রাশিয়ার টিকা স্পুৎনিক দেশে তৈরির চুক্তি
 
নিউজ ডেস্ক
রাশিয়ার করোনা টিকা স্পুৎনিক তৈরি হবে বাংলাদেশেই। তবে এর ফর্মুলা গোপন রাখতে হবে। এ শর্তেই রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা সই হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এছাড়া চীনের কাছ থেকে টিকা নিতেও সম্মত হয়েছে সরকার।
দেশে বুধবার পর্যন্ত করোনার টিকা নিয়েছেন প্রায় ৫৮ লাখ মানুষ। ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী মাসে পাওয়ার কথা ৫০ লাখ ডোজ। তবে তা আসতে দেরি হওয়ায় বিকল্প খুঁজছিল সরকার।
সে সংকট কাটিয়ে উঠতে এবার দেশেই টিকা উৎপাদনে যাচ্ছে সরকার। এরই মধ্যে করোনার টিকা স্পুৎনিক তৈরিতে রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি হয়েছে। শর্ত, এর ফর্মুলা গোপন রাখতে হবে।
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, ইতিমধ্যে চীন তাদের তৈরি ৫ লাখ টিকা উপহার দেয়ার কথা বলেছে। চীনে যে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছেন ও যারা দেশটিতে ব্যবসা করেন তারা চীনের তৈরি টিকা নিতে চায় বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা টিকার চালান কবে আসবে জানিনা। তবে আশ্বস্ত করেছে তারা। বিকল্প উৎস থেকে টিকা পেতে চীন, রাশিয়ার টিকার বিষয়ে যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
পাশাপাশি চীনের উৎপাদন ক্ষমতা অনেক বেশি হওয়ায় তাদের থেকেও টিকা নিতে চায় সরকার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, বিশ্বের অনেক দেশ চীনের টিকা নিয়েছে, কোথাও কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়নি। এছাড়া টিকা সংরক্ষণাগার নির্মাণে চীনের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
এর আগে গত ১১ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সরকার রাশিয়া ও চীনের কাছ টিকা পেতে জোর তৎপরতা শুরু করেছে।
শুরুতে বিতর্কের মধ্যে থাকা রাশিয়ার স্পুৎনিক ভি টিকা কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে ৯২ শতাংশের মতো সুরক্ষা দিচ্ছে, যা এর তৃতীয় ধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে উঠে এসেছে।
বিশ্বখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই টিকা নিরাপদ বলে প্রতীয়মান হয়েছে এবং এটা ভাইরাস আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি ও প্রাণহানি থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দিতে সক্ষম।
তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই রাশিয়া টিকাটি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়ায় তা নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়েছিল। তবে এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন, স্পুৎনিক ভি টিকার সুফল দেখা গেছে।
ফাইজার, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মর্ডানা ও জনসেনের মতো পরীক্ষিত টিকার তালিকায় স্পুৎনিক ভি এখন যুক্ত হচ্ছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, যুক্তরাজ্যে উদ্ভাবিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা এবং বেলজিয়ামে উৎপাদিত জনসেনের টিকার মতো একইভাবে কাজ করে স্পুৎনিক ভি।
রাশিয়ার পাশাপাশি এই টিকা আর্জেন্টিনা, ফিলিস্তিন, ভেনেজুয়েলা, হাঙ্গেরি, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইরানসহ কিছু দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে।
