মিয়ানমারে বন্দিশিবিরে বৈদ্যুতিক শক, ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের প্রমাণ জাতিসংঘের হাতে

মিয়ানমারে বন্দিশিবিরে বৈদ্যুতিক শক, ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের প্রমাণ জাতিসংঘের হাতে

মিয়ানমারে বন্দিশিবিরে বৈদ্যুতিক শক, ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের প্রমাণ জাতিসংঘের হাতে
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

জাতিসংঘ সমর্থিত একটি স্বাধীন তদন্ত দল মিয়ানমারের বিভিন্ন বন্দিশিবিরগুলোতে গত এক বছরে সুনিয়ন্ত্রিত নির্যাতন ও যৌন সহিংসতার ব্যাপক প্রমাণ পেয়েছে। নির্যাতনের ধরনগুলোর মধ্যে রয়েছে বৈদ্যুতিক শক, গলাকাটা, সংঘবদ্ধধর্ষণ ও যৌনাঙ্গ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো নানা অবর্ণনীয় বর্বরতা।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) আন্তর্জাতিক এই স্বাধীন তদন্ত দলটির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানান দলের প্রধান নিকোলাস কোউমজিয়ান। প্রতিবেদনে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে গৃহযুদ্ধের কবলে পড়েছে মিয়ানমার। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ওপর নির্মম নিগ্রহের পর সামরিক শাসনের বিরোধীরা অস্ত্র হাতে নিয়েছেন এবং বর্তমানে দেশটির বৃহৎ অংশে সংঘাত অব্যাহত রয়েছে।

তদন্ত দল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের শনাক্তকরণে বেশ অগ্রগতি করেছে। এসব নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বন্দি ক্যাম্পগুলো অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার যোদ্ধা ও নিরীহ বেসামরিকদের নির্বিচারে হত্যা করেছে। এসব হত্যাকাণ্ডে সামরিক বাহিনী, সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং বিরোধী সংগঠনের সদস্যরা জড়িত।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের আটক কেন্দ্রগুলোতে লাঠি দিয়ে মারধর চালানো, বৈদ্যুতিক শক দেওয়া, গলাকাটা, সংঘবদ্ধধর্ষণ, যৌনাঙ্গ পুড়িয়ে দেওয়াসহ অন্যান্য যৌন সহিংসতার ঘটনা নিয়মিত ঘটছে।

নিকোলাস কোউমজিয়ান বলেন, আমাদের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে মিয়ানমারে বর্বরতার মাত্রা ও ঘনত্ব বাড়ছে। আমরা প্রত্যাশা করি শিগগির এই অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। আমরা চোখে দেখা ও অন্যান্য প্রমাণ সংগ্রহ করেছি, যা মিয়ানমারের বন্দি ক্যাম্পগুলোতে নির্যাতনের প্রমাণে যথেষ্ট।

তদন্ত দল দেশটির রাখাইন রাজ্যের সংঘর্ষ ও নির্যাতনের বিষয়ে নতুন অনুসন্ধান শুরু করেছে, যেখানে বর্তমানে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও বিরোধী আরাকান আর্মির মধ্যে লড়াই চলছে।

২০১৭ সালে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। গত বছর রাখাইনের সংঘর্ষ বৃদ্ধির কারণে আরও প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

২০১৮ সালে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের অধীনে প্রতিষ্ঠিত ‘মিয়ানমার স্বাধীন অনুসন্ধান যন্ত্র’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে আসছে। এই দল আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ও জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা সংক্রান্ত মামলার প্রমাণাদি সরবরাহ করেছে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।