উপজাতি সন্ত্রাসীদের তান্ডবে অস্থির পার্বত্য চট্টগ্রাম- পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ
 
                 
নিউজ ডেস্ক
পাহাড়ে অস্ত্রধারী উপজাতি সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি, অপহরণ ও নির্যাতনের কারণে চাষাবাদ বন্ধকরে অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছেন সেখানকার চাষি ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। সেখানে বাঙালীদের গড়া বিভিন্ন সংগঠন সন্ত্রাসীদের এসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে বিক্ষপ্তভাবে প্রতিবাদ জানালেও এতে কর্নপাত করেনি দেশী ও আন্তজাতিক কোনো মহল। উল্টো পাহাড় থেকে বাঙালী বিতাড়নের নামে উপজাতি অস্ত্রধারীদের সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুনের রাজত্বেও পক্ষে ছাপাই গেয়ে চলেছে সুশীল সমাজের ব্যানারে বিশেষ একটি মহল। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে একজোট হয়ে কাজ করার প্রত্যয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে “পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ” নামে নবগঠিত একটি সংগঠণ।

৭ ডিসেম্বর শনিবার বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন শেষে এমন পরিস্থিতির কথা সাংবাদিকদের জানান বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বান্দরবান জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য কাজী মজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের চাঁদা দেয়া ছাড়া নিস্তার মিলেনা ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া সেখানকার অধিবাসিদের। তাই বিভিন্ন সময় বাঙালীদের নিয়ে এককভাবে গড়া সকল সংগঠণ বিলুপ্তির করা হয়েছে। উপজাতি ও বাঙালী অধিকার আদায়ে গঠন করা হয়েছে নতুন সংগঠন “পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ।
এরআগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য “পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ’র” আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল মামুন ভুইয়া।

তিনি বলেন, পাহাড়ি বাঙালি ভেদাভেদ ভুলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত নিপীড়িত ও বঞ্চিত সব মানুষের স্বার্থ রক্ষার জন্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ নামে নতুন এই সংগঠনের আত্মপ্রকাশ। এখন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলনরত পার্বত্য বাঙ্গালি ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদসহ অন্যান্য সংগঠনের কার্যক্রম বিলুপ্ত করা হল।
সেই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র-নৃ- গোষ্ঠি তথা উপজাতি ও বাঙালী সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে সাথে নিয়ে এক ও অভিন্ন লক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ কাজ করবে। এই সংগঠনের অঙ্গ সংগঠন হিসেবে কাজ করবে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা পরিষদ।
পার্বত্য চট্টগ্রামকে দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশবাসীকে আমরা দৃঢ়তার সাথে জানাতে চাই, সম্ভাবনাময় পার্বত্য চট্টগ্রামকে দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের তাড়া করে ফিরছে। এই ষড়যন্ত্র হয়তো অনেক আগেই বাস্তবায়িত হয়ে যেতো, যদি না পার্বত্য চট্টগ্রামে আমাদের দেশ প্রেমিক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যগণ সার্বক্ষণিকভাবে দায়িত্ব পালন না করতো। কিন্তু সেই দেশ প্রেমিক নিরাপত্তা বাহিনীর নামেও ষড়যন্ত্রকারীরা নানা অপবাদ এবং মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে সর্বদা তৎপর রয়েছে। তাদের অপপ্রচারের কারণেই পাহাড়ে বেশ কিছু অঞ্চল থেকে সেনা ক্যাম্প গুটিয়ে নেয়ার ফলে সেসব এলাকার মানুষ এখন আর রাতে ঘুমাতে পারেনা।
প্রতিনিয়তই সবুজ পাহাড়ে রক্ত ঝরছে, কখনো বাঙালিদের আবার কখনো বা উপজাতিদের। খুনের পাশাপাশি পাহাড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন শিল্প ও কৃষিখাত স্থবির হয়ে রয়েছে চাঁদাবাজীর যাতাকলে। একই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি ও উপজাতিদের মধ্যে সহিংসতা ও সংঘাত তৈরি এবং উপজাতিদের বিপন্নতা ধুয়াতুলে আন্তর্জাতিক মহলের সহানুভূতি নিয়ে বাংলাদেশের স্পর্শকাতর জাতীয় ইস্যুতে বিদেশী শক্তিকে জড়ানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এরই পাশাপাশি স্বার্থান্বেষী মহল উপজাতি জনগোষ্ঠীকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান এবং দুস্কৃতিকারীদের দীর্ঘদিনের স্বপ্নের স্বাধীন ‘জুম্মল্যান্ড’ তৈরির প্রক্রিয়া তরান্বিত করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে এসব ষড়যন্ত্র অনন্তকাল চলতে দেয়া যায় না। একই সাথে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোকে সংখ্যাগরিষ্ঠ পাহাড়িদের হাতে বলির পাঠা হতে দেয়া সম্ভভ নয়। যার কারণে পাহাড়ি-উপজাতি ভেদাভেদ ভুলে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে “পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের” ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল আলম, বাঘাইছড়ি পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. আলমগীর কবির, দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম, অধ্যক্ষ আবু তাহের, এসএম মাসুম রানা, আব্দুল হামিদ রানা, মো. আবুল কাইয়ুম, বান্দরবান সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন, এ্যাডভোকেট পারভেজ তালুকদার, মো. রেজাউল করিম, মো. আরিফ বিল্লাহ, মো, আব্দুল মজিদ, মো. সোলায়মান, মো, মনিরুজ্জামান মনির, মো. শেখ আহমেদ রাজু, মো. আনিছুজ্জামান ডালিম, মানিকছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাঈন উদ্দিন, মো. সাব্বির আহমেদ, মো. আসাদ উল্লাহ, লোকমান হোসেন, সালমা আহমেদ মৌ, মো. শাহাদাত হোসেন, মো. হাবিবুর রহমান, মিজানুর রহমান, মো. আবু বকর সিদ্দিক, মো. শাহজাহান আলম, মো. আতাউর রহমান, আফসার উদ্দিন ও আলম খানসহ আরও অনেকে।
উল্লেখ্য, গত ৫ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই সংগঠনটি আত্ম প্রকাশ করে।
