আদালতে মুহিবুল্লাহ হত্যার বর্ণনা দেন ২ প্রত্যক্ষদর্শী - Southeast Asia Journal

আদালতে মুহিবুল্লাহ হত্যার বর্ণনা দেন ২ প্রত্যক্ষদর্শী

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

রোহিঙ্গা নেতা মুহিব্বুল্লাহ হত্যা মামলায় আরও দুই প্রত্যক্ষদর্শী আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন। বুধবার (২ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে মুহিবুল্লাহর ভাই আহমদ উল্লাহ ও কাশেম মিয়া সাক্ষী দেন। আদালতে তারা মুহিবুল্লাহকে হত্যার বর্ণনা দেন।

এ নিয়ে গত তিন দিনে মামলায় পাঁচ জন সাক্ষী দিলেন। সোমবার এই মামলার বাদী ও এক নম্বর সাক্ষী নিহত মুহিবুল্লাহর ছোটভাই হাবিবউল্লাহ এবং মঙ্গলবার দুই প্রত্যক্ষ্যদর্শী নুরে আলম ও হামিদ মাঝি আদালতে সাক্ষী দেন।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, মঙ্গলবার সাক্সী দেওয়ার সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা এক আসামি নুরে আলমকে হাতের ইশারায় হত্যার হুমকি দেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিষয়টি নজরে আনলে আদালতের বিচারক আসামি ও তার আইনজীবীকে সতর্ক করেন। এ ঘটনা আদালতে আজ কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী আরও জানান, এ ঘটনায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে এই মামলার ১৪ আসামিকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে আদালতে আনা হয়। তাদের উপস্থিতিতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। আগামী ১৫ নভেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন নির্ধারণ করেন আদালত।

আদালতে মামলার বাদী হাবিবউল্লাহ জানান, মিয়ানমার থেকে বাস্ত্যুচুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য জোরালো ভূমিকা পালন করায় সন্ত্রাসীদের একটি গ্রুপ পরিকল্পিতভাবে তার ভাইকে হত্যা করেছে। রোহিঙ্গারা যাতে দ্রুত তাদের দেশে ফিরে যেতে পারে এ জন্য তিনি ক্যাম্পে ক্যাম্পে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। রোহিঙ্গাদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও নানা দাবি তুলেছিলেন তিনি।

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া ১-ইস্ট নম্বর ক্যাম্পের ডি ব্লকে নিজ সংগঠনের কার্যালয়ে মুখোশধারী বন্দুকধারীদের গুলিতে প্রাণ হারান। পরদিন মুহিবুল্লাহর ছোটভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ সাড়ে আট মাস তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উখিয়া থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাহ উদ্দীন ২৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। পরে সাত জনের নাম ঠিকানা সঠিক পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য আবেদন জানান তদন্ত কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে ৩৮ জনের নাম ও ঠিকানা সাক্ষীর তালিকায় রয়েছে। আদালত শুনানি শেষে ১১ সেপ্টেম্বর ২৯ জন আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেন। ওইদিন আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১১ অক্টোবর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য ছিল।

বর্তমানে মুহিবুল্লাহর পরিবারের ২৫ জন সদস্য কানাডায় বসবাস করছেন। জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয়ক সংস্থার সহায়তায় প্রথম দফায় ৩১ মার্চ মুহিবুল্লাহর স্ত্রীসহ ১১ জন এবং দ্বিতীয় দফায় ২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ জন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কানাডা পাড়ি জমান।