রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের উপায় খুঁজতে আশ্রয় শিবিরে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি
নিউজ ডেস্ক
রোহিঙ্গা সমস্যার উত্তরণের উপায় খুঁজতে কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির পরিদর্শন করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। রবিবার (১২ মে) সকালে কমিটির সভাপতি এ কে আবদুল মোমেনের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল তা পরিদর্শন করে। পরে বিকালে কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের সেমিনার কক্ষে স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা ৪ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (ডব্লিউএফপি) একটি ই-ভাউচার আউটলেট, ক্যাম্প-৫ এর একটি লার্নিং সেন্টার পরিদর্শন শেষে রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে প্রতিনিধিদল ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।
সেখানে এ কে আবদুল মোমেন বলেন, সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখার জন্যই এ সফর। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হচ্ছে। এ থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজে বের করতে এ পরিদৃর্শন। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা স্বদেশে ফেরত যেতে চায় বলে জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।
প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, সাইমুম সরওয়ার কমল, নাহিম রাজ্জাক, হাবিবুর রহমান ও জারা জাবীন মাহবুব। এ সময় শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোঃ মিজানুর রহমান ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।বিকেলে কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের সেমিনার কক্ষে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী হাছান মাহমুদও অংশগ্রহণ করেন।
সংসদ সচিবালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া জোরদারকরণে করণীয় সম্পর্কে বৈঠকে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে ইউএনএইচসিআর, আরআরআরসি, স্থানীয় প্রশাসন, এনজিও এবং রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয় এবং শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিয়ে সার্বিকভাবে পর্যালোচনা করা হয়।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি আবদুল মোমেন বলেন, আমরা জেনেছি রোহিঙ্গারা ক্যাম্পের বাইরে গিয়ে নানা কর্মে যোগ দিচ্ছে। সেখানে আমরা সুপারিশ করেছি শিবিরের বাইরে গিয়ে কোনও রোহিঙ্গা চাকরি করলে তাদের আইনের আওতায় আনতে এবং যারা তাদের চাকরি দিচ্ছে, তাদেরও কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
এসময় সন্ত্রাসী ও ফ্যানাটিক গ্রুপগুলো রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে তাদের সদস্য রিক্রুট করছে’ বর্ণনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, এ সবের কারণে শুধু আমাদের দেশে সমস্যা তৈরি হচ্ছে তা নয়, আশপাশের দেশেও সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক বিস্তারজনিত সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
ড. হাছান মাহমুদ জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গেও নিয়মিতভাবে আমরা আলাপ-আলোচনা করে যাচ্ছি, যাতে করে নিজেদের নাগরিকদের পূর্ণ অধিকারসহ ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওপর কার্যত চাপ প্রয়োগ করা হয়।