রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট, ব্যাপক তল্লাশি
নিউজ ডেস্ক
মধ্যরাতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। এ সময় তাদের মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও কাভার্ড ভ্যানসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন থামিয়ে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে দেখা গেছে। এছাড়াও গাড়ির ভেতর অবৈধ কোনও কিছু আছে কিনা সেটাও তল্লাশি করতে দেখা গেছে।
সোমবার (৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোহাম্মদপুর তিন রাস্তা থেকে অভিযান শুরু হয়। অভিযানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে থানা পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ ছিল। নেতৃত্ব দেন সেনাবাহিনীর অস্থায়ী মোহাম্মদপুর ক্যাম্প কমান্ডার ও ২৩ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর নিয়ামুল।
অভিযানের বিষয়ে তিনি বলেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও জনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে আমরা যৌথ অভিযান পরিচালনা করছি। অভিযানে মূলত ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তায় পাশাপাশি জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছি, যাতে মানুষের মধ্যে ভীতি দূর হয়। এছাড়াও মোহাম্মদপুরে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ অপরাধ তৎপরতা ঠেকাতেও সেনাবাহিনী কাজ করছে। অস্ত্র উদ্ধারসহ অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে যৌথ অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা।
সরেজমিন দেখা যায়, রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার ময়ুর ভিলার সামনে চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়ি তল্লাশি করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর কয়েকটি টিমে ভাগ হয়ে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও অন্যান্য যানবাহনগুলোকে আলাদা আলাদাভাবে চেক করছে। গাড়ির কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় ২০টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।
মতিঝিল থেকে মোহাম্মদপুর পরিবার নিয়ে এসেছিলেন মো. কাকন হোসেন নামে এক চাকরিজীবী। তিনি বলেন, আমাদের হেলমেট আছে। ড্রাইভিং লাইসেন্সও আছে। তবে গাড়ির কাগজপত্র সঙ্গে নেই। তাই এক ঘণ্টা পরে ছাড়বে বলেছে।
মধ্য রাতে রাস্তায় সেনাবাহিনীর অভিযান দেখে খুশি স্থানীয় ও পথচারীরা। অভিযান ঘিরে উৎসুক সাধারণ মানুষ জানান, এ ধরনের অভিযান সব সময় হোক। তাহলে অপরাধ কমে আসবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা যত বাড়বে, মানুষ তত শান্তিতে থাকতে পারবে।
আল-আমিন নামে মোহাম্মদপুরের এক বাসিন্দা বলেন, মোহাম্মদপুর এলাকায় যেভাবে চুরি-ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটছে, তাতে করে এভাবে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযান চলমান থাকলে অপরাধ কমবে।
রাত সোয়া ১টার দিকে শ্যামলী শিশু মেলার সামনেও সেনাবাহিনী চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান চালাতে দেখা গেছে। এ অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেনাবাহিনীর অস্থায়ী শেরে বাংলা ক্যাম্প কমান্ডার ও ২৩ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট মেজর কাজী সাদির আসাফ। এ অভিযানেও থানা পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের দেখা গেছে।
ডিএমপির মোহাম্মদপুর ট্রাফিক বিভাগের শ্যামলী জোনের ট্রাফিক সার্জেন্ট তোছাদ্দেক বলেন, সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানের অংশ হিসাবে আমরা সঙ্গে এসেছি। তারা গাড়ি থামিয়ে অবৈধ কোনও কিছু আছে কিনা এসব বিষয়ে তল্লাশি করছে। পাশাপাশি যেসব যানবাহন কাগজপত্র, চালকের লাইসেন্স কিংবা ট্রাফিক আইনের কোনও ক্রুটি রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ সময় অনেক যানবাহনকে জরিমানা করতে দেখা গেছে। হেলমেট না থাকার কারণে জরিমানা খাওয়া মিজানুর রহমান নামে এক মোটরসাইকেলচালক বলেন, এক বন্ধুকে নিয়ে মিরপুরে একটা কাজে গিয়েছিলাম। রাত থাকায় আরেকটা হেলমেট নিয়ে বের হইনি, তাই মামলা খেতে হয়েছে। এ ধরনের অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, সচরাচর রাতে সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশের অভিযানে পড়তে হয়নি। তবে রাতেই অপরাধ প্রবণতা বেশি হয়। তাই রাতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় এমন অভিযান অব্যাহত থাকলে অপরাধ অনেকটা কমে আসবে। সেনাবাহিনীর অভিযান সব সময় থাকা উচিত।
এছাড়া রাজধানীর সায়েন্সল্যাব ও হাজারীবাগ এলাকায়ও সেনাবাহিনী চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযোগ চালাচ্ছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত ২টার দিকে সায়েন্সল্যাব এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতে দেখা গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনীর অভিযান সমন্বয় করছেন সেনাবাহিনীর ৪৫ স্বতন্ত্র ফিল্ড কোম্পানি ইঞ্জিনিয়ার্স মেজর রাফি হাসান। তিনি বলেন, ‘রাজধানীর বেশ কয়েকটি পয়েন্ট আমাদের অভিযান চলমান আছে।’
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।