একসময় প্রধানমন্ত্রী আদিবাসী দিবসের বাণী দিয়েছেন কিন্তু এর বাস্তবায়নের কথা আসার পর উনি পিছিয়ে গেছেন- মেনন - Southeast Asia Journal

একসময় প্রধানমন্ত্রী আদিবাসী দিবসের বাণী দিয়েছেন কিন্তু এর বাস্তবায়নের কথা আসার পর উনি পিছিয়ে গেছেন- মেনন

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্কঃ

আদিবাসীদের সংসদীয় ককাসের প্রতিষ্ঠাতা ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘আদিবাসী দিবসের রজত জয়ন্তীতে আমরা আছি। কিন্তু ওভাবে আমরা আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন করতে পারছিনা। আমরা এ আন্দোলন যাদের নিয়ে শুরু করেছিলাম এখন তারা অনেকেই এর বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে। একসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আদিবাসী দিবসের বাণী দিয়েছেন, খালেদা জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন তিনিও বাণী দিয়েছেন আদিবাসী দিবস বলে। কিন্তু যখন এর বাস্তবায়নের কথা এসেছে তখনই তারা পিছিয়ে গেছেন’।

রোববার (৪ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আদিবাসী সংসদ ককাস আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘পার্বত্য শান্তিচুক্তি হয়েছে। এর পুরো বাস্তাবায়ন হয়নি কিন্তু এরপরও আমাদের অনেক অর্জন আছে। এই যে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী হিসেবে যেটা হয়েছে সেটা একধরণের স্বীকৃতি’। ‘২০১০ সালে জাতীয় শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে আদিবাসীদের প্রাথমিক শিক্ষা তার ভাষায় হবে। কিন্তু এই যে সাঁওতাল ভাষা কোন হরফে করা হবে এ নিয়ে যে ঝগড়া এটার জন্য আজ পর্য্ন্ত অনেককিছুর মীমাংসা করতে পারিনি। ৫টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য প্রাথমিক স্তরে শিক্ষাগ্রহণ ও পাঠ্যপূস্তক প্রনয়ণ করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের এখন আদিবাসী শিক্ষক দরকার। এর ব্যবস্থা করতে হবে’।

অনুষ্ঠানে ককাসের আহ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, ‌‌’আদিবাসীদের স্বীকৃতি না দেয়া আমাদের সংবিধানের কলঙ্ক। পার্বত্য অঞ্চলে শান্তির জন্য যে চুক্তি হয়েছে সেটিও বাস্তবায়নে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে, হচ্ছে। নেটিভ আমেরিকানদের হত্যা করার জন্য আমেরিকানরা তাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। পাকিস্তানীদের আমরা মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে ক্ষমা চাইতে বলছি। বাংলাদেশের সরকারকেও আদিবাসীদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। কারণ আমরা বাঙালি হয়ে পাহাড়িদের অত্যাচার করি, তাদের হত্যা করি’। ‘সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রনালয় ও পাহাড়ি আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রনালয় করতে হবে। জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন করতে হবে। আদিবাসীদের স্বীকৃতির জন্য বিশ্বের সব আদিবাসীদের নিয়ে আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে’।

আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং অনুষ্ঠানে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে আদিবাসীদের ভূমি সমস্যা: উত্তরণের পথ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জান্নাত-এ ফেরদৌসী।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান র. আ. ম ওবায়দুল মুক্তাদির এমপি, একেএম ফজলুল হক এমপি, লুৎফুন্নেসা খান এমপি, নমিতা চাকমা, কাজল দেবনাথ, নারায়ন চন্দ্র রাজবংশী প্রমুখ।

এদিকে বাংলাদেশের সংবিধানে বাংলাদেশে আদিবাসী না থাকার বিষয়টি স্পষ্ট ও সরকারের পক্ষ হতে চিঠি দিয়ে আদিবাসী শব্দের ব্যবহার না করার অনুরোধ ও প্রজ্ঞাপন জারি করা স্বত্ত্বেও আদিবাসীদের সংসদীয় ককাসের আয়োজনে উক্ত সভা করে দেশে বসবাসকারী ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোকজনকে জোর করে আদিবাসী করার ষড়যন্ত্রের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিঃ আব্দুল মজিদ বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ৩০ হাজার বাঙ্গালীর খুনি সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসার সন্ত্রাসীবাহিনী কর্তৃক পাহাড়ে নিরীহ জনগনের রক্তচুষে চাঁদাবাজির একটা অংশ পান বলেই রাশেদ খান মেনন আর শাহরিয়ার কবিররা আদিবাসীর মতো একটা স্পর্শকাতর শব্দ বারবার ব্যবহার করে পাহাড়কে অস্থিতিশীল করতে চাইছে। এসময় এসব সন্ত্রাসীদের দোসর ও সুশীল নামধারী নব্য সন্ত্রাসীদের দেশবিরোধী যেকোন কর্মকান্ড প্রতিহত করার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।