বেলুচিস্তানের ১৭ জায়গায় একযোগে সশস্ত্র হামলা, সন্দেহের তীর ভারতের দিকে

বেলুচিস্তানের ১৭ জায়গায় একযোগে সশস্ত্র হামলা, সন্দেহের তীর ভারতের দিকে

বেলুচিস্তানের ১৭ জায়গায় একযোগে সশস্ত্র হামলা, সন্দেহের তীর ভারতের দিকে
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

গত মঙ্গলবার রাতে বেলুচিস্তানের পাঞ্জগুর, সুরাব, কেচ এবং খারান এলাকার কমপক্ষে ১৭টি জায়গায় একযোগে হামলা চালানো হয়। হামলার কারণে একাধিক সরকারি ভবন এবং সেনা চেকপোস্ট ধ্বংস হয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এবং ইকোনমিক টাইমসের বরাতে জানানো হয়েছে।

এদিকে এই হামলাকে গত কয়েক বছরের মধ্যে বেলুচিস্তানের প্রাদেশিক সরকারের উপর হওয়া সবচেয়ে ব্যাপক এবং সংঘটিত আক্রমণের মধ্যে অন্যতম বলে মনে করা হচ্ছে। ওই হামলার দায় ইতোমধ্যেই স্বীকার করেছে ‘বেলুচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্ট’ বা বিএলএফ নামের বিদ্রোহী গোষ্ঠী।

বিএলএফ সাধারণত আফগানিস্তান-ভিত্তিক সশস্ত্র স্বাধীনতাপন্থী বালোচ গোষ্ঠী। সশস্ত্র গোষ্ঠীটির অভিযোগ, দিনের পর দিন বেলুচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করছে পাকিস্তান। জনগণের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আর সেই দাবিতেই বেলুচিস্তানের প্রাদেশিক সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

এর মধ্যেই মঙ্গলবার রাত থেকে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে নতুন করে লড়াই শুরু করেছে বিএলএফ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের দশকব্যাপী লড়াইয়ে নতুন অধ্যায় শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, নতুন সেই অভিযানের নাম ‘অপারেশন বাম’ (স্থানীয় ভাষায় এর অর্থ ভোর)।

এছাড়াও আরও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় হামলা চালায় বিএলএফ বিদ্রোহীরা। পাকিস্তানি সরকার এখনও ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ হিসাব দিতে না পারলেও স্থানীয় সূত্রে খবর, ক্ষতির পরিমাণ বেশ বড়।

এদিকে এক বিবৃতিতে বিএলএফ মুখপাত্র মেজর গহরাম বালোচ অভিযানটিকে ‘বালোচ জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের একটি নতুন ভোর’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। জোর দিয়ে জানিয়েছেন, মাকরান উপকূল থেকে কোহ-ই-সুলেমান পর্বতমালা পর্যন্ত একাধিক পাকিস্তানি ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়।

বিএলএফ মুখপাত্র দাবি করেছেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে নাস্তানাবুদ করতে খুব সাবধানে অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়েছিলো। যদিও বিস্তারিত কিছু জানান আর কিছু জানাননি তিনি। বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযান এখনও চলছে এবং তা শেষ হওয়ার পরেই ফলাফল সম্পর্কে আরও তথ্য প্রকাশ করা হবে।

অন্যদিকে, হামলার পরেই সক্রিয় হয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। বালোচ বিদ্রোহীদের ঘাঁটি রয়েছে এমন জায়গাগুলিতে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে। কেচ এবং পাঞ্জগুরের কিছু অংশে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

চলতি বছরের মার্চ মাসে বিএলএফ, বালোচ রিপাবলিকান গার্ডস (বিআরজি) এবং সিন্ধুপ্রদেশে সক্রিয় বিদ্রোহী সংগঠন ‘সিন্ধুদেশ রেভলিউশনারি আর্মি’ (এসআরএ)-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে নতুন যৌথমঞ্চ গড়েছে বিএলএ। বস্তুত পাকিস্তানের ইতিহাসে এই প্রথম বার ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে বালোচদের তিনটি প্রধান জনগোষ্ঠী মারি, মেঙ্গল এবং বুগতি প্রভাবিত সংগঠনগুলি। বেড়েছে আক্রমণের ধারও।

এর মধ্যেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন বাম’ চালু করেছে বিএলএফ। বিদ্রোহী গোষ্ঠীর স্পষ্ট বার্তা, ইসলামাবাদকে নাকানিচোবানি খাইয়ে বেলুচিস্তানকে পাকিস্তানের দখল থেকে বার করে আনতে বদ্ধপরিকর তারা।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।