“বন্দর বিদেশীদের দেওয়া সিঙ্গাপুরের মডেল নয়, দেশকে আফ্রিকার মডেলে পরিণত করার চেষ্টা”

“বন্দর বিদেশীদের দেওয়া সিঙ্গাপুরের মডেল নয়, দেশকে আফ্রিকার মডেলে পরিণত করার চেষ্টা”

“বন্দর বিদেশীদের দেওয়া সিঙ্গাপুরের মডেল নয়, দেশকে আফ্রিকার মডেলে পরিণত করার চেষ্টা”
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

চট্টগ্রামের লালদিয়ার চর বিদেশী অপারেটরের কাছে কনসেশন চুক্তিতে হস্তান্তর এবং নিউমুরিং টার্মিনাল লিজ–প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’। আজ রবিবার ২৩ নভেম্বর, দুপুর ৩’টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’র নেতৃবৃন্দ ৭টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট তুলে ধরে বলেন, দেশের অর্থনীতি ও সার্বভৌম নিরাপত্তাকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ রাষ্ট্র—ভারত, ইস্রায়েল ও আমেরিকার স্বার্থে কাজ করছে ডিপি ওয়ার্ল্ড ও এপিএম টার্মিনালস। চট্টগ্রাম বন্দর কনসেশন বা লিজে দেওয়াকে তারা ‘আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত’ হিসেবে উল্লেখ করেন। ভবিষ্যতে এসব বিদেশী অপারেটর বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি প্রণয়ন ও সার্বভৌম সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। রাজনৈতিক ও সামরিক উদ্দেশ্যে বন্দরগুলো ব্যবহার হতে পারে। এমনকি দেশের মানচিত্র পরিবর্তনের মতো চরম উদ্যোগ নেয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত হতে পারে।

দ্বিতীয়ত: চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে দেশের ৯০% আমদানী-রপ্তানির কারণে নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বন্দর বিদেশীদের হাতে গেলে আমদানী-রপ্তানী থেকে আসা অর্থের বড় অংশ বিদেশে চলে যাবে, যা দেশের রিজার্ভে যোগ হতো। ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতি, কর্মসংস্থানের সংকোচন, বেকারত্ব বৃদ্ধি ও স্থানীয় পরিচালন দক্ষতার ক্ষতি হবে। ট্যারিফ বাড়িয়ে নিত্যপণ্যের দামও বৃদ্ধি পাবে। দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেউলিয়াকরণের পথে যেতে পারে।

তৃতীয়ত: বিদেশী অপারেটর কোম্পানীগুলো দেশের স্থানীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধে বৈদেশিক আধিপত্য বিস্তার করবে। চট্টগ্রাম এলাকায় ‘ন-ডরাই’ সিনেমায় প্রদর্শিত হোটেল পতিতাবৃত্তির মত অসামাজিক কার্যকলাপের বৃদ্ধি হতে পারে। এছাড়া, এলজিবিটিকিউ বা সমকামিতাকে সমর্থন করার মাধ্যমে সরকারের উপর বৈধকরণের চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

চতুর্থত: চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনামের বন্দর তুলনা মিথ্যা। সিঙ্গাপুরের তিনটি কন্টেইনার টার্মিনাল তাদের নিজস্ব অপারেটর দ্বারা পরিচালিত হয়, বিদেশীদের হাতে দেওয়া হয়নি। ভিয়েতনামের ২৭০টি বন্দরের মধ্যে প্রায় সবই নিজেদের অপারেটরের হাতে, শুধুমাত্র কয়েকটি বন্দরে জয়েন্ট ভেঞ্চার রয়েছে। বাংলাদেশে এই চিত্র বিপরীত।

পঞ্চমত: দুর্নীতি ও সক্ষমতা বৃদ্ধির নামে বন্দরের বিদেশী হস্তক্ষেপ অগ্রহণযোগ্য। দেশে nearly সব সেক্টরে দুর্নীতি আছে; তাই বন্দরে যদি সমস্যা থাকে, তা বন্ধ করার কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজন হলে বিদেশী বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ দিয়ে স্থানীয় দক্ষতা বাড়াতে হবে। বন্দরের কার্যক্রম দ্রুত, লাভজনক ও খরচ কমানোর জন্য বিকেন্দ্রীকরণ ও নতুন নৌবন্দর তৈরী করা যেতে পারে।

ষষ্ঠত: আইটুইউটু বা ইন্ডিয়া, ইস্রায়েল, আরব আমিরাত ও আমেরিকার মধ্যে ইন্দো-আব্রাহামিক চুক্তি এবং আইমেক করিডর কনসেপ্টের কারণে বাংলাদেশের বন্দর বিদেশী অপারেটরের হাতে দিলে ভূ-রাজনৈতিক ক্ষতি হবে, বাংলাদেশে নয়, বরং ভারত ও ইস্রায়েলের স্বার্থে কাজ হবে।

সপ্তমত: বাংলাদেশ কোনো ‘কিংডম’ নয়, এটি একটি প্রজাতন্ত্রী। বন্দরের মালিক সরকার নয়; এটি জনগণের সম্পদ। তাই জনগণের অভিপ্রায় ছাড়া কোনো গোপন চুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। সরকারের উচিত বন্দর চুক্তি জনগণের কাছে স্বচ্ছ করা, এপিএম ও মেডলগ এসএর চুক্তি বাতিল করা এবং ডিপি ওয়ার্ল্ডের লিজ প্রক্রিয়া বন্ধ করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’র আহ্বায়ক মুহম্মদ জিংয়াউল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক মুহিউদ্দিন রাহাত, দপ্তর সদস্য জুবায়েদুল ইসলাম শিহাব, আব্দুল্লাহ আল মাহিন, জাবির বিন মাহবুবসহ আরও অনেকে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *