খাগড়াছড়িতে মারমা ছাত্রী ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সহিংসতা, মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ নেই
![]()
নিউজ ডেস্ক
খাগড়াছড়ি সদরের সিঙ্গিনালা এলাকার এক মারমা কিশোরীর ওপর গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর তৈরি হওয়া সহিংস পরিস্থিতি নতুন মোড় নিয়েছে। খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক দলের করা মেডিকেল পরীক্ষায় ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। ২৮ সেপ্টেম্বর চিকিৎসক জয়া চাকমাসহ তিনজন চিকিৎসকের স্বাক্ষরিত মেডিকেল রিপোর্টে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, ২৩ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে ওই কিশোরী নিখোঁজ হয়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয়রা শাসন রক্ষিত বৌদ্ধ বিহারের পাশে পানিভরা জমি থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। কিশোরীর বাবা অভিযোগ করেন, অজ্ঞাত তিন যুবক তার মেয়েকে পালাক্রমে ধ
ধর্ষণ করেছে। এ ঘটনায় তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
মামলার পরদিন সেনাবাহিনীর সহায়তায় সন্দেহভাজন শয়ন শীল (১৯) নামে এক কিশোরকে আটক করে পুলিশ এবং আদালতের নির্দেশে তাকে ছয় দিনের রিমান্ডে নেয়। তবে মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ না মেলায় পুরো ঘটনাকে ঘিরে নতুন প্রশ্ন উঠেছে।
ঘটনার পরপরই ২৪ সেপ্টেম্বর ইউপিডিএফের ইন্ধনে জুম্ম ছাত্র জনতা সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। এতে ইউপিডিএফ-সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম সংহতি জানায়। অবরোধ চলাকালে বিক্ষোভকারীরা খাগড়াছড়ি-মাটিরাঙা আঞ্চলিক মহাসড়কে গাছ ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি, মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তারা অস্ত্র, কান্টা ও গুলতি নিয়ে পিকেটিং করে এবং বিজিবি সদস্যদের বহনকারী গাড়ি আটকে দেয়।
পরে ২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচির নামে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা যায়, ২৬ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর একটি পিকআপ ভ্যানে আকস্মিক হামলা চালানো হয়, এতে তিন সেনা সদস্য আহত হন। সেনাবাহিনী ধৈর্য ধরে কোনো বল প্রয়োগ না করে পরিস্থিতি এড়িয়ে যায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টা থেকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ও পৌরসভা এলাকায় এবং গুইমারা উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। তবুও ইউপিডিএফ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলো ২৮ সেপ্টেম্বর গুইমারায় সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে, যেখানে তিনজন নিহত এবং অনেকে আহত হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, ধর্ষণ ইস্যুকে কেন্দ্র করে সহিংসতা উসকে দেওয়া এবং নাশকতার মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করেছে একটি মহল, যাদের পেছনে বহিঃশক্তির ইন্ধন রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ না পাওয়া গেলেও ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে সহিংস কর্মকাণ্ড পাহাড়ি অঞ্চলের শান্তি-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে নাজুক করে তুলেছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।