আট মাসের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ করোনা শনাক্ত

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৫৫৪ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫ লাখ ৭৭ হাজার ২৪১ জনে। দেশে আট মাসের মধ্যে এটাই একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের হার। এদিকে, একদিনে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৮ হাজার ৭৩৮ জন।

২৩ মার্চ বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অরিতিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনা বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে গতবছরের ১৬ জুলাই এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেদিন মোট ৩ হাজার ৭৩৩ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।

গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার বেড়ে ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ হয়েছে, যা ৫ ডিসেম্বরের পর সবচেয়ে বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৮৩৫ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫ লাখ ২৫ হাজার ৯৯৪ জন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে গতবছর ৮ মার্চ। সংক্রমণ শুরুর দিকে রোগী শনাক্তের হার কম ছিল। গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত রোগী শনাক্তের হার ২০ শতাংশের উপরে ছিল। এরপর থেকে শনাক্তের হার কমতে শুরু করে। মাস দুয়েক সংক্রমণ নিম্নমুখী থাকার পর গত নভেম্বরের শুরুর দিক থেকে আবার শনাক্তের হার ঊর্ধ্বমুখী হয়। ডিসেম্বর থেকে সংক্রমণ আবার কমতে শুরু করে। মার্চের শুরু থেকে তা আবার ঊর্ধ্বমুখি হয়েছে।

গত বছরের ৪ এপ্রিলের পর ৯ জানুয়ারি সর্বপ্রথম শনাক্তের হার ৫ শতাংশের ঘরে নামে। এরপর ১৭ জানুয়ারি তা ৪ শতাংশে নেমে আসে। তার পরের দুদিন সামান্য বেড়ে ৫ শতাংশ হয়। ২০ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত শনাক্তের হার থাকে চার শতাংশে। যদিও এর মাঝে একদিন এই হার ৩ শতাংশে নামে। এরপর ৩ ও ৫ ফেব্রুয়ারিতে শনাক্তের হার হয় যথাক্রমে ২.৯২ ও ২.৭৯ শতাংশ। ৬ ফেব্রুয়ারি সেই শনাক্তের হার হয় ২ দশমিক ৫১ শতাংশ। ১৪ ফেব্রুয়ারি শনাক্তের হার গত দশ মাসে সর্বনিম্ন ২ দশমিক ২৬ শতাংশে দাঁড়ায়। ৫ মার্চ এসে শনাক্তের হার বেড়ে আবার ৪ শতাংশের ঘরে ওঠে।

এরপরই ৯ তারিখ থেকে শনাক্তের হার ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। এরপর ১৪ মার্চ শনাক্তের হার দাঁড়ায় ৭.১৫। পরদিন শনাক্তের হার বেড়ে হয় ৯.৪৮। ১৬ তারিখে দাঁড়ায় ৮.২৯ শতাংশে। ১৮ মার্চ তা বেড়ে হয় ১০.৪৫। যা গত চার মাসে সর্বোচ্চ। দৈনিক শনাক্তের হার সর্বশেষ এর চেয়ে বেশি ছিল গতবছরের ২৭ ডিসেম্বর। সেদিন পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ছিল ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। গতকাল শনাক্তের হার ছিল ১১.১৯ শতাংশ। আজ বেড়ে শনাক্তের হার হয়েছে ১৩.৬৯ শতাংশ।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গতবছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু। এবং গত বছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।

প্রথম রোগী শনাক্তের তিন মাস পর ১৮ জুন তা ১ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এক মাস পর ১৮ জুলাই শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ২ লাখে। এর পরের এক লাখ রোগী শনাক্ত হয় এক মাস নয় দিনে, ২৬ অগাস্ট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়ায় ৩ লাখ। ৪ লাখ ছাড়িয়ে যায় এর দুই মাস পর, ২৬ অক্টোবর। তা পাঁচ লাখে পৌঁছাতে সময় লাগে ৫৫ দিন। ২০ ডিসেম্বর শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫ লাখ ৭১৩ জনে।

গত ২৭ জানুয়ারি দেশে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের একজন নার্সকে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার মধ্য দিয়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। পরদিন ঢাকার পাঁচ হাসপাতাল থেকে টিকা দেয়া হয় ৫০০ জনকে। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।