দেশের প্রতি যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে হবে- প্রধানমন্ত্রী - Southeast Asia Journal

দেশের প্রতি যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে হবে- প্রধানমন্ত্রী

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী দেশের মানুষের বিশ্বাস ও ভরসার প্রতীক। দেশের সংবিধান এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য এ বাহিনীকে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক যেকোনও ধরনের হুমকি মোকাবিলা করার জন্য সদা সতর্ক থাকতে হবে।’ এ বাহিনীর সব সদস্যকে পেশাদারিত্ব বজায় রেখে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।

আজ বুধবার (২৮ অক্টোবর) সকালে পটুয়াখালীর লেবুখালীতে শেখ হাসিনা সেনানিবাসে নবপ্র‌তি‌ষ্ঠিত তিনটি ব্রিগেড ও ৫টি ইউ‌নি‌টের পতাকা উ‌ত্তোলনে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে ‍এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে পটুয়াখালীর লেবুখালীতে শেখ হাসিনা সেনানিবাসে যুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে লেবুখালীতে বক্তব্য রাখেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই, বন্ধুত্ব চাই। বৈরিতা চাই না, যুদ্ধ চাই না। কোনও ধরনের সংঘাতে আমরা জড়িত হতে চাই না। কিন্তু যদি কখনও আক্রান্ত হই, সেটা মোকাবিলা করার মতো শক্তি যেন আমরা অর্জন করতে পারি, সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চাই এবং সেভাবে তৈরি থাকতে চাই।’ বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, ‘মানুষের আস্থা অর্জন করে আপনাদের এগিয়ে যেতে হবে। সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে দেশের জন্য কাজ করার লক্ষ্যে পেশাদারিত্বের কাঙ্ক্ষিত মান অর্জনের জন্য আপনাদের সবাইকে পেশাগতভাবে দক্ষ, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সৎ এবং মঙ্গলময় জীবনের অধিকারী হতে হবে। পবিত্র সংবিধান এবং দেশমাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক যেকোনও ধরনের হুমকি মোকাবিলা করার জন্য সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।’ করোনাকালীন দেশের মানুষের পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে দাঁড়ানোর জন্য সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে ধন্যবাদ জানান এবং পাশাপাশি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নেও সেনাবাহিনীর ভূমিকার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা এই দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সম্পূর্ণ বঞ্চিতই ছিলাম। কাজেই সেখানেই আমাদের একটা এখন ডিভিশন হলো।’ সুদূরপ্রসারী কর্মপরিকল্পনার আলোকে প্রাকৃতিক শোভাকে নষ্ট না করে পরিবেশবান্ধব সেনানিবাস গঠনের পরিকল্পনার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

সেনাবাহিনীর সব সদস্যকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের ভবিষ্যৎ আরও সাফল্যমণ্ডিত হোক, গৌরবান্বিত হোক। আপনাদের সবার সার্বিক কল্যাণ ও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। শীতকাল আসছে। হয়তো আবারও করোনার আরেকটা ধাক্কা আসতে পারে। তার জন্য আপনারা প্রস্তুত থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে করোনার থেকে মুক্ত থেকে আপনাদের স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করবেন। দেশ ও জাতির প্রতি আপনাদের দায়িত্ববোধ, কর্তব্যবোধ এবং দেশমাতৃকার প্রতি ভালোবাসা নিয়েই আপনারা আপনাদের স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করবেন। ইনশআল্লাহ, বাংলাদেশ জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা হিসাবে গড়ে উঠবে।’

অনুষ্ঠানস্থলে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্ব-স্ব ইউনিট পতাকা তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শেখ হা‌সিনা সেনানিবা‌সের জিও‌সি মেজর জেনা‌রেল আবুল কালাম মো. জিয়াউর রহমানসহ সেনাবা‌হিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। নতুন ব্রি‌গেডগু‌লো হ‌লো, সদর দফতর ৭ স্বতন্ত্র এ‌ডিএ ব্রি‌গেড, প্যারা কমা‌ন্ডো ব্রি‌গেড, সদর দফতর ২৮ পদা‌তিক ব্রি‌গেড। ইউ‌নিটগু‌লো হ‌লো ৪৯ ফিল্ড রে‌জি‌মেন্ট আ‌র্টিলারি, ১২ সিগন্যাল ব্যাটা‌লিয়ন, ৬৬ ইস্টবেঙ্গল, ৪৩ বীর এবং ৪০ এ‌সটি ব্যাটা‌লিয়ন।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সা‌লে ৮ ফেব্রুয়ারি সপ্তম পদা‌তিক ডি‌ভিশনের পতাকা উ‌ত্তোলন ক‌রে এই সেনা‌নিবা‌স উ‌দ্বোধন ক‌রেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৭ সা‌লের ১৪ ন‌ভেম্বর এক‌নে‌কে এই সেনা‌নিবা‌সের প্রকল্প অনু‌মোদন হয়। এর নির্মাণ ব্যয় ১ হাজার ৬৯৯ কো‌টি টাকা। এর আয়তন এক হাজার ৫৩২ একর। ব‌রিশাল ও পটুয়াখালীর সীমান্তবর্তী পায়রা নদীর তী‌রে এই সেনা‌নিবাস প্র‌তিষ্ঠিত। ফো‌র্সেস গোল ২০৩০-এর অংশ হি‌সে‌বে দ‌ক্ষিণাঞ্চ‌লের নিরাপত্তা নি‌শ্চিত কর‌তে ও সেনাবা‌হিনীর সক্ষমতা বৃ‌দ্ধি কর‌তে এই সেনা‌নিবাস প্র‌তি‌ষ্ঠিত হয়।