রামগড়ে পণ্যবাহী গাড়ির দুই চালক অপহরণের শিকার, মুক্তিপণ দাবি ইউপিডিএফের
![]()
নিউজ ডেস্ক
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড়ের জালিয়াপাড়া সড়কে পণ্যবাহী দুটি গাড়ির চালক অপহরণের ঘটনায় এলাকাটি আবারো আলোচনায় এসেছে। সম্প্রতি, প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল ইউপিডিএফ (ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট) সদস্যরা দুইটি অপহরণ সংঘটিত করেছে। প্রথম ঘটনাটি ঘটে শনিবার, যেখানে একটি ট্রাকের চালক ইমাম উদ্দিন অপহৃত হন এবং পরবর্তীতে স্থানীয় ৪৩ বিজিবি কর্তৃক অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে রবিবার, যেখানে কাভার্ডভ্যানের চালক খায়রুল ইসলাম অপহৃত হন এবং মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়।
এছাড়া, খায়রুল ইসলামের মুক্তির জন্য যে মুক্তিপণ পাঠানো হয়েছে, তাও সন্ত্রাসীদের দাবির পরিমাণের তুলনায় অসম্পূর্ণ ছিল, ফলে তাকে এখনো মুক্তি দেয়নি তারা। সন্ত্রাসীরা তার ওপর অত্যাচার করছে বলে জানা গেছে এবং তার কান্নার শব্দও মোবাইল ফোনে শোনা গেছে। এরই মধ্যে, পুলিশ ও বিজিবির যৌথ অভিযান চলছে। তবে পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় অভিযান সফল হতে কিছুটা সময় লাগছে।
এলাকার স্থানীয়রা ধারণা করছেন, ইউপিডিএফ এর অন্তর্ভুক্ত সদস্যরা এ অপহরণ ঘটনা ঘটিয়েছে, কারণ এই এলাকায় তাদের প্রভাব রয়েছে। পুলিশ ও বিজিবি অভিযান অব্যাহত রেখেছে এবং সড়কগুলিতে পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে পণ্যবাহী যানবাহনগুলো নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে।
অপহৃত চালককে উদ্ধারের জন্য যৌথ অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন। এ সময় রামগড়ের জালিয়াপাড়া সড়কে পণ্যবাহী যানবাহনগুলোকে বিজিবি-পুলিশের নিরাপত্তায় গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত রোববার ঢাকা থেকে গুঁড়ো দুধের চালান নিয়ে খাগড়াছড়ি সদরের উদ্দেশে যাওয়ার সময় রামগড়ের যৌথখামার এলাকায় পার্বত্য এলাকার আঞ্চলিক সংগঠনের সদস্যরা কাভার্ডভ্যানটি থামিয়ে চালক খায়রুল ইসলাম ও সহকারী সুজন মিয়াকে অপহরণ করে। অপহরণের পর সন্ত্রাসীরা ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তাদের একজন হেলপারকে ছেড়ে দেওয়া হয় যাতে তিনি মালিকের কাছে মুক্তিপণের বিষয়ে বার্তা পৌঁছাতে পারেন।
এ ঘটনায় একদিন আগে, শনিবার একই এলাকায় দীঘিনালাগামী একটি ডিমবোঝাই ট্রাক থামিয়ে ইউপিডিএফ অপহরণকারীরা চালক ইমাম উদ্দিনকে (৩৮) অপহরণ করে। তারা মুক্তিপণ হিসেবে ২ লাখ টাকা দাবি করে এবং বিজিবি অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
অপরদিকে, কাভার্ডভ্যানের মালিক আসাদুজ্জামান মোল্লা মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন, অপহরণকারীরা প্রথমে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে তার অপারগতার কথা শুনে তারা ১ লাখ টাকা পাঠানোর নির্দেশ দেয়। এর পর তারা প্রথমে ৫০ হাজার টাকা এবং পরবর্তীতে আরও ৫০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানোর পরও চালক খায়রুলকে মুক্তি দেয়নি। বর্তমানে তারা আরও ১ লাখ টাকা দাবি করছে এবং চালককে বেদম মারধর করছে বলে জানা গেছে।
এই অপহরণ ঘটনা সম্পর্কে রামগড় বিজিবির জোন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ আহসান উল ইসলাম জানিয়েছেন, অপহৃত চালককে উদ্ধারে অভিযান চলছে। তবে পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় কিছুটা দেরি হচ্ছে।
এলাকার স্থানীয়রা মনে করছেন, ইউপিডিএফ এর সদস্যরা এই অপহরণ ঘটিয়েছে, কারণ এটি ইউপিডিএফ অধ্যুষিত এলাকা। এর আগেও এই অঞ্চলে ইউপিডিএফ মুক্তিপণের জন্য অনেককে অপহরণ করেছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।