অবরোধে ইউপিডিএফ কর্তৃক পুড়িয়ে দেয়া মোটরসাইকেল চালককে বিজিবির মানবিক সহায়তা
নিউজ ডেস্ক
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালায় প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন পাহাড়ের আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফের এক সশস্ত্র সন্ত্রাসীর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর অজুহাতে জেলা জুড়ে আধাবেলা অবরোধের ডাক দেয় ইউপিডিএফ।
গত ২১ মার্চ সোমবার অবরোধের নামে জেলা জুড়ে নাশকতা চালায় সংগঠনটি। এদিন জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার তবলছড়িতে একই ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকার এক বাঙালী মোটরসাইকেল চালকেকে বেধড়ক মারধর করে তার পরিবারের উপার্জনের একমাত্র সম্বল মোটরসাইকেলটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। এসময় উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে পরিবারটি।
সূত্র জানায়, ইউপিডিএফের ডাকা আধাবেলা হরতালের সমর্থনে পিকেটিং এর সময় ইসলামপুর এলাকায় সন্ত্রাসীরা ধাওয়া করে বাড়ির নিচে থেকে চালক সাইফুল ইসলামের মোটরসাইকেলটি পাহাড়ী পাড়ার পাশে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে বাইকের সাথে পুড়ে ছাই হয়ে যায় একটি পরিবারের আয়ের একমাত্র মাধ্যমটি। জ্বলন্ত মোটরসাইকেলের পাশে মাটিতে লুটিয়ে কান্না করা সাইফুলের মায়ের কান্নায় চারিদিকের আকাশ ভারী হয়ে আসছিলো, অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য চোখ এড়ায়নি ২৩ বিজিবির জামিনীপাড়া জোন অধিনায়কের। দূর্ঘটনার খবর পেয়ে সাথে সাথে ছুটে যান ইসলামপুরের পার্শ্ববর্তী লাইফুপাড়ার ঘটনাস্থলে। উপস্থিত উত্তেজিত জনতাকে শান্ত রাখার চেস্টা করেন এবং সফল হন। একইসাথে ক্ষতিগ্রস্ত সাইফুল ও তার মাকে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
পরবর্তীতে পরিবারটির আগামী দিনের কথা চিন্তা করে উপজেলার যামিনী পাড়া জোন (২৩ বিজিবি) কর্তৃক উক্ত পরিবারের হাতে একটি নতুন মোটরসাইকেল তুলে দেবার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬শে মার্চ শনিবার সকালে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের প্রাক্কালে বিজিবির পক্ষ হতে অবরোধে ক্ষতিগ্রস্ত মোটরসাইকেল চালক সাইফুল ইসলামের হাতে একটি নতুন মোটরসাইকেল তুলে দেন যামিনী পাড়া জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল এ বি এম জাহেদুল করিম।
এসময় জোন উপ-অধিনায়ক মেজর মোঃ সোহেল আহমেদ, তবলছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ভুঁইয়া, ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ শফিকুর রহমানসহ সামরিক পদস্থ কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
জোন অধিনায়ক বলেন, সন্ত্রাসীরা হাতেগোনা কয়েকজন, আর আপনাদের সংখ্যা অনেক বেশি। ভয় পাবেন না, সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে হবে। সাধারণ নিরীহ উপজাতিদেরকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে গুটিকয়েক স্বার্থপর লোক পার্বত্য এলাকা থেকে বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা চাঁদাবাজি করছে। তাদের উদ্দেশ্য অসৎ, এইসব সন্ত্রাসীদেরকে কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবেনা।