আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মতি না থাকায় ফের থমকে গেল রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ!
![]()
নিউজ ডেস্ক
কক্সবাজারে বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয় নেওয়া এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য সরকার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করলেও শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মতি না থাকায় রোহিঙ্গাদের সেখানে নেওয়ার উদ্যোগ থমকে গেল। তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করার চেষ্টা অব্যাহত রাখবে। কিছুদিন আগেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবার শীতের আগেই রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর শুরু করার সরকারী উদ্যোগের কথা তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এক লাখ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরের জন্য ভাসানচর পুরোপুরি প্রস্তুত। এর আগে গত বর্ষা মৌসুমের আগেই সরকার রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে শুরু করতে চেয়েছিল, সেটা তখনও সম্ভব হয়নি।
রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, স্থানান্তরের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মতি মিলছে না। কিছু পরিবার স্বেচ্ছায় যেতে চেয়েছিল, সে ব্যাপারে সরকারও প্রস্তুতি নিয়েছিলো। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে জাতিসংঘ এবং ইউএনএইচসিআরসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় কয়েক দফা বৈঠকের পরও জাতিসংঘ, ইউএনএইচসিআর এবং আইএমও-সহ অন্যান্য সংস্থাগুলো এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের সেখান যাওয়ার পক্ষে মতামত দেয়নি। যার কারণে সরকার এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। সংশ্লিষ্টরা আরো জানান, রোহিঙ্গাদের ৬৪০টি পরিবারের সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য স্বেচ্ছায় তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন, এরপর তাদের ভাসানচরে নেওয়ার জন্যই বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে বৈঠক করে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সম্মতি দেয়নি। তবে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, এই স্থানান্তর স্বেচ্ছায় হতে হবে। সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার পর তা করতে হবে। সেজন্য তারা বাংলাদেশ সরকারকে আরো সময় নেওয়ার কথা বলছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫শে আগষ্ট নিজ দেশের সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতিত হয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করতে চাইলে সেসময় বাংলাদেশ সরকার তাদের বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি প্রদান করে। এরপর থেকে দফায় দফায় আলোচনার পর দুই দফায় রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। এছাড়া যেহেতু, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে দীর্ঘমেয়াদী সময় লাগতে পারে সেহেতু তাদের মধ্যে এক লাখ লোককে ভাসানচরে স্থানান্তর করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এমনকি ভাসানচরে সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ঘর-বাড়িও ইতিমধ্যে নির্মান করেছে সরকার।