মিয়ানমার সামরিক বাহিনী ও তাদের নিয়ন্ত্রিত কোম্পানীগুলোর ওপর দ্রুত নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জাতিসংঘ - Southeast Asia Journal

মিয়ানমার সামরিক বাহিনী ও তাদের নিয়ন্ত্রিত কোম্পানীগুলোর ওপর দ্রুত নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জাতিসংঘ

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

মিয়ানমারের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত রাখাইন রাজ্যে ২০১৭ সালে সেনাবাহিনীর একটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার রেশ ধরে সেদেশের সেনাবাহিনী কর্তৃক ব্যাপক নির্যাতন, রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ ও গনহত্যার ঘটনায় সরকারিভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ, ব্যাংকিং কার্যক্রম, পর্যটন, পরিবহন, উৎপাদন ও টেলিযোগাযোগ, পারিবারিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের মাধ্যমে ব্যক্তিগত কোম্পানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওপর ও তাদের নিয়ন্ত্রিত কোম্পানীগুলোর ওপর দ্রুত সমেয়র মধ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার ইয়াংঘি লি।

২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক গনমাধ্যম আলজাজিরায় লেখা এক বিশেষ নিবন্ধে নিষেধাজ্ঞার এ আহ্বান জানিয়ে ইয়াংঘি লি বলেন, বসে থাকার সময় আর নেই, সেনাবাহিনীর সরাসরি নিয়ন্ত্রিত ‘মিয়ানমার ইকোনমিক হোল্ডিংস লিমিটেড (এমইএইচএল) ও মিয়ানমার ইকোনমিক কো-অপারেশনের (এমইসি) ওপরদ্রুত নিষেধাজ্ঞা দেয়া জরুরী হয়ে পড়েছে যাতে তারা কোনো বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে না পারে। তার মতে, বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসার ফলে মিয়ানমার সেনাবাহিনী আরও বেশী শক্তিশালী হচ্ছে এবং অর্জিত শক্তি রোহিঙ্গা গণহত্যার মতো কাজে লাগাচ্ছে তারা।

আলজাজিরাকে ইয়াংঘি লি বলেছেন, দীর্ঘ ছয় দশকের সেনাশাসনের পর মিয়ানমারে ২০১৫ সালে সাধারণ নির্বাচন হয়। এর মধ্য দিয়ে সরকার গঠনের সুযোগ পায় দেশটির নেত্রী অং সান সু চির ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। সেনাশাসন থেকে গণতান্ত্রিক শাসনে ফেরার প্রতিশ্রুতিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের মাধ্যমে সু চির সরকারকে সমর্থন প্রদান করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। কিন্তু সু চির নেতৃত্বে গণতন্ত্র আসেনি, বরং সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাখাইনের রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালায় সেনাবাহিনী।

তিনি মনে করেন, আগামী ২০২০ সালে মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান পরিস্থিতিতে গণতন্ত্রে ফেরার আশা আরও সংকুচিত হয়েছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যায় সেনাবাহিনী প্রধান মিং অন হ্লাইংসহ সিনিয়র সেনা কর্মকর্তারা এখন মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধের মুখে। যুদ্ধাপরাধ তদন্তের অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)’র দেয়া নিষেধাজ্ঞা যথেষ্ট নয় দাবি করে জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, দেশে ও বিদেশে বহু ব্যবসা রয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এবং সেগুলো অব্যাহত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট নিরাপত্তাচৌকিতে সন্ত্রাসীদের হামলার অজুহাত দেখিয়ে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চরম নৃশংসতা শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেসময় সীমান্ত পেরিয়ে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। এর পূর্বেও বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১২ লাখ।