অবসরে ব্রাকের চেয়ারপারসন স্যার ফজলে হামান আবিদ - Southeast Asia Journal

অবসরে ব্রাকের চেয়ারপারসন স্যার ফজলে হামান আবিদ

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

 

নিউজ ডেস্কঃ

অবশেষে নিজ পদ থেকে অবসরে যাওয়ার ঘোষনা দিলেন বিশ্বখ্যাত সফল এনজিও ব্র্যাকের চেয়ারপারসন স্যার ফজলে হাসান আবিদ।

মঙ্গলবার (৬ আগষ্ট) ব্র্যাক সেন্টারে এক নৈশভোজ অনুষ্ঠানে তিনি পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন। তবে চেয়ারপাাসনের পদ ছাড়লেও সংস্থাটির সম্মানসূচক ‘চেয়ার এমিরেটাস’ পদে থাকছেন তিনি। এক্ষেত্রে তিনি প্রতিষ্ঠানটির কৌশলগত পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। বিশ্বব্যাপী ব্র্যাকের প্রভাব কীভাবে শক্তিশালী করা যায় সেজন্য কাজ করবেন।

ব্র্যাকের হেড অব মিডিয়া এক্সটার্নাল রিলেশনন্স রাজিব ভৌমিক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় শূণ্য পদে নতুন চেয়ারপারসনের দায়িত্ব নিচ্ছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদষ্টো ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।

ব্র্যাক এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল এই দুই সংস্থার চেয়ারপারসন ছিলেন ফজলে হাসান আবেদ। কিন্তু বর্তমানে দুই সংস্থায় দু’জন চেয়ারপারসন থাকছেন।

এক্ষেত্রে ব্র্যাক বাংলাদেশের নতুন চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল আমিরা হক।

এদিকে চেয়ারপারসনের পাশাপাশি ব্র্যাকের পরিচালনা পর্ষদেও পরিবর্তন আসছে আসছে বলে জানা গেছে। নতুন পর্ষদে রয়েছেন অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আদিব এইচ খান, ইরিন খান, শফিকুল হাসান, ফাউজিয়া রশীদ, মালিসা পার্ক, কায়সার জামান ও ফাহিমা দাদা।

৮৩ বছর বয়সী আবেদ ব্র্যাকের পাশাপাশি ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের পরিচালনা পর্ষদেও চেয়ারপারসনের পদে ছিলেন। গত সপ্তাহেই ব্র্যাক বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান আসিফ সালেহ। তিনি ইতিমধ্যে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন।

১৯৭২ সালে ফজলে হাসান আবেদের হাত ধরে যাত্রা শুরু করা ব্র্যাক এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিও হিসেবে স্বীকৃত। এশিয়া, আফ্রিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের ডজনখানেক দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন, বিশেষ করে ভারতে আশ্রয় নেয়া বিপুলসংখ্যক মানুষকে স্বাবলম্বী করার প্রয়াসে বাংলাদেশ রুরাল অ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি (ব্র্যাক) নামে ব্র্যাকের কার্যক্রম শুরু হয়।

গণশিক্ষা থেকে শুরু করে দারিদ্র বিমোচন, ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের মতো কাজের মধ্য দিয়ে বিস্তৃত হয় ব্র্যাকের কার্যক্রম।

অনেকেই মনে করেন, ব্র্যাক প্রতিষ্ঠাতা ফজলে হাসান আবেদেরও নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিত। যে অনুষ্ঠানে ফজলে হাসান আবেদের বিদায়ের ঘোষণা এলো, ব্র্যাক সেন্টারে সেই নৈশভোজে নোবেলজয়ী বাংলাদেশি ড. মুহাম্মদ ইউনূসও ছিলেন।

১৯৮০ সালে ম্যাগসেসে পুরস্কার পাওয়ার পর জীবনে অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন ফজলে হাসান আবেদ। তার মধ্যে রয়েছে বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার, স্পেনিশ অর্ডার অব সিভিল মেরিট, লিউ টলস্টয় ইন্টারন্যাশনাল গোল্ড মেডেল ইত্যাদি।

২০১৪ ও ২০১৭ সালে ফরচুন ম্যাগাজিনের নির্বাচিত ৫০ বিশ্বনেতার মধ্যে ফজলে হাসান আবেদের নাম স্থান পেয়েছিল।

ফজলে হাসান আবেদের জন্ম ১৯৩৬ সালে। তার উচ্চতর পড়াশোনা হয় লন্ডনে, হিসাববিজ্ঞানে। পড়াশোনার পর তিনি একটি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের পাকিস্তান শাখায় যোগ দিলেও ১৯৭০ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় বদলে দেয় তার জীবনপথ।

চাকরি ছেড়ে তিনি চলে যান লন্ডনে। সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য জনমত গঠনে কাজ শুরু করেন। এরপর ১৯৭২ সালে ফিরেই দেশ পুনর্গঠনে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করে কাজে নেমে পড়েন।