আদিবাসী ইস্যুর অন্তরালে দেশ বিভক্তির ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে উত্তাল খাগড়াছড়ি - Southeast Asia Journal

আদিবাসী ইস্যুর অন্তরালে দেশ বিভক্তির ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে উত্তাল খাগড়াছড়ি

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্কঃ

বাংলাদেশের সংবিধান পরিপন্থি, দেশ বিভক্তির উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আদিবাসী শব্দের ব্যবহার ও অসাংবিধানিক আদিবাসী দিবস পালনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্টিত হয়েছে।

৯ আগষ্ট শুক্রবার সকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্রপরিষদের জেলা সভাপতি মোঃ আসাদুল্লাহ আসাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহাদাত হোসেন কায়েশের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও বাঘাইছড়ি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্রপরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি পৌর কাউন্সিলর আব্দুল মজিদ, খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ রবিউল হোসেন, সুমন আহমেদ, দীঘিনালা উপজেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলামিন হাওলাদার প্রমুখ।

সমাবেশে পিবিসিপির সহ-সভাপতি মোঃ জালাল হোসেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ শামীম হোসেন, সোহেল রানা, বাঘাইছড়ি উপজেলা সভাপতি মোঃ নুরুল আফসারসহ বিভিন্ন উপজেলার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আদিবাসী শব্দটি রাজনৈতিকভাবে বেশ স্পর্শকাতর, ২০০৯ সালে সাংবিধানিক ভাবে বলা হয়েছে যে বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই, তারপরও কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবী নামের পরজীবি নির্লজ্জভাবে উপজাতিদেরকে আদিবাসী বলে সংবিধান লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে সন্তু গংদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান তিনি। তিনি বলেন, উপজাতিরা নিজেদের মিথ্যে আদিবাসী পরিচয় দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬(২) এ স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসাবে বাঙালি এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশী বলিয়া পরিচিত হইবেন এবং অনুচ্ছেদ ২৩(ক): রাষ্ট্র বিভিন্ন উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন। অন্যদিকে সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের উপজাতিরা কখনো আাদিবাসী হতে পারে না। উপজাতীয়রা আদিবাসী ইস্যুটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাতকারী এবং দেশ ভাগের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি শীঘ্রই এই বিষয়ে সরকারের সরাসরি হস্থক্ষেপ কামনা করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা ভোগ করার পরেও দেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের কয়েকজন সন্তু লারমার সাথে মিলে, উত্তোলিত চাঁদার ভাগ পেয়ে সরকারের নির্দেশনা না মেনে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে তথাকথিত আদিবাসি দিবসের নামে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে, যাতে দেশের কিছু সুশীল এসব কর্মকান্ডে উৎসাহ দিচ্ছে। এটা একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য মোটেও মঙ্গলজনক নয়। বিদেশী কয়েকটি রাষ্ট্র ও এনজিও সংস্থার মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে এখানকার একশ্রেণীর মানুষ দেশ-বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তাই সরকারের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার মানসে বিতর্কিত আদিবাসি দিবস পালন করছে সন্তু গংরা।

সমাবেশে বাংলাদেশের সংবিধানে বাংলাদেশে আদিবাসী না থাকার বিষয়টি স্পষ্ট ও সরকারের পক্ষ হতে চিঠি দিয়ে আদিবাসী শব্দের ব্যবহার না করার অনুরোধ ও প্রজ্ঞাপন জারি করা স্বত্ত্বেও আদিবাসী সংসদীয় ককাসের আয়োজনে গতকাল সভা করে দেশে বসবাসকারী ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোকজনকে জোর করে আদিবাসী করার ষড়যন্ত্রের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ইঞ্জিঃ আব্দুল মজিদ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ৩০ হাজার বাঙ্গালীর খুনি সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসার সন্ত্রাসীবাহিনী কর্তৃক পাহাড়ে নিরীহ জনগনের রক্তচুষে চাঁদাবাজির একটা অংশ পান বলেই রাশেদ খান মেনন আর শাহরিয়ার কবিররা আদিবাসীর মতো একটা স্পর্শকাতর শব্দ বারবার ব্যবহার করে পাহাড়কে অস্থিতিশীল করতে চাইছে। এসময় এসব সন্ত্রাসীদের দোসর ও সুশীল নামধারী নব্য সন্ত্রাসীদের দেশবিরোধী যেকোন কর্মকান্ড প্রতিহত করার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

বক্তারা বলেন, ২০০৫ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ অনুবিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সর্বপ্রথম সরকারিভাবে জানানো হয় যে, বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই এবং একই সাথে বাংলাদেশে বসবাসকারী উপজাতি জনগোষ্ঠীকে ‘আদিবাসী’ না বলতে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের সন্তু লারমা জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে নিজেদের আদিবাসী বলে পরিচয় দিয়ে তাদের নানা কর্মসূচি বাস্তবায়নে তৎপর হয়ে ওঠে।

তারা বলেন, পাহাড়ে অশান্তির জনক খুনী সন্তু লারমা ও তার দোসর রাশেদ খান মেনন, মিজানুর রহমানরা প্রতিবছর ৯ আগষ্টকে কেন্দ্র করে সংবিধান লঙ্গন করে স্পর্শকাতর আদিবাসী শব্দের ব্যবহার ও আদিবাসী দিবস পালন করে পাহাড়কে তথা বাংলাদেশের অখন্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন।

এর আগে সমাবেশ পূর্ব একটি বিশাল র্যালি বের হয়ে খাগড়াছড়ি আদালত সড়ক থেকে শাপলা চত্বর হয়ে চেঙ্গী স্কয়ার প্রদক্ষিন করে পুনরায় শাপলা চত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।

বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ভিডিওঃ

You may have missed