থানচি থানা ও আলীকদমের ডিম পাহাড় যৌথ তল্লাশি চৌকিতে হামলা কেএনএফের - Southeast Asia Journal

থানচি থানা ও আলীকদমের ডিম পাহাড় যৌথ তল্লাশি চৌকিতে হামলা কেএনএফের

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

ভরদুপুরে বান্দরবানের থানচি বাজারের সোনালী ও কৃষি ব্যাংক এবং রুমায় সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি ও ম্যানেজারকে অপহরণের পর থানচি থানা লক্ষ্য করে গুলি করেছে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা। এর আগে থানচি বাজারে পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

থানচির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে প্রথমে থানচি বাজারে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি হয়। এরপর সন্ত্রাসীরা রাত পৌনে ৯টার দিকে থানচির বাজারসংলগ্ন এলাকায় থানাকে লক্ষ্য করে গুলি করতে শুরু করে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে গোলাগুলি হয়েছে। তবে সশস্ত্র এসব লোক কারা তা জানা যায়নি।

রাত ১০টার দিকে গোলাগুলি থামলেও সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গোলাগুলির কারণে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যে।

থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুন বলেন, পরিস্থিতি এখন অনেকটা শান্ত। সন্ত্রাসীরা বড় ধরনের পরিকল্পনা করে বাজার ও পুলিশ স্টেশনে হামলা চালিয়েছিল। এ ছাড়া হাসপাতালের পেছনেও গোলাগুলি হয়েছে। পুলিশ, বিজিবি তাদের প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে। এখন আগের চেয়েও অধিক সংখ্যক পুলিশ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে নিয়োজিত আছে। পুলিশ ও বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।

ডিম পাহাড় যৌথ চেকপোষ্টে হামলা
বান্দরবান জেলার রুমা ও থানচি উপজেলার পর এবার আলীকদমের ২৬ মাইলের ডিম পাহাড় এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি যৌথ তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালিয়েছে অস্ত্রধারীরা। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌবিদুর রহমান বলেন, সন্ত্রাসীরা গাড়িতে করে এসে তল্লাশিচৌকি ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিলে তারা গুলি চালায়। এ সময় তল্লাশিচৌকিতে থাকা পুলিশ ও সেনা সদস্যরা পাল্টা গুলিবর্ষণ করেন। উভয়পক্ষের মধ্যে বেশ কিছু সময় গোলাগুলি হয়েছে বলে জানান তিনি। পরে হামলাকারীরা সেখান থেকে পিছু হটে। এ ঘটনায় পুলিশের কেউ হতাহত হয়নি।

ওসি আরও জানান, এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত সেটিও এখনো জানা যায়নি।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পাহাড়ি সশস্ত্র গ্রুপের সদস্যরা থানচি ব্রিজের কাছে চেকপোস্টে হামলা চালিয়েছে। পাশাপাশি থানচি বাজার, হাসপাতালের পেছনে, পুলিশ স্টেশন সংলগ্ন এলাকায়ও হামলা চালিয়েছে তারা। আতঙ্কে আমরা নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে ভেতরে বসেছিলাম। অনেকেই যে যেখানে আছেন সেখান থেকে রাস্তায় বের হচ্ছেন না। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে।

গোলাগুলির বিষয়ে থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াই হ্লা মং মারমা সাংবাদিকদের বলেন, গোলাগুলির শব্দে ভয়ে ছিলাম। এমন পরিস্থিতি আগে কখনো হয়নি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গোলাগুলির বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অপহৃত রুমার ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধারের খবর দেয় র‌্যাব। সংস্থাটির সদর দপ্তর থেকে পাঠানো খুদেবার্তায় র‌্যাব জানায়, সমঝোতার ভিত্তিতে অপহৃত নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করে হয়েছে।

গত মঙ্গলবার রাতে রুমায় সোনালী ব্যাংকে হামলা, ম্যানেজারকে অপহরণ ও অস্ত্র লুটের ঘটনা ঘটে। পরদিন থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে হামলা চালিয়ে টাকা লুট করে সন্ত্রাসীরা।

বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রুমা ও থানচিতে ব্যাংকে হামলা ও লুটের ঘটনায় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) জড়িত থাকার কথা বলেছেন। সে কারণে

থানচিতে গোলাগুলি ও থানায় হামলার সঙ্গে কেএনএফ জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে কেএনএফের পক্ষ থেকে হামলার দায় স্বীকার করে কিছু বলা হয়নি।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) নূরে আলম মিনা গতকাল রাতে গণমাধ্যমকে জানান, থানচি থানার দক্ষিণ-পূর্ব পাশের পাহাড় থেকে কে বা কারা গুলি ছুড়তে থাকে। থানা থেকে পুলিশ সদস্যরা পাল্টা গুলি ছোড়ে। থানায় পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য রয়েছে। থেমে থেমে থানা লক্ষ্য করে গুলি করা হচ্ছে।

রাত ১০টার দিকে গোলাগুলি থেমে যায় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা আশপাশে কোথাও থাকতে পারে। পুরো শহরে পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন আছে। বলিপাড়া থেকে বিজিবির আরও সদস্য যোগ দিয়েছেন।

থানচি থানার ওসি জসীম উদ্দীন জানান, সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। এখন থেমেছে। তবে পরিস্থিতি থমথমে। এজন্য তারা সতর্ক অবস্থায় আছেন। ৪০০ থেকে ৫০০ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গুলির শব্দ শোনার পর তারা আতঙ্কে রয়েছেন। অনেকে মাটিতে শুয়ে আছেন। সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ গোলাগুলিতে জড়িত বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, থানচি বাজারের ২০০ থেকে ৩০০ গজের ভেতরেই রয়েছে থানচি থানা, একটি বিজিবি ক্যাম্প এবং থানচি বাজারের শেষ মাথায় রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি চেকপোস্ট।

ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার
রুমা থেকে অপহৃত সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উদ্ধার করা হয়েছে। রাত সোয়া ৯টার দিকে তাকে র‌্যাব ১৫-এর কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মইন বলেন, ‘সমঝোতার মাধ্যমে অপহৃত রুমার সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি সুস্থ আছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি বর্তমানে র‌্যাব হেফাজতে রয়েছেন।’

তবে সমঝোতার বিষয়টি স্পষ্ট করেননি এ র‌্যাব কর্মকর্তা। অপহরণকারীদের মুক্তিপণ দিতে হয়েছে কি না, তাও নিশ্চিত করেননি তিনি। অপহৃত নেজাম উদ্দিনের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা কোনো মুক্তিপণ দেননি। এর আগে অপহরণকারীরা ২০ লাখ টাকা দাবি করেছে বলে জানিয়েছিল র‌্যাব। অপহৃত নেজাম উদ্দিনের স্ত্রী কলেজশিক্ষক মাইসুরা ইসফাত তার স্বামীকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত চেয়েছিলেন।

সন্ত্রাসীদের ধরতে দিনভর অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। পাহাড়ে যৌথ অভিযান সম্পর্কে জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের অভিযান শুরু করেছে। সব জায়গায় টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংক লুট করার চেষ্টা করে। পরে লুট করতে না পেরে মসজিদ থেকে ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)।

এদিকে বান্দরবানে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) নূরে আলম মিনা। গতকাল দুপুরে থানচি উপজেলায় টাকা লুট হওয়া দুটি ব্যাংকের শাখা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

ডিআইজি নূরে আলম মিনা বলেন, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ও অপরাধীদের দমনে যৌথ অভিযান হবে। রুমা ও থানচিতে ব্যাংকের টাকা লুট, পুলিশের ওপর হামলাসহ নানা অভিযোগে আট-নয়টি মামলা হতে পারে। মামলার যাবতীয় প্রস্তুতি চলছে।

কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ফান্ড সংগ্রহের জন্য দুটি ব্যাংকে হামলা হয়েছে। রুমায় বেশি টাকা রয়েছে, তাই ভল্ট ভেঙে নেওয়ার চেষ্টা করে। আর থানচিতে ঘটনার দিন হাটবার থাকায় ব্যাংকে লেনদেন বেশি হওয়ায় সেখানে ডাকাতি হয়েছে।

থমথমে রুমা ও থানচি

রুমা ও থানচির বাজারগুলোতে দোকানপাট খুললেও খুব একটা লোকজনের চলাচল নেই। ঘটনার পর থেকেই বিজিবি ও পুলিশ টহল দিচ্ছে। রমজান মাস হওয়ায় পর্যটন নগরী বান্দরবানে পর্যটক এমনিতে কম ছিল। এর মধ্যে এ ঘটনার জেরে এলাকাটি একেবারেই পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে।

