিন্দা সনদ ও আত্মীয়দের সহযোগীতার কথা অকপটা স্বীকারও করেন।

পার্বত্য তিন জেলায় ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সার্কেল প্রধানের কার্যালয় স্থায়ী বাসিন্দা সনদ দিয়ে থাকে। দীঘিনালার ২ নং বোয়ালখালী ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে গিয়ে বেরিয়ে আসে আরও ভয়ানক তথ্য। এ ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ও সাবেক সচিবদের কথায় মিলে সনদ জালিয়াতির সত্যতা। আর তিংকু চাকমা নিজের যে ঠিকানা ব্যবহার করেছেন সে এলাকার জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা চিনেন না তাকে।

অভিযুক্ত শিক্ষক তিংকু চাকমা বলেন, চাকরীর আবেদন করার জন্য এক আত্মীয়কে দিয়ে বোয়ালখালী থেকে জাতীয়তা সনদ গ্রহণ করেছি। পরিবার রাঙ্গামাটি পৌর এলাকায় বসবাস করে। সেখানকার পৌরসভা থেকে আরেকটি সনদ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র করা হয়েছে।

দীঘিনালার ২নং বোয়ালখালী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব অরুনাংশ তালুকদার বলেন, তিংকু চাকমা নামে যে জাতীয়তা সনদের কপি দেখিয়েছেন সেটির কোন নথি অফিসে সংরক্ষিত নেই। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।

দীঘিনালার ২নং বোয়ালখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চয়ন বিকাশ চাকমা বলেন, তিংকু বা উৎপল নামের কাউকে আমি চিনি না। আমি নিজেই কাঠাল তলী গ্রামের মানুষ। এ নামের কেউ আমাদের গ্রামে থাকেন না।

মূলত স্থায়ী বাসিন্দা সনদ ও সব সত্যয়িত কাগজে তারিখ না থাকা সহ নানা অসংগতি থাকার পরও আবেদন কি ভাবে গ্রহণ হয়েছে তার সদুত্তর নেই নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা মেহের ইয়াসমিনের। আবেদন যাচাই বাছাই কমিটির ওপর দোষ চাপিয়ে দেন তিনি।