সেনাবাহিনীর মানবিক হস্তক্ষেপে আশ্রয় পেলেন অবহেলিত ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধা মা
 
                 
নিউজ ডেস্ক
বগুড়ার বড়কুমিরা হিন্দুপাড়া এলাকায় ৯০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা মা’কে অবহেলার শিকার অবস্থায় রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল মানবিক হস্তক্ষেপে এগিয়ে আসে।
সদর সেনা ক্যাম্প থেকে লেফটেন্যান্ট ফাহাদের নেতৃত্বে পাঠানো টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখতে পান, বিমলা রানী নামের এই বৃদ্ধা বাড়ির বাইরে অবস্থান করছেন। স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, তাঁর তিন পুত্র ও পুত্রবধূরা তাঁকে ঘরে আশ্রয় না দিয়ে বাড়ির বাইরে রেখেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন বছর আগে বিমলা রানীর স্বামী হরিপদ সরকার মারা যাওয়ার পর থেকেই তিন ছেলে—অষ্ট সরকার, লব সরকার ও শিপন সরকারের ওপর তাঁর দেখভালের দায়িত্ব পড়ে। কিন্তু দায়িত্ব পালনের বদলে তারা যেন জন্মদাত্রী মাকে বোঝা ভেবে দূরে সরিয়ে দেয়।
প্রতিদিন সকাল হলে তাঁরা বৃদ্ধা মাকে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে রেখে আসেন, যেন সারাদিনের ঝামেলা এড়ানো যায়। কোনো খাবার না দিয়ে তাঁকে ফেলে রেখে আসে তপ্ত রোদের নিচে। সোমবার রাতে মেজো ছেলে লব সরকার তাঁকে আবারো বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এরপর মঙ্গলবার দিনভর কাঠফাটা রোদে বিনা পানিতে, বিনা খাদ্যে রাস্তায় পড়ে ছিলেন ৯০ বছরের বিমলা রানী।
এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখে সেনা কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে বৃদ্ধার সন্তানদের ডেকে আনেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে কড়া ভাষায় সতর্ক করেন। একইসঙ্গে তিনি পরিবারের সদস্যদের মানবিক দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেন এবং ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা আর না ঘটে সে বিষয়ে হুঁশিয়ারি দেন।
পরে সেনা কর্মকর্তা বিমলা রানীর জন্য পুনরায় ঘরে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন এবং তাঁর হাতে কিছু শুকনো খাবারও তুলে দেন।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সদর সেনা ক্যাম্প থেকে নিয়মিতভাবে বৃদ্ধার খোঁজখবর নেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে পুনর্বাসন ও সামাজিক সুরক্ষার দিকটি বিবেচনায় নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা সেনাবাহিনীর এই মানবিক ভূমিকাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এই ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, সমাজে এখনো এমন সন্তান রয়েছে যারা মায়ের মর্যাদা ভুলে যায়—আর এমন প্রতিষ্ঠানও আছে যারা সঠিক সময়ে দায়িত্ব নেয়।”
সেনাবাহিনীর এই কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে, তারা শুধু নিরাপত্তা নয়, সমাজের প্রতিও এক নিবেদিত মানবিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
