কক্সবাজারের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অতর্কিত গুলি, প্রতিবাদ বিজিবির
 
নিউজ ডেস্ক
কক্সবাজার জেলার তুমব্রু সীমান্তের কাছাকাছি অতর্কিত গুলি চালিয়ে জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি), আর এ ঘটনার লিখিত প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি)
গত বৃহস্পতিবার (৪ জুন) বিকালে সীমান্তের শূন্যরেখায় গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে তুমব্রু কোনারপাড়া শূন্যরেখায় আশ্রিত রোহিঙ্গারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
তবে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে দেশটির অভ্যন্তরে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একটি যৌথ অভিযান পরিচালনার কথা বলা হলেও এ ঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
সূত্র মতে, তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় কোনারপাড়া এলাকার একটি খাল তুমব্রু খাল। হিসেবে পরিচিত। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার সময় আটকা পড়ে সেখানে এক হাজারের বেশি পরিবারের ৫ হাজারের মতো রোহিঙ্গারা বসবাস করে আসছেন। সেখান থেকে তারা যেন বাংলাদেশে ঢুকে পড়েন এ লক্ষ্যে মিয়ানমার বারবার গুলিবর্ষণ করে আসছিল। পাশাপাশি সীমান্তে কাঁটাতারের বেষ্টনীর পাশঘেঁষে মিয়ানমার সেনাবাহিনী একটি সড়ক নির্মাণ করেছে। এটি তুমব্রু থেকে বাইশ ফাঁড়ি পর্যন্ত চলে গেছে। এই সড়ক দিয়েই এখন প্রতিদিন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যানবাহন চলাচল করে থাকে। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে জিরো লাইনের কাছাকাছি মিয়ানমারে ব্যাপক গুলিবর্ষণ চলে। প্রায় ঘণ্টাখানেক গুলিবর্ষণের শব্দ পাওয়া গেছে। এতে রোহিঙ্গা শিবিরের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
তুমব্রু সীমান্তবর্তী বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গতকাল বিকালে নো-ম্যানস ল্যান্ডে গুলিবর্ষণের খবর পওয়া গেছে। তবে ঘটনাটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ঘটেছে।
কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ শুক্রবার (৫ জুন) বেলা ৩টায় এসব তথ্য জানান। এ ব্যাপারে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা বলেছে, দেশটির ৫শ’ গজ ভেতরে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিজিপি যৌথভাবে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একটি অভিযান চালিয়েছিল। সেই অভিযানের সময় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদলিপি পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে এবং সীমান্তে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
উল্লেখ্য, গত বছর বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল মিয়ানমার সফরে যান। ওই সময় দেশটি গত ১০ আগস্ট থেকে শূন্যরেখায় ত্রাণ বন্ধের প্রস্তাব দেয় এবং বলে সেখানে অবস্থানরতদের মাঝে দেশটির মানবিক সংস্থার মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করা হবে। বাংলাদেশ এই প্রস্তাব মেনে নিলেও শূন্যরেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গারা এতে আপত্তি জানায়। এর আগে বাংলাদেশের সঙ্গে এক বৈঠকে মিয়ানমার নিঃশর্তভাবে শূন্যরেখায় আটকে থাকা এই রোহিঙ্গাদের উত্তর রাখাইনে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছিল। কিন্তু সেই উদ্যোগও কার্যকর হয়নি।
