অবৈধ বিদেশিদের ধরতে কাজ শুরু করল সরকার

নিউজ ডেস্ক
অবৈধ বিদেশিদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে যাচ্ছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে অবস্থানরত যেসব বিদেশি নাগরিক বৈধ হননি, তাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে সরকার।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) আহবায়ক করে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) আহবায়ক ও একই বিভাগের একজন যুগ্ম সচিবকে (বহিরাগমন-২ অধিশাখা) সদস্য-সচিব করা হয়েছে।
টাস্কফোর্সের অন্য সদস্যরা হলেন— প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (কনস্যুলার), জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব (রাজনৈতিক-১ অধিশাখা), স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (ইমিগ্রেশন), ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পাসপোর্ট, ভিসা ও ইমিগ্রেশন), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পরিচালক (অপারেশন উইং), প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পরিচালক (এনজিও বিষয়ক ব্যুরো), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের পরিচালক (বহিঃসম্পর্ক সংযোগ উইং) ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের পরিচালক (এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স এন্ড লিয়াঁজো ব্যুরো)।
কমিটির কর্মপরিধি নিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১) বাংলাদেশে অবৈধভাবে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের বিষয়ে গৃহীত সার্বিক কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন ও পরামর্শ প্রদান; (২) কমিটি এ সংক্রান্ত বিষয়াদির উপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান ও প্রয়োজনবোধে সুপারিশ প্রণয়ন করতে পারবে; (৩) কমিটি প্রয়োজনে যে কোনো কর্মকর্তা/ব্যক্তিকে সভায় উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানাতে পারবে এবং প্রয়োজনে কো-অপ্ট করতে পারবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে গত ২২ জানুয়ারি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনির সভাপতিত্বে সভা হয়। ওই সভায় টাস্কফোর্স গঠনসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর বা সংস্থার অংশগ্রহণে একটি ওয়ার্কশপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কাজ করার অনুমতি না নিয়ে কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই অনেক বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশে অবস্থান কিংবা কর্মরত আছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আইনি দুর্বলতা ও বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের সমন্বিত কোনো তথ্যভান্ডার না থাকায় তারা এ সুযোগ পাচ্ছে।
বিদেশি এসব নাগরিকের অনেকে নানা অপরাধের সঙ্গেও জড়াচ্ছেন। আবার অবৈধভাবে অবস্থানকারী এসব বিদেশিদের একটা বড় অংশ পোশাকখাতসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। বাংলাদেশে থাকা এসব বিদেশিদের মধ্যে বেশিরভাগই ভারতীয়।
অবৈধ বিদেশি নাগরিকরা ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ভিসা নিয়ে বৈধ না হলে কিংবা ভিসা না থাকা অবস্থায় ধরা পড়লে তাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল সরকার।
গত ৭ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছিলেন, দেশে অনেক বিদেশি আছেন। তাদের কোনো ভিসা নেই। অনেকেই চাকরিও করছেন। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ভিসা না নিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অবশ্য এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর অবৈধ বিদেশিদের ব্যাপারে একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই দিন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছিলেন, অবৈধভাবে কোনো বিদেশি নাগরিকদের সরকার বাংলাদেশে থাকতে দেবে না।
তবে সেদিন সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশে কোন দেশের কত নাগরিক অবৈধভাবে অবস্থান করছেন সেই পরিসংখ্যান মন্ত্রণালয়ের কাছে নেই বলে জানান। এজন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার কথাও বলেছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।