নির্বাচনে অভিভাবকরা ভোট না দেয়ায় সন্তানদের জন্মনিবন্ধন সনদ দেয়নি চেয়ারম্যান
![]()
নিউজ ডেস্কঃ
বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নে অভিবাবকরা নির্বাচনে ভোট দেয়নি বলে তিন কিশোরকে জন্ম নিবন্ধন সনদ দেয়নি ইউপি চেয়ারম্যান শৈউ সাই মারমা।
গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের বাসিন্দা চশৈ প্রু মারমা (১৮), মংচ প্রু মারমা (১৮) ও উমং প্রু মারমা (১৮) জানান, “কেউ আমাকে ভোট দেয়নি, তাই তোদের জন্মনিবন্ধন সনদ দেব না” এসব বলে গালিগালাজ করে তিন কিশোরকে জন্মনিবন্ধন সনদ না দিয়ে ফিরিয়ে দেন ইউপি চেয়ারম্যান।
তারা আরো বলেন, “আমাদের অভিভাবকেরা নাকি, চেয়ারম্যানকে নির্বাচনে ভোট দেননি। নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে থাকে, বদনাম করে। তাই তিনি এমনটা করেছেন”। ২৯ এপ্রিল থেকে গত ৬ মে পর্যন্ত মোট চারবার তারা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যান। কিন্তু জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল প্রিন্ট কপি পাওয়া তো দুরের কথা, শুধু অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে বারবার তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, চশৈ প্রু মারমা (১৮), মংচ প্রু মারমা (১৮) ও উমং প্রু মারমা (১৮) তারা তিনজনই গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের পান্তলা পাড়ার বাসিন্দা। তার মধ্যে একজন আংশিক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। জাতীয় আইডি কার্ড ও ভোটার তালিকাভুক্ত হয়নি তাদের। চলমান ভোটার হাল নাগাদ-এ নতুন ভোটার তালিকাভুক্ত করতে জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল প্রিন্ট কপি দরকার হয়। তাই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মনিবন্ধন এর ডিজিটাল প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করতে গেলে গত সোমবার দুপুরে এই কথা গুলো বলেন ইউপি চেয়ারম্যান শৈউ সাই মারমা ।
এই ব্যাপারে গালেঙ্গ্যা ইউপি চেয়ারম্যান শৈউ সাই মারমা সাংবাদিককে বলেন, জন্মনিবন্ধন না দেয়ার অভিযোগটি সত্য নয়। তাদের অভিভাবকরা শপথ করেছিল য়ে, আমাকে কখনো ভোট দেবে না। তবে কেন তারা ভোট না দিতে শপথ করেছিল, তা জানার জন্য অভিভাবকদের আসতে বলা।
এই তিন কিশোর বলেন, জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করতে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গেয়ে গালাগাল খেয়ে খালি হাতে ফিরে আসতে হয় একাধিকবার। এরই মধ্যে একবার ইন্টারনেট থেকে জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল প্রিন্ট কপি হাতে পেয়ে যায়। এ কাগজে স্বাক্ষর নিতে গেলে তা ইউপি চেয়ারম্যান জন্মনিবন্ধন সনদ টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলে। এঅবস্থায় জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল প্রিন্ট কপি না পাওয়ায় নতুন ভোটার তালিকায় তালিকাভুক্ত হতে পারছেনা তিন কিশোর ।
এই ব্যাপারে গালেঙ্গ্যা ইউপি সচিব উবানু মারমা বলেন, স্বাক্ষর না দিয়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ ছিঁড়ে ফেলার কখা শুনেছি, তবে চেয়ারম্যানের সাথে এ ব্যাপারে সরাসরি কথা হয়নি।
রুমা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শামসুল আলম বলেন, বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনার পর চেয়ারম্যানকে বলে দিয়েছি। এতে কাজ না হলে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবো।