সীমান্ত নিকটবর্তী এলাকাগুলোতে মানসিক ভারসাম্যহীনদের সন্দেহজনক গতিবিধি- বিষয়গুলো কি একেবারেই কাকতালীয়?
ছবি- রামগড় ও সাবরুম সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থানরত মানসিক ভারসামহীন নারী।
![]()
নিউজ ডেস্ক
বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের কারণে থমকে গেছে জীবন যাত্রা। এ অবস্থায় বাংলাদেশের জেলাগুলোতেও চলছে এক প্রকার লকডাউন অবস্থা। গত ২৬ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ছুটির পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি প্রায় সকল প্রতিষ্ঠান। আর করোনা ভাইরাসের এ দুর্যোগকালীন সময়ে বাংলাদেশের কিছু কিছু জায়গায় অযাচিত মানুষের কারণে বাড়তি দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সেসব এলাকার মানুষ। উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রামে জেলার সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারীদের অনেকেই বলছেন, প্রায়ই মানসিক ভারসাম্যহীনরা কাঁটাতার পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। কাঁটাতার দিয়ে মাদকসহ চোরাচালানের অভিযোগ পুরাতন হলেও সীমান্ত নিকটবর্তী এলাকাগুলোতে মানসিক ভারসাম্যহীনদের অযাচিত উপস্থিতিও স্থানীয়দের দুঃশ্চিন্তায় ফেলেছে। বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা এ সব অযাচিতদের ভাষা স্থানীয়রা বুঝতে না পারলেও মানবিকতার কারণে খাবার দিয়ে থাকেন অনেকেই।
পার্বত্য চট্টগ্রামে এই ধরণের মানসিক ভারসাম্যহীনদের বিচরণ সবচেয়ে বেশী। ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময়ে বান্দরবান জেলা সদর, আলীকদম, খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা, দীঘিনালা ইত্যাদি এলাকায় এই ধরণের মানুষদের সন্দেহজনক বিচরণ দেখা গেছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো এরা সাধারণত সেনানিবাস এলাকাগুলোর প্রবেশদ্বারের কাছাকাছি অবস্থান করে থাকে।
পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে প্রবেশ করতে গিয়ে বিজিবির বাঁধার মুখে গত ২রা এপ্রিল থেকে অদ্যাবদি সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থান করছেন ভারতীয় এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারী। জানা যায়, গত ২রা এপ্রিল দুপুরে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ভারতীয় নারী খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার রামগড় বাজারের বিপরীতে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে (ভারত পার্শ্বে) অবস্থান করছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে জানা যায়, গত ২ এপ্রিল আনুমানিক দুপুর ১২টায় কিছু বিএসএফ সদস্য এবং ভারতীয় জনসাধারণ একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে (৪০) ধাওয়া করলে উক্ত মহিলা ফেনী নদীর তীরে (ভারত পার্শ্বে) বাঁশঝাড়ের মধ্যে আশ্রয় নেয়। মহিলাটি বারবার ভারতের দিকে যাওয়ারে চেষ্টা করলে ভারতের জনসাধারণ এবং বিএসএফ সদস্যরা বাধা প্রদান করে এবং বারংবার মহিলাকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পু্শেইনের চেষ্টা করে। এদিকে বিএসএফ এবং ভারতীয় জনসাধারণের এমন অমানবিক কর্মকান্ডে বাংলাদেশ সীমান্তের লোকজনের মধ্যে দেখা দিয়েছে করোনা ভাইরাসের আতংক। সূত্রমতে জানা যায়, উক্ত মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা নিজ মুখে তার বাড়ী একবার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুম থানার দোলবাড়ি এলাকার সাবরুম থানার হরিণা এলাকার বাসিন্দা বলে জানায়। তাছাড়া উক্ত মহিলার কথাবার্তা, পোশাক-পরিচ্ছদে ভারতীয় সংস্কৃতির সাথে মিল রয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, বিএসএফ অতীতে অনেক পাগল ভবঘুরেকে জোর করে বাংলাদেশে পুশইনের চেষ্টা করেছে। বর্তমানে মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা ফেনী নদীর মাঝে (শূন্য লাইনে) অবস্থান করছে। তবে, বিজিবির রামগড় ব্যাটালিয়নের পক্ষ হতে এই নারীর পরিচয় শনাক্তে একাধিকবার মাইকিং ও পোষ্টারিং করা হলেও বাংলাদেশের কেউ উক্ত মহিলার ব্যাপারে এখনো পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি।
এই সব মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষগুলো থেকে করোনাসহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষজন। তাছাড়া এই লোকগুলো পাগলের বেশ ধরে তথ্য পাচারসহ বাংলাদেশের স্বার্থপন্থি কাজে জড়িয়ে পড়ছে কি না তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
ভিডিওঃ https://youtu.be/2FRvHNByP8s