বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু, মধ্যরাতে বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
 
নিউজ ডেস্ক
রাঙামাটি শহরে বিদ্যুৎ বিভাগের একটি খুঁটি স্থানান্তরের কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের ভেদভেদী এলাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। তাদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে কাজ করার কথা থাকলেও বিদ্যুৎ বিভাগ বিদ্যুৎ চালু রাখার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকালে শহরের দেবাশীষনগর এলাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের খুঁটি স্থানান্তরের কাজে অংশ নেয় শহরের মোল্লাপাড়া এলাকার মো. বাপ্পী (২৫)। সঞ্চালন লাইনের সঙ্গে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন তিনি।তাৎক্ষণিক তাকে প্রথমে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রামে পাঠানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসক। চট্টগ্রামে নেওয়ার পর সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। নিহত বাপ্পী বিবাহিত এবং তার চার বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার মরদেহ রাঙামাটি আনা হলে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করে। এ সময় এলাকাবাসী নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন। পরে মধ্যরাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে ফিরে যান তারা। তবে এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে শহরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারী মো. হানিফ বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ কাজের কথা বলে তারে নিয়ে গেল, কিন্তু সে লাইনের ওপর থাকা অবস্থায় কেনো লাইন চালু করল? বিদ্যুৎ বিভাগ ঘোষণা দিয়েছে, বিকেল চারটা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বন্ধ থাকবে। কিন্তু দুপুর ১২টায় কেনো লাইনে বিদ্যুৎ চালু করল? এ মৃত্যুর দায় পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী এড়াতে পারেন না। মো. আমজাদ মিয়া নামের আরেক আন্দোলনকারী জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ বিভাগের গাফিলতির প্রতিবাদে শনিবার নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও দাবিনামা পেশ করা হবে।
রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার জানিয়েছেন, দেবাশীষনগর এলাকায় আমাদের বিদ্যুৎ বিভাগের কাজ করার সময় ঠিকাদারের একজন শ্রমিক লাইফলাইন স্পর্শ করায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। খবর পেয়ে আমরা দ্রুত তাকে প্রথমে রাঙামাটি ও পরে চট্টগ্রামে পাঠালে তার মৃত্যু হয়। এটি একটি দুর্ঘটনা, এর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ দায়ী নয়। তবুও বিক্ষুব্ধদের পক্ষ থেকে আলোচনার জন্য প্রতিনিধিরা এসেছেন। আমরাও তাদের যথাসাধ্য সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি। তারপরও তারা আমাদের অফিসের সামনে অবস্থান নিয়েছিল। বিষয়টি আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাদের সঙ্গে কথা বলে আন্দোলনকারীরা বাসায় ফিরে গেছেন।
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তাপস রঞ্জন ঘোষ বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। সেখানে পুলিশ গেছে। বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীল এবং প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। প্রকৃত ঘটনা কী সেটা জানার চেষ্টা করছি আমরা। তারপর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বর্তমানে আন্দোলনকারীরা বাড়িতে ফিরে গেছেন।
