মিরপুরে সেনা অভিযানে বিপুল অস্ত্র উদ্ধার

মিরপুরে সেনা অভিযানে বিপুল অস্ত্র উদ্ধার

মিরপুরে সেনা অভিযানে বিপুল অস্ত্র উদ্ধার
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

রাজধানীর মিরপুরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। তবে এ ঘটনায় সন্ত্রাসী ‘বোমা কজু’ ও ‘লেংড়া রুবেল’সহ তাদের সহযোগীরা পালিয়ে গেছে।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোর ৪টার দিকে মিরপুরের পল্লবী থানাধীন পুরান সিটি মার্কেট (আলুপট্টি) এলাকার একটি পরিত্যক্ত ভবনে এই অভিযান চালানো হয় বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে সেনাবাহিনী জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, পল্লবীর ওই পরিত্যক্ত ভবনে কুখ্যাত সন্ত্রাসী ‘বোমা কজু’ ও ‘লেংড়া রুবেল’ তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার উদ্দেশে একত্রিত হয়েছিল। সেখানে নিজেদের মধ্যে অস্ত্র বিতরণের পরিকল্পনাও ছিল তাদের। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে বিশেষ অভিযান চালায়।
 
তবে অপরাধীদের নিজস্ব তথ্যদাতা থাকায় এবং ভবনটি একটি ফুটবল মাঠের চেয়েও বড় হওয়ায় অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে যায় তারা। সুগম কোনো রাস্তা না থাকায় এবং ভবনের বিশালত্বের সুযোগ নিয়ে পেছনের গেট দিয়ে প্রায় ১৫-২০ জন দুষ্কৃতকারী পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, অন্যদের সঙ্গে মূল হোতা ‘বোমা কজু’ ও ‘লেংড়া রুবেল’ও সেখান থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। তবে এই সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে বিশেষ অভিযান ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। উক্ত পরিত্যক্ত ভবন থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ আংশিক উদ্ধার করা হয়েছে।
 
তদন্তের বরাত দিয়ে সেনাবাহিনী জানায়, বিশাল এই পরিত্যক্ত ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রধান আস্তানায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয়দের বর্ণনা অনুযায়ী, মাঝেমধ্যেই এই ভবনের ভেতর থেকে ককটেল বিস্ফোরণ এবং গোলাবর্ষণের শব্দ পাওয়া যেত। ইতিপূর্বে উক্ত স্থান থেকে মৃতদেহও উদ্ধার করা হয়েছে। মূলত সন্ত্রাসী ‘বোমা কজু’ এবং ‘লেংড়া রুবেল’ নিয়মিতভাবে তাদের সঙ্গীদের নিয়ে এখানে একত্রিত হতো। গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী, এই পরিত্যক্ত ভবনটি তারা মূলত ‘টর্চার সেল’ হিসেবে ব্যবহার করত।
 
সেনাবাহিনী আরও জানায়, অভিযানের লক্ষ্যবস্তু কুখ্যাত সন্ত্রাসী ‘বোমা কজু’ এবং ‘লেংড়া রুবেল’ উভয়ের বিরুদ্ধেই হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। ‘বোমা কজু’ পূর্বে ককটেল বিস্ফোরণে আহত হয়ে শ্যামলীর ডক্টরস কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। সে মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের অনেক অপরাধীর সাথে যোগাযোগ বজায় রাখে। অন্যদিকে, ‘লেংড়া রুবেল’ আলুপট্টি সংলগ্ন বিহারি ক্যাম্পগুলোতে নিজস্ব আধিপত্য বজায় রেখে আসছিল। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দেশে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
 
অভিযানস্থলে তল্লাশি চালিয়ে নিম্নবর্ণিত অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে:

  • ৩টি রিভলভার এবং ১টি রিভলভার কভার।
  • ৭৩ রাউন্ড তাজা গুলি (Live Ammo)।
  • ১টি চাপাতি এবং ০২টি ছুরি।
  • ৩০ গ্রাম গান পাউডার এবং ককটেল তৈরির সরঞ্জাম (সুতা)।
  • ১টি বিস্ফোরিত ইম্প্রোভাইজড ককটেল।
উদ্ধার করা মালামালগুলো সেনাবাহিনীর হেফাজতে নেয়া হয়েছে এবং পল্লবী থানার সহযোগিতায় পলাতক সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় এবং সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা সজাগ ও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *