মেয়াদ শেষ হবার তিন মাস আগেই হবে সিটি নির্বাচন, মার্চ-এপ্রিলে ইউপি নির্বাচন - Southeast Asia Journal

মেয়াদ শেষ হবার তিন মাস আগেই হবে সিটি নির্বাচন, মার্চ-এপ্রিলে ইউপি নির্বাচন

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

চলতি দায়িত্বে মেয়রদের মেয়াদ শেষের ছয় মাস আগে নির্বাচন করার কথা থাকলেও এবার তিন মাস আগেই সিটি নির্বাচন হবে বলে জানা গেছে। শপথ নেয়ার পর ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে দায়িত্বও বুঝে নেবেন জনপ্রতিনিধিরা। আইনটি পাস হলে নির্বাচন তিন মাস আগে হবে। ১৪ সেপ্টেম্বর সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০২০-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সিটি নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বছরে তিন মাসের বদলে এক মাস ছুটি পাবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘দেখা গেছে, বাস্তবে (সিটি কর্পোরেশন আইন অনুযায়ী) কাজ করতে গেলে কিছু অসুবিধা হয়। এখন নিয়ম রয়েছে– (মেয়াদ উত্তীর্ণের আগে) ৬ মাসের (১৮০ দিন) মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। অন্যদিকে রয়েছে যেদিন তারা (মেয়র ও কাউন্সিলর) মিটিং করবে, সেই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত তাদের সময় থাকবে। দেখা গেছে, ৪-৫ মাস আগে যদি নির্বাচন হয়ে যায়, শপথ হলেও তারা দায়িত্ব নিতে পারছে না এই কন্ট্রাডিকশনের জন্য। (মেয়াদ পূর্ণ না হাওয়ায়) অনেক দিন তাদের অপেক্ষা করতে হয়। তিনি বলেন, নির্বাচন তো বটেই, শপথ নেয়ার পরও তাদের অপেক্ষা করতে হয়। সে জন্য এটিকে একটু চেইঞ্জ করে নিয়ে আসা হয়েছে। (মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে) তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন শেষ করতে হবে। যেদিন শপথ হবে এর ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর হয়ে যাবে।

অন্যদিকে, আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এবারও দেশব্যাপী ধাপে ধাপে ভোট করার চিন্তা আছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটির। এক্ষেত্রে ভোট গ্রহণের জন্য ৪০ থেকে ৩৭ দিন হাতে রেখেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।

প্রথম ধাপের ভোট মার্চের মাঝামাঝি হতে পারে। দ্বিতীয় ধাপের ভোট মার্চের শেষে এবং এপ্রিলে তৃতীয় ধাপের ভোট হতে পারে। এ জন্য ফেব্রুয়ারির শুরুতে তফসিল ঘোষণা করবে কমিশন। এবার দলীয় প্রতীকে ব্যালট পেপারের পাশাপাশি উপজেলা সদরের ইউপিগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পরিকল্পনাও রয়েছে। আইন অনুযায়ী আগামী বছরের ২১ মার্চের মধ্যে প্রথম ধাপের নির্বাচন করতে হবে কমিশনকে। গতকাল নির্বাচন কমিশন স্থগিত পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রংপুর সদর উপজেলার তিনটি, ভোলার লালমোহনের একটি ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার একটি ইউনিয়নে ভোট হবে আগামী ২০ অক্টোবর। অক্টোবর জুড়েই স্থগিত বিভিন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইনে পরিষদের মেয়াদের বিষয়ে বলা হয়েছে- “কোন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ, …সংশ্লিষ্ট পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠানের তারিখ হতে পাঁচ বছর সময়ের জন্য উক্ত পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন।” পরিষদের নির্বাচনের বিষয়ে বলা হয়েছে- “পরিষদ গঠনের জন্য কোন সাধারণ নির্বাচন ওই পরিষদের জন্য অনুষ্ঠিত পূর্ববর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ হতে পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।” আইনে উল্লেখ রয়েছে- “দৈব-দুর্বিপাকজনিত বা অন্যবধি কোন কারণে নির্ধারিত ৫ বছর মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে, সরকার লিখিত আদেশ দ্বারা, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কিংবা অনধিক ৯০ দিন পর্যন্ত, যা আগে ঘটবে, সংশ্লিষ্ট পরিষদকে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্ষমতা দিতে পারে।”

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে মোট ছয় ধাপে ৪ হাজার ২৭৯ ইউনিয়নে ভোট আয়োজন করে কমিশন। প্রথম ধাপে ৭৫২ ইউপির ভোট হয় ২২ মার্চ। এর পর ৩১ মার্চ ৭১০টি ইউপি, ২৩ এপ্রিল ৭১১টি ইউপি, ৭ মে ৭২৮টি ইউপি, ২৮ মে ৭১৪টি ইউপি এবং ৪ জুন ৬৬০টি ইউপিতে ভোট হয়। তবে এবার ইউপি সংখ্যাও কিছু বেড়েছে। ইসি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে দেশে ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। তবে ২০০ ইউপিতে মামলা জটিলতার কারণে নির্বাচন আটকে আছে। এ ছাড়া বছরের অন্যান্য সময়ও কিছু ইউপিতে সাধারণ নির্বাচন হওয়ায় ৪ হাজার ১০০ ইউপিতে ধাপে ধাপে করতে হবে। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে কমিশন। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তফসিল দেওয়া শুরু হবে। নির্বাচন চলবে বছর জুড়েই। তবে আগামী অক্টোবরে প্রায় দুই শতাধিক ইউপিতে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গতবারের মতো আসন্ন ইউপির ভোটও হবে দলীয় প্রতীকে। চেয়ারম্যান বা মেম্বার প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক নয়।