ভারতের লাদাখে বিক্ষোভে ৪ জন নিহতের প্রতিবাদে কারগিলে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’
![]()
নিউজ ডেস্ক
ব্যাপক বিক্ষোভের এক দিন পর আজ বৃহস্পতিবার ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চল লাদাখের পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত ছিল। অঞ্চলটিকে আলাদা রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া এবং ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে গতকাল বুধবার সেখানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। এতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে লাদাখে আর কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। তবে কোথাও চারজনের বেশি মানুষ জড়ো হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
বিক্ষোভে পুলিশের গুলি বর্ষণের প্রতিবাদে এবং লাদাখের সঙ্গে সংহতি জানাতে আজ ওই অঞ্চলের কারগিল শহরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
গতকালের সহিংসতায় চারজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি ৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হন। স্থানীয় বিজেপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক ভাঙচুর চালালে পুলিশ গুলি ছোড়ে।
এক পুলিশ কর্মকর্তা আজ সকালে বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে লাদাখের রাজধানী লেহের কোথাও কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে এবং পুলিশ সড়কগুলোতে নজরদারি চালাচ্ছে।’
কর্মকর্তারা বলেন, গতকালের সহিংসতার পর পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ওই ঘটনায় চারজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ সহিংস হয়ে স্থানীয় বিজেপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করলে পুলিশ গুলি চালায়।
কারগিল জেলায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কারগিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (কেডিএ) ডাকে কমপ্লিট শাটডাউন চলছে। সংগঠনটি কারগিলে রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছে। লাদাখের লেহতে একই দাবিতে আন্দোলন করছে লেহ এপেক্স বডি (এলএবি)।
কেডিএ নেতা সাজাদ কারগিলি বলেন, ‘কারগিলে কমপ্লিট শাটডাউন চলছে। লাদাখের লেহতে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং সেখানকার মানুষের সঙ্গে সংহতি জানাতেই এ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।’
এক ভিডিও বার্তায় সাজাদ মানুষকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘লাদাখে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংলাপের মাধ্যমে দাবিগুলো উত্থাপন করতে চাই।’
এদিকে হুররিয়াতের চেয়ারম্যান ও কাশ্মীরের প্রধান ধর্মীয় নেতা মিরওয়াইজ উমর ফারুক লেহতে প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি এই ঘটনাকে ২০১৯ সালের ৫ আগস্টের সিদ্ধান্তের ‘পরবর্তী প্রতিক্রিয়া’ বলে অভিহিত করেছেন। সেদিন জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে রাজ্যটিকে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ—এই দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছিল।
মিরওয়াইজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) একে পোস্ট লিখেছেন, ‘লাদাখের বিক্ষোভে মূল্যবান প্রাণহানির ঘটনায় আমি গভীরভাবে মর্মাহত। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে একতরফাভাবে ভেঙে দেওয়া এবং এর মর্যাদা কমানোর সিদ্ধান্তের ফলেই এই দুর্ভাগ্যজনক পরিণতি ঘটছে। এরপর সেখানকার জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতিও পূরণ করা হয়নি। আশা করি, লাদাখের জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হবে। এতে মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে।’
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।