কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা চিকিৎসায় ১২০ শয্যার এসএআরআই আইটিসি চালু করেছে আইওএম - Southeast Asia Journal

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা চিকিৎসায় ১২০ শয্যার এসএআরআই আইটিসি চালু করেছে আইওএম

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য যথাযথ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্বলিত ১২০ শয্যার সিভিয়ার একিউট রেস্পিরেটরি ইনফেকশন (এসএআরআই-গুরুতর তীব্র শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ) আইসোলেশন অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টার (আইটিসি)-এর কার্যক্রম শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম। গত ১৭ আগষ্ট সোমবার দুপুরে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২০ (এক্সটেনশন) ক্যাম্পে নির্মিত এই স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোঃ মাহবুব আলম তালুকদার।

এসময় তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের মাঝে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে মানবিক কর্মসূচি পরিচালনা করেছি। সে কারণে সফলতাও পেয়েছি। স্বাস্থ্যসেবা খাতকে আমরা প্রথম অগ্রাধিকার দিয়েছি। প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার মাঝে করোনা আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে। এই কৃতিত্ব সবার।’ শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের মাঝে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে মানবিক কর্মসূচি পরিচালনা করেছি। খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা ছাড়া অন্যান্য তৎপরতাগুলো নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। মানুষের চলাচল ২০ শতাংশ এবং যানবাহন চলাচল ১০ শতাংশে নিয়ে আসা হয়েছিল। সে কারণে সফলতাও পেয়েছি।’

আইওএম বাংলাদেশ মিশনের উপ-প্রধান ম্যানুয়েল পেরেইরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) এর অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) মোঃ আতিকুর রহমান, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২০ ও ২০ এক্সটেনশন-এর ক্যাম্প ইনচার্জ মোঃ আবদুস সবুর, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নিকারুজ্জামান, উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডাঃ রঞ্জন বড়ুয়া এবং ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ-এর স্বাস্থ্য খাতের সমন্বয়ক ডাঃ মুকেশ কুমার প্রজাপতি।

উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত তিনটি এসএআরআই আইটিসির ২৩০টি শয্যার মাধ্যমে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কোভিড-১৯-এর সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে ভূমিকা রাখছে জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থাটি। বাংলাদেশে করোনা স্বাস্থ্য সংকটের শুরু থেকেই কক্সবাজারে মানবিক সহায়তা কাজে নিয়োজিত সংস্থাগুলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরকে আশ্রয় দেওয়া এই জেলাটিতে সম্ভাব্য মহামারী মোকাবেলায় সম্ভাব্য প্রস্তুতির জন্য কাজ করছে। এছাড়া এসএআরআই আইটিসিগুলোর পাশাপাশি আইওএম-এর মাইগ্রেশন হেলথ ডিভিশন এখন পর্যন্ত কক্সবাজারে আরো চারটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের পুনর্গঠন করেছে। কক্সবাজারের চকরিয়া এবং রামু উপজেলায় সরকারের পরিচালনাধীন আইসোলেশন সেন্টারগুলোতে সহায়তার জন্য আইওএম স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিভিল সার্জন অফিস এবং বিশ্ব ব্যাংকের সাথে সমন্বয় করে কাজ করছে।

কক্সবাজার জেলায় আইওএম-এর অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সহায়তা সমুহ:

• আইওএম কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ১০ জন মেডিকেল অফিসার, একজন রেডিওলজিস্ট, একজন রেডিওগ্রাফার, একজন স্যানিটেশন অফিসার এবং ১৫ জন ক্লিনার সহায়তা প্রদান করেছে এবং স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারীদের জন্য পিপিই সরবরাহ করেছে।

• আইওএম বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রামু এবং চকরিয়ায় এসএআরআই আইটিসি গুলোতে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো এবং অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন পরিষেবার মান উন্নয়নে সহায়তা করছে।

• উখিয়া ও টেকনাফসহ জেলার অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে বিভিন্ন সহায়তা সরবরাহ করা হচ্ছে।

• আইওএম কোভিড-১৯ রোগীদের এবং তাদের পরিবারদের সাথে সমন্বয় ও সঠিকভাবে পরিচালনা করতে অ্যাম্বুলেন্স প্রেরণ এবং রেফারেল ইউনিটের নেতৃত্ব দিচ্ছে। রেফারেলকৃত কোভিড-১৯ রোগী বহন করার জন্য সাতটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়োজিত করা হয়েছে।

• অপারেশনাল চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আইওএম ২৪-ঘন্টা হটলাইন এবং ইন্টারেক্টিভ ভয়েস রেসপন্স (আইভিআর) প্রযুক্তির মাধ্যমে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত গুজব এবং ভুল তথ্য প্রতিরোধ করে জীবন রক্ষাকারী তথ্য সরবরাহ করছে।