বান্দরবানে স্বজাতির ৫ যুবক কর্তৃক মারমা ছাত্রী গণধর্ষণ: ন্যায়বিচারের দাবি পিসিসিপির
![]()
নিউজ ডেস্ক
বান্দরবান পার্বত্য জেলার রুমা উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির এক মারমা ছাত্রীকে তার স্বজাতির পাঁচ যুবক দ্বারা গণধর্ষণের শিকার হওয়ার পরও ন্যায়বিচার না দিয়ে সামাজিক বিচারের নামে প্রহসন চালানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটি।
আজ বুধবার (২০ আগস্ট) সকালে গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে পিসিসিপির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন কায়েস ও সাধারণ সম্পাদক মো. হাবীব আজম জানান, পাইন্দু হেডম্যান পাড়ার পাঁচ অভিযুক্তের নাম হলো – ক্যাহা ওয়াইং মারমা, ক্যওয়ং সাই মারমা, চহাই মারমা, উহাই সিং মারমা এবং ক্য সাই ওয়ং মারমা।
পিসিসিপি বিবৃতিতে বলা হয়, ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার জানিয়েছে, মাসের শুরুতে শৈহাইনু মার্মা প্রথমে কিশোরীকে একা পেয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে তাঁর চার বন্ধুও ভয় দেখিয়ে একই অপরাধে জড়িত হয়। নির্যাতনের সীমা অতিক্রম করলে কিশোরী পরিবারকে বিষয়টি জানায়।
কিন্তু গত ১৯ আগস্ট পাইন্দু হেডম্যান পাড়ায় কারবারী থোয়াইসা মার্মার সভাপতিত্বে এক সামাজিক সালিশ বসে। পাইন্দু ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গংবাসে মার্মা এবং পাইন্দু মৌজার হেডম্যান মংচউ মার্মাগং-এর নেতৃত্বে অভিযুক্তদের মাত্র ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। জরিমানার টাকা এখনো পরিশোধ হয়নি। এছাড়া ভুক্তভোগীর পরিবারকে পাড়ায় আটকে রাখা হয়েছিল যাতে তারা আইনি পদক্ষেপ নিতে না পারেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিষয়টি সামাজিক মিডিয়ায় প্রচারিত হওয়ার পর বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে রুমা থানার পুলিশ অভিযানে ৫ জনের মধ্যে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। পিসিসিপি নেতৃবৃন্দ বাকি দুই আসামীকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন।
পিসিসিপি সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আজ যদি বাঙালী কিশোরী একই পরিস্থিতিতে হত, তাহলে এতো লেখালেখি, মিছিল ও বিক্ষোভ দেখা যেত। কিন্তু স্বজাতি অপরাধী হলে নীরব থাকা মানে কি মানবাধিকারের চেতনা নেই?”
পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটি জোর দিয়ে দাবি করেছে, টাকা দিয়ে এমন ভয়ঙ্কর অপরাধ ধামাচাপা দেওয়া কেবল অন্যায় নয়, ভবিষ্যতে আরও অপরাধের পথ খুলে দেবে। তারা প্রশাসনের কাছে দাবী জানাচ্ছে, বাকি দুই অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
পিসিসিপি বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ধর্ষণ কোনো সামাজিক সালিশের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হতে পারে না। জনমতের একটাই দাবি – ভুক্তভোগী কিশোরীর পাশে দাঁড়িয়ে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হোক এবং কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
পিসিসিপি নেতৃবৃন্দ এই ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন জেএসএস, ইউপিডিএফ ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর নীরবতাকেও নিন্দা জানিয়েছেন। প্রশ্ন তুলেছেন, স্বজাতি অপরাধী হলে কি তাদের নীরব থাকা মানে ভুক্তভোগীর অধিকারকে এড়ানো?
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।