পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে জাতীয় সংলাপ ও রোডম্যাপের দাবি চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে জাতীয় সংলাপ ও রোডম্যাপের দাবি চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে জাতীয় সংলাপ ও রোডম্যাপের দাবি চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা ও রাজনৈতিক উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের নেতারা। এ চুক্তি বাস্তবায়নে তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জাতীয় সংলাপ ও কার্যকর রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের নেতারা বলেছেন, পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি, মানবাধিকার সুরক্ষা ও জাতীয় স্থিতির স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে চুক্তি বাস্তবায়ন অগ্রাধিকার পাওয়া জরুরি।

পার্বত্য চুক্তির ২৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতারা এসব কথা বলেন। তাঁরা চুক্তি বাস্তবায়নে সম্মিলিত বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বানও জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী এবং নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর সংবিধানে পরিচয় অস্বীকারের মধ্য দিয়ে পার্বত্য অঞ্চলের জুম্ম আদিবাসী জনগোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন রাজনৈতিক অধিকার ও সাংস্কৃতিক বিকাশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ১৯৯৭ সালে সশস্ত্র সংঘাতের অবসানে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক চুক্তি পাহাড়ি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ, ভূমি অধিকার ও স্থানীয় শাসনব্যবস্থার পুনর্গঠনের পথ খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও ২৮ বছর পরও চুক্তির মৌলিক ধারাগুলো কার্যত বাস্তবায়ন হয়নি।’

চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির পুনর্গঠন আশা জাগালেও ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সভা স্থগিতকরণ এবং টাস্কফোর্সের কার্যক্রম থমকে যাওয়া গভীর উদ্বেগের বলে মন্তব্য করেন প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরোক্ষভাবে সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের শিক্ষক নিয়োগে জটিলতাকেও চুক্তি বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার ফল বলে উল্লেখ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে তিনটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হচ্ছে, চুক্তি বাস্তবায়নে জাতীয় সংলাপ আয়োজন, কার্যকর রোডম্যাপ ঘোষণা ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সব রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে অগ্রাধিকার হিসেবে চুক্তি বাস্তবায়ন অন্তর্ভুক্ত করা।

এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, ‘২৪ জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান দেশের জন্য গৌরবের, যা বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ার শপথ তৈরি করেছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ সত্ত্বেও সংস্কার কমিশনগুলোতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারের প্রশ্ন উপেক্ষিত হয়েছে। ভূমি, কৃষি ও শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন না করা সরকারের বড় ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতা কাটাতে এখনো সময় আছে। এ কারণেই পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত হয়েছি।’

সেনাবাহিনীর গঠনমূলক ভূমিকা, জাতীয় সংলাপ এবং সবার অংশগ্রহণে একটি কার্যকর রোডম্যাপ তৈরি হলে পাহাড়ে শান্তি ও গণতন্ত্রের পথ সুদৃঢ় হবে বলে শামসুল হুদা আশা প্রকাশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনের সমাপনী বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রশ্নটি কখনোই দেশের মূলধারার গণতান্ত্রিক আলোচনায় যথাযথ গুরুত্ব পায়নি; বরং দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত থেকেছে।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা কোনো অঞ্চলের নয়; এটি সমগ্র বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতি, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নকে জাতীয় ইস্যু হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগ, জাতীয় সংলাপ এবং নতুন গণতান্ত্রিক বন্দোবস্তের অংশ হিসেবে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *