আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে আবারও মিয়ানমারের নাটক
নিউজ ডেস্ক
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে বাংলাদেশে। এর পরের মাসগুলোতে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়, আর আগে থেকেই ছিল আরও প্রায় চার লাখ। ফলে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান যে দ্রুত হবে না, সেই শঙ্কা ছিল শুরু থেকেই; সময়ের সঙ্গে যা আরও জটিল হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা অজুহাতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিরোধিতা করে আসা মিয়ানমার এবার আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নাটক শুরু করেছে।
ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) শুরু হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের ৪৩তম শীর্ষ সম্মেলন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের সম্মেলনেও গুরুত্ব পাচ্ছে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি। তবে গত বছরের মতো এবছরও আসিয়ানের সম্মেলনে মিয়ানমারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ কখনো দ্বিপক্ষীয়, কখনো চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় আলোচনা চালিয়ে গেছে। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে দুই দফায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দিনক্ষণ ঠিক হলেও, শেষ পর্যন্ত একজনকেও ফেরত পাঠানো যায়নি। এছাড়া ২০২১ সালে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর প্রত্যাবাসনের বিষয়টি আরও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়। তবে আসিয়ান জোট ও আন্তর্জাতিক অন্যান্য সংস্থার চাপকে পাশ কাটাতে এবার তিন হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে মৌখিকভাবে সম্মত হয়েছে মিয়ানমার। এটিকেও নেপিদোর এক ধরনের কূটকৌশল বলেই মনে করছেন অনেকে।
সোমবার (৪ এপ্রিল) নেপিদোতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই তিন হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরানো হবে।
এছাড়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে ‘আস্থা বাড়াতে’ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা হয়েছে দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে। পাইলট প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে তিন হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়ার মধ্য দিয়ে কার্যক্রম শুরুর কথা বলা হলেও, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আদৌ ফিরিয়ে নেয়া হবে কিনা কিংবা তারা যাবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। আর মিয়ানমারের এই নাটকের শেষই বা কোথায়- তা নিয়েও ধোঁয়াশা কাটছে না।
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জান্তার অব্যাহত নৃশংসতা
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে চলমান সংকটের মধ্যেও রাখাইনে থেমে নেই মিয়ানমার সেনাদের বর্বরতা। সম্প্রতি মিয়ানমারে ঘূর্ণিঝড় মোখা’র আঘাতে ব্যাপক মানবিক সংকটের মুখে পড়েন রোহিঙ্গারা। এতে শত শত মানুষ নিহত এবং কয়েক হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এই ধ্বংসযজ্ঞ এবং প্রাণহানি এড়ানোর সুযোগ ছিল।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই মিয়ানমারের সামরিক জান্তা রাখাইন রাজ্যে জীবনরক্ষাকারী মানবিক সহায়তা পাঠানোর পথ বন্ধ করে দেয়। ফলে তাৎক্ষণিক ঝুঁকিতে পড়ে যায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর হাজারো মানুষের জীবন।
দশকের পর দশক ধরে রোহিঙ্গাদের তাদের অধিকার ও স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করে আসছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। পুরো দেশ থেকে রাখাইন অঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে রেখে সেখানে চালানো হচ্ছে বর্বরতা। আবার এমন প্রেক্ষাপটের কথা তুলে ধরে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, জান্তার এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে আরও স্পষ্ট যে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ, টেকসই এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের পরিবেশ এখনও তৈরি হয়নি।
সংস্থাটির মতে, এখনই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আহ্বান জানানোর অর্থ হবে উদ্বাস্তুদের একটি ‘নির্মম’ ও ‘দমনমূলক’ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ফেরত পাঠানো এবং পরবর্তী ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের মঞ্চ তৈরি করা।
কতদিন বোঝা বইবে বাংলাদেশ?
মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ না থাকায় ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশি ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা অধৈর্য ও হতাশ হয়ে পড়ছেন, যা নিরাপত্তা সংকটও তৈরি করেছে। রোহিঙ্গারা অপরাধমূলক নানা কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ায় ক্যাম্প এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতিও দিন দিন অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মিয়ানমার এবং সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মানবপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধ থেকে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা হুমকিরও সৃষ্টি হয়েছে। মিয়ানমার ও বাংলাদেশের উপকূল থেকে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় মানবপাচার একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও মিয়ানমার থেকে অন্যান্য প্রতিবেশী দেশে অবৈধ মাদক ও ইয়াবা পাচার উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে; যার কারণে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
শতাধিক বিদেশি ও স্থানীয় সংস্থার ২০ হাজারেরও বেশি কর্মী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন ধরনের মানবিক সেবায় কাজ করছেন। তবে ক্যাম্পে কর্মরত এই এনজিও কর্মীরাও নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় উদ্বিগ্ন। অপহরণ, হত্যার মতো ঘটনার কারণে বহু সংস্থা শরণার্থী শিবিরে তাদের সহায়তা কার্যক্রম সীমিত করেছে, এমনকি অনেকে কার্যক্রম বন্ধও করে দিচ্ছে, যা উদ্বেগজনক।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশ যখন হিমশিম খাচ্ছে তখন এই বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি-ডব্লিউএফপিসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা।
রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা হ্রাস শরণার্থী শিবিরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাতে পারে এবং তা নারী ও শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে জানিয়ে সম্প্রতি এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান প্রসিকিউটর করিম আসাদ আহমদ খান। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যু মোকাবিলায় চলমান তহবিল সংকট উদ্বেগজনক’। যদিও রোহিঙ্গাদের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে বর্তমানে অনেক ঘটনাই ঘটছে। সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের রাখাইনে তাদের নিজ গ্রামে প্রত্যাবাসনে আগ্রহ দেখানো শুরু করেছে মিয়ানমার। এছাড়া পশ্চিমা দেশ ও দাতা সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্য কমিয়ে দেয়ায় এই সম্প্রদায়ের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। বেশিরভাগ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে অনিচ্ছুক হলেও, অনেক রোহিঙ্গা নারী ও স্বেচ্ছাসেবী মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
তাহলে সমাধান কী?
এ সব বিষয়ে মিয়ানমার, রোহিঙ্গা এবং আসিয়ান বিষয়ক গবেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান মো. শামসুদ্দিন দ্য জিওপলিটিক্সে লিখেছেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া উচিত এবং এই সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত দাতা সংস্থাগুলোর উচিত মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি বাংলাদেশের নিরাপত্তার পাশাপাশি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। রোহিঙ্গা সংকট মিয়ানমারের সৃষ্ট একটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংকট। এটা বাংলাদেশের জন্য বাড়তি চাপ।
‘এই সংকটের ভার বহন করতে বাধ্য হচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সরকারকে রোহিঙ্গাদের জন্য প্রতি বছর ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ করতে হয়। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে, কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপোস করতে দেবে না,’ বলেন তিনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা মোকাবিলার জন্য একটি বাস্তবায়নযোগ্য রোডম্যাপ তৈরি করা প্রয়োজন, যা রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার জন্য একটি সক্ষম পরিবেশ এবং আস্থা তৈরি করতে সহায়তা করবে। এ বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে, কারণ মিয়ানমারের সৃষ্ট এই সংকটের সঙ্গে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা এবং প্রায় ৫ লাখ স্থানীয় মানুষের জীবন, জীবিকা ও নিরাপত্তা জড়িত। বাংলাদেশকে এই বোঝা থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
