পদ্মার ভাঙনে একরাতেই বিলীন সীমান্তঘেঁষা বিজিবি ক্যাম্প
![]()
নিউজ ডেস্ক
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় পদ্মা নদীর ভাঙনে সীমান্তে স্থাপিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) একটি বিওপি বিলীন হয়ে গেছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার সর্বশেষ সীমান্তঘেঁষা উদয়নগর বিওপির দুই-তৃতীয়াংশ নদীতে বিলীন চলে যায়।
বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মুর্শেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিজিবি জানায়, বুধবার রাতে উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের উদয়নগর বিওপির দুই-তৃতীয়াংশ নদীতে বিলীন চলে যায়। অবশিষ্ট অংশও কয়েক দিনের মধ্যে ভেঙে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চিলমারী ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার আতারপাড়া এলাকার উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভয়াবহ ভাঙনে উদয়নগর বিজিবি ক্যাম্প বিলীন হয়ে গেছে। তবে ক্যাম্পে থাকা মালামাল আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, শুধু ক্যাম্প নয়। ওই এলাকার ঘরবাড়ি ও কিছু বিস্তীর্ণ আবাদী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাড়ি ও জমি হারিয়ে অনেকেই নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। গত কয়েক দিনে শতশত বিঘা জমি নদীর পেটে চলে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ আতারপাড়া, বাংলাবাজারসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বলেন, তিন মাস আগের পর্যবেক্ষণে পদ্মা-গড়াই নদীর ১৭টি স্থানে ভাঙনের ঝুঁকি আছে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। এ বছর পানি বাড়ার সঙ্গে সেসব এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। বর্তমানে পানি কমছে, আর এতে ভাঙন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙন কবলিত এলাকার মধ্যে দৌলতপুরের উদয়নগর বিওপি ছিল অন্যতম। সেখানে জিওব্যাগ ফেলে রক্ষার চেষ্টা করা হলেও ভাঙনের তীব্রতায় তা কাজে আসেনি।
কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, ভাঙনের আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। কয়েক দিন আগে সেখান থেকে বিজিবির সব সদস্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাশের চর চিলমারী বিওপিতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাই বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। চর চিলমারী বিওপি থেকেই উদয়নগর এলাকায় টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হচ্ছে।
পাউবোর কুষ্টিয়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে উদয়নগর বিওপিসহ ভাঙন এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি দেখা হয়েছে। পানি কমায় ভাঙন তীব্র হচ্ছে। ভাঙনের আশংকায় শুকনো মৌসুমে সেখানে জিও ব্যাগ ফেলে বিওপি’টি রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, নদী ভাঙন রোধ করতে সব ধরনের চেষ্টা করা হবে। ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। এছাড়াও ভাঙন রোধে স্থায়ী ও অস্থায়ী দু’ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রস্তাবনা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।