এদিকে সশস্ত্র হামলার পর বান্দরবান জেলার রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে।

শান্তি আলোচনা স্থগিত

২২ এপ্রিল শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও কেএনএফ মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেএনএফের সাম্প্রতিক কর্মকান্ডের কারণে সেই বৈঠক ভেস্তে গেল। সংলাপ বন্ধ ঘোষণা করেছেন শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির আহ্বায়ক ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা। গতকাল সকালে জেলা পরিষদ সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।

ক্য শৈ হ্লা আরও বলেন, নামাজিদের ওপর হামলা, অর্থ লুটের উদ্দেশ্যে সোনালী ব্যাংকে হামলা, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর অস্ত্র লুট করেছে তারা। এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এসব কারণে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির পক্ষে সংলাপ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি জারলম বম বলেন, ‘পুরো বম জনগোষ্ঠী কেএনএফের সঙ্গে নয়। অনেকে তাদের সঙ্গে আছে আবার অনেকে নেই। তবে প্রশাসনের কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। পুরো বম জনগোষ্ঠীকে যেন এসব কারণে দায়ী না করা হয়।’

শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির কয়েকজন সদস্য জানান, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লার নেতৃত্বে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতাদের নিয়ে ২০২৩ সালের জুন মাসে ১৮ সদস্যের শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠন করা হয়। কয়েক দফা ভিডিও কনফারেন্সের বৈঠকের পর প্রথম সরাসরি বৈঠকে চারটি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। দ্বিতীয় বৈঠকে ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। এভাবে ধীরে ধীরে শান্তির পথে এগোচ্ছিল সবাই। তবে হঠাৎ অবস্থান পাল্টে চরমপন্থা বেছে নিল কেএনএফ।

তিন উপজেলার ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ

নিরাপত্তাজনিত কারণে গতকাল বান্দরবানের তিন উপজেলা থানচি, রুমা ও রোয়াংছড়িতে সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এটা অব্যাহত থাকবে বলে গতকাল দুপুরে সোনালী ব্যাংকের এজিএম ওসমান গনি নিশ্চিত করেছেন।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি তারাই বিবেচনা করবে। তারা জানিয়েছে, দুই উপজেলার ব্যাংকের কার্যক্রমগুলো জেলা থেকে পরিচালনা করা হচ্ছে।

রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে ব্যাংকের নিরাপত্তা জোরদার

বান্দরবানে দুদিনে দুই ব্যাংকের তিন শাখা ডাকাতির পর রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির সোনালী ব্যাংকের ২৪টি শাখায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গামাটি সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ও রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ।

রাঙ্গামাটি জেলার বান্দরবান সীমান্তবর্তী পাঁচটি উপজেলা রয়েছে। এর মধ্যে রাজস্থলী, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, বাঘাইছড়ি, বরকল ও খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার ব্যাংকের শাখাগুলোকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রিন্সিপাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর প্রতিটি শাখাই নিকটবর্তী থানায় নিরাপত্তার আবেদন করার পর পুলিশের পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সেনাবাহিনীও নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করছে, টহল দিচ্ছে। আমরা আমাদের প্রিন্সিপাল অফিস থেকে একটি মনিটরিং টিম করেছি। পুরো বিষয়টি নজরদারিতে রাখছি।’

তবে ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার বিষয়টি তাদের ভাবিয়ে তুলছে। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ ভূমিকা প্রয়োজন।

সোনালী ব্যাংক রাজস্থলী শাখার ব্যবস্থাপক ক্য সুই চিং মারমা বলেন, ‘এমন ঘটনায় ভয় পাওয়াটাই তো স্বাভাবিক। এত বড় একটি ঘটনার পর ভয় না পেলে কি চলে, বলেন? আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রাজস্থলীর থানার সহায়তা চেয়েছি। ব্যাংকে বাড়তি পুলিশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবুও ভয় তো কাজ করছেই।’

রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ জানান, বান্দরবানের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পর রাঙ্গামাটিতে যেসব ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে, সেখানে যাতে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটতে না পারে এজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে অন্যান্য বাহিনীও কাজ করছে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।