আসিয়ানের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ
আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে মিয়ানমার ইস্যুতে জোটটির ভূমিকা নিয়ে।
মিয়ানমার আসিয়ানের সদস্য হলেও ২০২১ সালে অং সান সু চি’র নেতৃত্বে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর আসিয়ানের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে ডাকা হয়নি জান্তাদের। সেই অভ্যুত্থানের জেরে মিয়ানমারজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সহিংস বিক্ষোভ। মিয়ানমার নিয়ে ‘পাঁচ দফা ঐকমত্য’ নামে শান্তি পরিকল্পনায়ও সম্মত হয় আসিয়ান। তবে মিয়ানমারের জান্তা সরকার বিষয়টিকে পাত্তা দিচ্ছেন না।
যার ইঙ্গিত মিলল ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি’র সাম্প্রতিক বক্তব্যেও। তিনি বলেছেন, ‘আসিয়ান তখনই পূর্ণ শক্তিতে এগিয়ে যেতে পারবে, যখন আমরা মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ ও স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করতে সক্ষম হব। মিয়ানমারের সংকট ১৯৬০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত আসিয়ানের কার্যকারিতা এবং ঐক্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, আসিয়ান কয়েক দশক ধরে একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার এবং ঐকমত্যের মাধ্যমে চুক্তিতে পৌঁছানোর নীতিতে কাজ করেছে। তবে মিয়ানমার ইস্যুতে তেমন কিছুই করতে পারেনি জোটটি।
চ্যালেঞ্জ যখন বিভক্তি
মিয়ানমার সংকটসহ নানা ইস্যুতে আসিয়ান জোটের মধ্যে অনৈক্য এখন আগের চেয়ে এখন বেশি। বিশেষ করে জোটভুক্ত কিছু দেশের চীন নির্ভরতা, আবার কিছু দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সুসম্পর্কই এই বিভেদের বড় কারণ। তাই বিশ্লেষকদের শঙ্কা, এবারের সম্মেলনও শেষ হতে পারে সিদ্ধান্তহীনতায়।
আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসিয়ানভুক্ত থাইল্যান্ডের সদ্যবিদায়ী সামরিক সরকার আসিয়ানে মিয়ানমারের সামরিক নেতৃত্বের অংশগ্রহণের দাবিতে দৃঢ় অবস্থানে ছিল, যা জোটে মতভিন্নতা তৈরি করে। ৪৩তম সম্মেলনের আগে প্রশ্ন উঠেছিল, থাইল্যান্ডে স্রেঠা থাভিসিনের নেতৃত্বের বেসামরিক সরকার অবস্থান বদলাবে কিনা। মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও লাওসে দীর্ঘদিন নেদারল্যান্ডসের দূত হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী লায়েটিটিয়া ফন ডেন অ্যাসাম বলেছেন, থাইল্যান্ডে গণতান্ত্রিক সরকার যাত্রা শুরু করায় তার পূর্বসূরি সামরিক নেতা প্রায়ুথ চ্যান শাসনামলের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হবে না।
কম্বোডিয়া ও চীনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কও জোটে বিভক্তি উসকে দিয়েছে। সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার নর্থ নাটুনা সাগরে খনিজ সম্পদ-সমৃদ্ধ এলাকায় আসিয়ানের মহড়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু কম্বোডিয়ার বিরোধিতায় তা ভেস্তে যায়। মূলত দক্ষিণ চীন সাগরকে কেন্দ্র করে বিতর্কিত রেখা ‘নাইন ড্যাশ লাইন’ বরাবর বেইজিংয়ের দাবি করা এলাকার মধ্যে রয়েছে ওই অঞ্চল। এ কারণেই কম্বোডিয়ার বিরোধিতা।
এদিকে আসিয়ানভুক্ত লাওসের সঙ্গে চীনের সুসম্পর্ক রয়েছে। দেশটি বেইজিংয়ের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। অন্যদিকে, ফিলিপিন্স দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রক্ষা করে চলছে।
সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক গবেষক হান্টার মার্সস্টন বলেছেন, ‘অনেক সংকট আসিয়ান জোটকে আগের চেয়ে বিভক্ত করেছে। মিয়ানমার ইস্যুতে কর্তৃত্ববাদী ও অধিকতর গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মধ্যে বিভক্তি এর মধ্যে অন্যতম।’