অস্ত্রবিরতিতে রাজি কেএনএফ - Southeast Asia Journal

অস্ত্রবিরতিতে রাজি কেএনএফ

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

বান্দরবানের পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ-এর সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির বৈঠকে অস্ত্রবিরতিসহ ৪ বিষয়ে মতৈক্য হয়েছে।

রোববার (৫ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় রুমা উপজেলার মুনলাই পাড়ার কমিউনিটি সেন্টারে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লার নেতৃত্বে মুখপাত্র কাঞ্চন জয় তঞ্চগ্যা, সদস্য মনিরুল ইসলাম মনু লেলুং খুমী বাসিং থোয়াই লালজার বম জারলম বমসহ ৯ সদস্য এবং কেএনএফ প্রধান নাথান বম বৈঠকে উপস্থিত না থাকলেও এর পাঁচ সদস্য অংশ নেয়।

কেএনএফ-এর এই পাঁচ সদস্য হলেন-লাল এং, লিয়ান বম, রুয়াললিন রুয়াল, চেওথুয়াম পালিয়ান ও লালওলিভময়।

এছাড়াও প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বৈঠককে ঘিরে মুনলাই পাড়ায় নেয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ বিজিবিসহ মোতায়েন করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য।

দুই পক্ষের মধ্যে এর আগে অনেক বার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও সামনাসামনি এটিই প্রথম বৈঠক।

সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে কেএনএফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি চারটি বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছেছে। সেগুলো হলো: ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সংঘাতে না জড়াতে অস্ত্রবিরতি; বাস্তুচ্যুতদের পুনর্বাসন করা; বম সম্প্রদায়ের শিক্ষা; স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া এবং সরকারি উন্নয়নমূলক কাজে সহযোগিতা করা।

প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী চলা রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, ‘কেএনএফ-এর সঙ্গে আমাদের প্রথম বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠায় তারা খুব আন্তরিক। এটি আমাদের প্রথম বৈঠক। এরপর আরও বৈঠক হবে আশা করি। আলোচনার মাধ্যমে আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারব।’

এদিকে বৈঠক শেষে শান্তি কমিটির সদস্য বম এ্যাসোসিয়েশনের নেতা লাল জার বম বলেন, বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ায় আমরা খুব খুশি। তারা অনেক আন্তরিকতা দেখিয়েছে। তাদের সঙ্গে আমরা বিভিন্ন বিষয়ে একমত হয়েছি। আশা করি, সামনে আরও বেশি ফলপ্রসূ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে কেএনএফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির বৈঠককে স্বাগত জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা।

রুমা অগ্রবংশ অনাথালয়ের পরিচালক বলেন, আলোচনার মাধ্যমে কেএনএফ যদি সঠিক পথে ফিরে আসে তাহলে পাহাড়ে শান্তি ফিরে আসবে। রুমার ঝিমিয়ে যাওয়া ব্যবসা আবারও চালু হবে। পর্যটন খাত চাঙ্গা হবে। রুমার আরও উন্নয়ন হবে, এগিয়ে যাবে।

রুমা সদর ইউপি চেয়ারম্যান শৈবং মার্মা বলেন, কেএনএফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির বৈঠককে স্বাগত জানাই। আশা করি, বৈঠকের মাধ্যমে কেএনএফ অস্ত্র ছেড়ে সঠিক পথে ফিরবে। আর পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। আগামী ডিসেম্বরে উভয় পক্ষের সম্মতিতে আবারও বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানায় শান্তি কমিটি।

উল্লেখ্য, পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ এর বিপথগামী সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জেলাপরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লার নেতৃত্বে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতাদের নিয়ে চলতি বছর জুন মাসে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠন করা হয়।