রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা উত্তেজনা: চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছে ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান
![]()
নিউজ ডেস্ক
কয়েক বছর ধরেই চীন ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা উত্তেজনা চলছে। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে এ সংকট আরো প্রকট হয়েছে। এ অবস্থায় অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ঘিরে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছে ব্রিটিশ ব্যবসাগুলো। তবে সংস্থাগুলো যদি সরবরাহ ব্যবস্থা হঠাৎ করে চীন থেকে সরিয়ে নিতে চায় তবে ব্রিটিশদের চলমান জীবনযাত্রার সংকট আরো বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রির (সিবিআই) মহাপরিচালক টনি ড্যাঙ্কার বলেন, বেইজিংয়ের সঙ্গে পশ্চিমাদের চলমান রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা উত্তেজনা ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানগুলোকে চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে প্ররোচিত করছে। যুক্তরাজ্যের হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান চীনবিরোধী রাজনৈতিক মনোভাব কঠোর হওয়ার আশঙ্কায় সরবরাহ ব্যবস্থা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করছে। তবে হঠাৎ করে এমন পুনর্গঠন জীবনযাত্রার সংকটকে আরো কঠিন করে তুলতে পারে। এজন্য আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যকে নতুন বাণিজ্য অংশীদার খুঁজে বের করতে হবে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো পুরনো অংশীদারদের সঙ্গে পুনরায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে হবে। পশ্চিমারা যদি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং ব্রিটেন যদি উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয় তবে করপোরেট সরবরাহ ব্যবস্থা আরো ব্যয়বহুল এবং মূল্যস্ফীতির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। এজন্য বাণিজ্য কৌশল নতুন করে সাজাতে হবে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের আশঙ্কা যদি সত্য হয় তবে পশ্চিমা দেশগুলোকে পুনরায় ভালো বন্ধু হতে হবে। আমি বিষয়টি নিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা সবাই সরবরাহ ব্যবস্থা পুনর্গঠনের বিষয় নিয়ে কাজ করার কথা জানিয়েছে। কারণ প্রতিষ্ঠানগুলো অনুমান করছে যে আমাদের রাজনীতিবিদরা অনিবার্যভাবে চীন থেকে বিচ্ছিন্ন একটি বিশ্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।
সিবিআই প্রধান বলেন, বিশ্বে ব্রিটেনের নতুন কৌশলগত জোট দরকার। চীন থেকে কার্যক্রম সরিয়ে নিলে ব্যবসাগুলোর জন্য স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তোলা প্রয়োজন। পাশাপাশি সস্তা পণ্যের দিন যে শেষ হতে চলেছে—এটা বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার নেই। সামগ্রিক পরিস্থিতি এটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি অনিবার্য ছিল।
চীনের ওপর যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক নির্ভরতা নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরেই রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে থাকা লিজ ট্রাস ও ঋষি সুনাক চীন নিয়ে কে সবচেয়ে বেশি কঠোর অবস্থানে যাবে তা নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিল। উভয়ই একে অন্যকে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে অভিযুক্ত করেছেন। তবে দুজনই ব্রিটেনের জাতীয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য পরাশক্তির সৃষ্ট হুমকির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
টনি ড্যাঙ্কার উভয় প্রার্থীকে ইতিবাচক ব্যবসায়িক কৌশলের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে দেখে খুশি হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে জলবায়ু সংকট ও পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুযোগগুলো গুরুত্বসহকারে নেয়া হচ্ছে না। পরিবেশবান্ধব এজেন্ডাকে একটি নতুন সৃষ্ট সমস্যা হিসেবে উপহাসমূলকভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।