ভারত–মিয়ানমার সীমান্তে বর্ডার ফেন্সিংয়ের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ জোরো, প্রতিরোধ গড়ে তোলার হুমকি

ভারত–মিয়ানমার সীমান্তে বর্ডার ফেন্সিংয়ের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ জোরো, প্রতিরোধ গড়ে তোলার হুমকি

ভারত–মিয়ানমার সীমান্তে বর্ডার ফেন্সিংয়ের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ জোরো, প্রতিরোধ গড়ে তোলার হুমকি
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

ভারত–মিয়ানমার সীমান্তে প্রস্তাবিত বর্ডার ফেন্সিংয়ের বিরুদ্ধে তীব্র অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে মিজোরামের ‘জো রি–ইউনিফিকেশন অর্গানাইজেশন’ (জোরো)। সংগঠনটি জানিয়েছে, সীমান্তে এ বেড়া নির্মাণ রোধে তারা “সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে” প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

আইজলে এক সংবাদ সম্মেলনে জোরোর শীর্ষ নেতারা ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (এমএইচএ) চলমান ফেন্সিং কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, স্থানীয়ভাবে ‘দাইদান্না বাং’ নামে পরিচিত এ প্রকল্প জো জনগোষ্ঠীর সামাজিক–সাংস্কৃতিক কাঠামোকে ধ্বংস করবে।

জোরো বলছে, জো জাতিগোষ্ঠী বসবাসকারী বিভিন্ন অঞ্চলকে একীভূত করার লক্ষ্যে কাজ করে আসা এই সংগঠন ফেন্সিং পরিকল্পনাকে গ্রহণযোগ্য মনে করে না। “একই বংশ, রক্ত ও পূর্বপুরুষের মানুষদের আলাদা করার এ পরিকল্পনা কোনোমতেই মেনে নেওয়া যায় না,” বলেন এক নেতা।

সংগঠনটির দাবি, সীমান্তে বেড়া নির্মাণ হলে জো জনগোষ্ঠীর ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। দুই দেশের জো সম্প্রদায়ের মধ্যে রক্ত–সম্পর্কের যে যোগসূত্র রয়েছে, তা বিচ্ছিন্ন হয়ে পরিবারভেদে সামাজিক বিভাজন তৈরি হবে এবং তাদের পরিচয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

জোরো এও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে প্রস্তাবিত ফেন্সিং ভারতীয় ভূখণ্ডের অন্তত ১৫০ মিটার ভেতরে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে, যা মিজোরামের কৃষিজমি, চরাঞ্চল ও নদী–সম্পদ ব্যবহারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। অনেক পরিবারের জীবিকা এতে হুমকির মুখে পড়বে।

সংগঠনটি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, অতীতে ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তে ফেন্সিংয়ের কারণে মিজোরামের বেশ কিছু গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এছাড়া বন্যপ্রাণীর পারंपরিক চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবেশগত বিপর্যয়ের আশঙ্কার কথাও উঠে এসেছে।

জোরোর ভাষ্য, অনুরূপ ফেন্সিং প্রকল্প অরুণাচল প্রদেশ ও নাগাল্যান্ডেও ব্যাপক বিরোধিতার মুখে পড়েছে, আর মণিপুরেও স্থানীয় আপত্তির কারণে নির্মাণকাজ খুবই সীমিত। মিজোরামের আপত্তি আগে বিবেচনায় নেওয়া হলেও নতুন করে প্রকল্পটি আবারও সক্রিয় করা হয়েছে এবং সীমান্তের কয়েকটি জেলায় জরিপকাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা যায়।

এ পরিস্থিতিতে ভারত–মিয়ানমার সীমান্তে প্রস্তাবিত ফেন্সিংয়ের বিরুদ্ধে রাজ্যের রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সিভিল সোসাইটি, সরকার ও সাধারণ মানুষকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জোরো।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সীমান্ত–উপকূলবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তার অজুহাতে ফেন্সিং প্রকল্প বাড়তে থাকলেও স্থানীয় জনগোষ্ঠী তা তাদের সাংস্কৃতিক–সামাজিক অস্তিত্বের ওপর হুমকি হিসেবে দেখে আসছে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *