থাই-কম্বোডিয়া সংঘর্ষ থামিয়ে এবার মিয়ানমার সংকট সমাধানে নজর আনোয়ার ইব্রাহিমের
 
                 
নিউজ ডেস্ক
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্ত সংঘাত নিরসনে সফল কূটনৈতিক উদ্যোগের পর এবার মিয়ানমারের জটিল সশস্ত্র সংকট সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা নিতে যাচ্ছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনে আনোয়ারের মধ্যস্থতাই বড় ভূমিকা রেখেছে বলে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
গত ১৮ জুলাই ভোরে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হলে ৩০ জনেরও বেশি বেসামরিক লোক প্রাণ হারান। টানা চারদিনের সহিংসতায় উপদ্রুত এলাকায় মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়। তবে মালয়েশিয়ার কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ২২ জুলাই সংঘর্ষের অবসান ঘটে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২৮ জুলাই পুত্রজায়ায় অনুষ্ঠিত মালয়েশিয়া-সঞ্চালিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই এবং কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত অংশ নেন। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে ঐকমত্যে পৌঁছানো হয়।
এই সাফল্যের পর আনোয়ার ইব্রাহিম নিজেই জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে জটিল মানবিক সংকট—মিয়ানমার পরিস্থিতি নিরসনে আসিয়ান নেতৃত্বে মালয়েশিয়া একই ধরনের মধ্যস্থতা চালাতে প্রস্তুত।
আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের বর্তমান সভাপতি হিসেবে আনোয়ারের এই বলিষ্ঠ ভূমিকাকে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা ‘নীতিগত অ-হস্তক্ষেপ’ থেকে কার্যকর নেতৃত্বে রূপান্তরের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত অনিল ওয়াধওয়া বলেন, “আনোয়ার ইব্রাহিম আসিয়ানকে নিষ্ক্রিয় ফোরাম থেকে একটি দায়িত্বশীল কৌশলগত শক্তিতে পরিণত করছেন। বিশেষত মিয়ানমার সংকটের মতো মানবিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে এটি সময়োচিত প্রয়াস।”
এদিকে চুলালংকর্ন ইউনিভার্সিটির নিরাপত্তা বিশ্লেষক কাভি চংকিটাভর্ন মন্তব্য করেন, “আনোয়ারের নেতৃত্বে আসিয়ান আবারও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। আসিয়ান যদি সত্যিই মিয়ানমার সংকট সমাধান করতে চায়, তাহলে মালয়েশিয়ার নেতৃত্বেই তা সম্ভব।”
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে অন্তত ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। দেশটিতে বর্তমানে সামরিক জান্তা, ছায়া সরকার (ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট—এনইউজি) ও অন্তত ২০টিরও বেশি সশস্ত্র জাতিগোষ্ঠী জড়িত এক গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত, থাই-কম্বোডিয়া সংঘর্ষের সময় আসিয়ানের পূর্ববর্তী মধ্যস্থতার চেষ্টা ব্যর্থ হলেও এবার মালয়েশিয়ার সক্রিয় নেতৃত্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে। একই মডেল প্রয়োগ করে মিয়ানমারে আলোচনার টেবিল বসানো গেলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় স্থিতিশীলতা ফেরানো সম্ভব বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।
