নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে ৪০রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সমুদ্রে ফেলে দিয়েছিলো ভারত
![]()
নিউজ ডেস্ক
ভারতের নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে মায়ানমারের ৪০ জন নিপীড়িত রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সমুদ্রে ফেলে দিয়েছিল ভারত। এমনই অভিযোগ করেছেন ৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী। তাদের অভিযোগ, রাজধানী দিল্লি থেকে আটক করে নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে পরে তাদের সাগরে ফেলে দেওয়া হয়।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
জাতিসংঘ বলছে, ভারত রোহিঙ্গাদের জীবনকে ‘চরম ঝুঁকির’ মুখে ঠেলে দিয়েছে।
বিবিসি জানায়, গত ৯ মে সর্বশেষ ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন নুরুল আমিন। সংক্ষিপ্ত ফোনালাপটি ভয়ংকর সংবাদ বয়ে আনে। তিনি জানতে পারেন, তার ভাই খাইরুলসহ পরিবারের আরও চারজনকে ভারতের সরকার মায়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে। যেখান থেকে তারা বহু বছর আগে প্রাণভয়ে পালিয়ে এসেছিলেন।
মায়ানমারে বর্তমানে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ চলছে। ২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী জান্তার বিরুদ্ধে লড়ছে কিছু জাতিগত গোষ্ঠী ও প্রতিরোধ বাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে আমিনের পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলনের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

বিবিসি জানায়, তাদের দিল্লি থেকে সরিয়ে নেওয়ার তিন মাস পর বিবিসি মায়ানমারে ওই রোহিঙ্গাদের খুঁজে পায়। বেশিরভাগই আশ্রয় নিয়েছেন বাহটু আর্মি (বিএইচএ)-এর কাছে। বিএইচএ মূলত একটি প্রতিরোধ গোষ্ঠী যারা দক্ষিণ-পশ্চিম মায়ানমারে জান্তার সেনাদের বিরুদ্ধে লড়ছে।
এসব শরণার্থী ও দিল্লিতে থাকা তাদের স্বজনদের দাবি, বিশেষজ্ঞদের তদন্ত ও তথ্য জোগাড় করে বিবিসি ঘটনার ধারাবাহিকতা মিলিয়ে দেখেছে।
বিবিসি দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই শরণার্থীদের দিল্লি থেকে বিমানে বঙ্গোপসাগরের একটি দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে নিয়ে শেষে আন্দামান সাগরে ফেলে দেওয়া হয়। তবে, ফেলে দেওয়ারা আগে তাদের লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয়েছিল। পরে সাঁতরে তীরে ওঠেন তারা। এখন তারা মিয়ানমারে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি।
জন নামে এক রোহিঙ্গা ফোনে তার ভাইকে জানান, ‘আমাদের হাত বেঁধে, চোখ-মুখ ঢেকে বন্দির মতো জাহাজে তোলা হলো। তারপর সমুদ্রে ফেলে দিলো।’
মায়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক টমাস অ্যান্ড্রুজ বলেন, ‘এসব অভিযোগ প্রমাণের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তার হাতে আছে। তিনি জেনেভায় ভারতের মিশন প্রধানের কাছে এ সংক্রান্ত প্রমাণও জমা দিয়েছেন, কিন্তু কোনো উত্তর পাননি।’
এদিকে, বিবিসির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও বহুবার যোগাযোগ করেছে, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।