ভারতে মেইতি নারীদের সড়ক অবরোধ, মণিপুরে নতুন সড়ক চালু
![]()
নিউজ ডেস্ক
উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর রাজ্যে পণ্য পরিবহনের জন্য নতুন একটি সড়ক গতকাল সোমবার থেকে চালু করা হয়েছে।
গত ২৮ আগস্ট এক বিবৃতিতে মণিপুর সরকার জানিয়েছে, ইম্ফল-ডিমাপুর (নাগাল্যান্ড) থেকে সরবরাহের রাস্তা অবরুদ্ধ হওয়ায় দক্ষিণ মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর জেলায় প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করতে বিকল্প একটি রুট (সড়ক) চালু হয়েছে। এই সড়ক (দক্ষিণ আসামের) শিলচর ও আইজল (মিজোরাম) হয়ে মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর জেলায় প্রবেশ করেছে।
উপজাতীয় কুকি–জো সম্প্রদায়–অধ্যুষিত চূড়াচাঁদপুর জেলায় সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছিল। কারণ, অনুপজাত মেইতেই সমাজের নারীদের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী মেইরা পাইবি অনির্দিষ্টকালের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। পরিবহন ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তার কারণে রাজধানী ইম্ফল থেকে চূড়াচাঁদপুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে যেতে অস্বীকার করেছেন।
স্থলবেষ্টিত চূড়াচাঁদপুরে পণ্য পরিবহনে একটি নির্দিষ্ট সড়ক ব্যবহার করা হতো। এই সড়ক উত্তর আসাম থেকে দক্ষিণে নাগাল্যান্ডের রাজধানী ডিমাপুর হয়ে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল এবং সেখান থেকে চূড়াচাঁদপুর। মেইরা পাইবি বেশ কয়েক মাস ধরে পণ্য পরিবহনে বাধা সৃষ্টি করছে। তারা নিরাপত্তা বাহিনীকেও বিভিন্ন জায়গায় আটকানোর চেষ্টা করছে।
ফলে চূড়াচাঁদপুরে একদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অবিশ্বাস্য বেড়ে গেছে। অন্যদিকে বিভিন্ন মৌলিক পরিষেবা, যেমন স্বাস্থ্যসেবা সাধারণ মানুষকে দেওয়া যাচ্ছে না।
এই ঘটনার প্রতিবাদে ২১ আগস্ট থেকে মধ্য-উত্তর জেলা কাংপোকপিতে ডিমাপুর-ইম্ফল ২ নম্বর জাতীয় মহাসড়ক আবার অবরোধ করে একটি কুকি সংগঠন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, এই মহাসড়ক অবরোধ করে মেইতেই-অধ্যুষিত উপত্যকা অঞ্চলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ব্যাহত করা। অর্থাৎ দুই তরফেই নতুন করে সংঘাতের বাতাবরণ সৃষ্টি হচ্ছিল।
মণিপুরে সহিংসতায় কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা নিয়ে ভারতীয় যুব কংগ্রেস ‘সংসদ ঘেরাও’ কর্মসূচি পালন করে। ৮ আগস্ট
এই অবস্থায় মণিপুর সরকার নাগাল্যান্ডের পরিবর্তে দক্ষিণ আসাম ও মিজোরামের মধ্য দিয়ে পণ্য সরবরাহ শুরুর ফলে সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যাতে বেশি দামে ব্যবসায়ীরা বিক্রি করতে না পারেন, সেই লক্ষ্যে সরকারি কর্মচারীরা বাজার পরিদর্শন করছেন। কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মণিপুরে গত ৩ মে কুকি-জো ও মেইতেইদের মধ্যে জাতিগত সহিংসতা শুরু হয়। সহিংসতায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ মানুষ নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ।