খাগড়াছড়িতে লকডাউন ভেঙে এমপির মায়ের শ্রাদ্ধ, হাজারো মানুষের সমাগম - Southeast Asia Journal

খাগড়াছড়িতে লকডাউন ভেঙে এমপির মায়ের শ্রাদ্ধ, হাজারো মানুষের সমাগম

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

বিশ্বব্যাপী মহামারি রুপে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে যখন বিশ্ব হিমশিম খাচ্ছে, সারাদেশে যখন করোনা সংক্রমণ এড়াতে ২য় দফায় লকডাউন চলছে, ঠিক সেই মুহূর্তে লকডাউনের ৪র্থ দিন স্বাস্থ্য বিধি উপেক্ষা করে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ২৯৮ নং সংসদীয় আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার মায়ের বার্ষিক শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর লকডাউন অমান্য করে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সারা দেশে ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে বিধিনিষেধের মধ্যেই শনিবার খাগড়াছড়ির দীঘিনালার জামতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার মা উমাদিনী ত্রিপুরা গত বছরের ২৯ মার্চ বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। মায়ের বার্ষিক শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান উপলক্ষে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার গ্রামের বাড়িতে গত ১৬ এপ্রিল শুক্রবার রাত থেকে শুরু হয় বিভিন্ন ধর্মীয় আয়োজন। ১৭ এপ্রিল শনিবার বেলা ১১টার দিকে শুরু হয় গণভোজ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গণভোজে দীঘিনালা উপজেলার ত্রিপুরা-অধ্যুষিত জামতলী গ্রামের পাশাপাশি দূরদূরান্তের কয়েক হাজার মানুষ যোগ দেন। প্রতি ব্যাচে পাঁচ শতাধিক মানুষের খাবার মেন্যুতে ছিল মাছ, সবজি ও ডাল। অতিথির সংখ্যা বেড়ে যাওয়া বেলা ২টার পর তৈরি হয় খাবার-সংকট। অনুষ্ঠানে কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব অনুসরণ করতে দেখা যায়নি। প্রতিটি টেবিলে ১২ জন করে নারী, পুরুষ, শিশু একসঙ্গে বসে খাবার গ্রহণ করেন। শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, জেলা পরিষদ সদস্য আশুতোষ চাকমা, নিলোৎপল খীসা, শতরুপা চাকমাসহ অনেক সরকারি কর্মকর্তার উপস্থিতিও দেখা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. নুপুর কান্তি দাশ বলেন, ‘একজন সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি অবশ্যই নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। ঘটনাটি নিঃসন্দেহে স্বাস্থ্যবিধির পরিপন্থি। যেহেতু তিনি একজন এমপি, তাই সে বিষয়টি প্রশাসন দেখবে।’

এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাসকে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। তবে দিঘিনালা থানার ওসি উত্তম চন্দ্র দেব বলেন, ‘শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান হয়েছে, কিন্তু এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’

অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, ‘এখনকার পরিস্থিতিতে এমন অনুষ্ঠান করা, এমনকি সেখানে আমার উপস্থিত হওয়া উচিত হয়নি। তবে ধর্মীয় ব্যাপার বলে সেখানে গিয়েছি।’

লকডাউনের সময়ে এ ধরনের আয়োজন নিয়ে এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার বক্তব্য জানা যায়নি। একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ধরেননি।