মালির প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী আটকঃ দ্রুত মুক্তির আহ্বান জাতিসংঘের
 
                 
নিউজ ডেস্ক
মালির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে আটক করেছে দেশটির সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা। গত ২৪ মে সোমবার এ ঘটনা ঘটেছে বলে একাধিক সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে।
এতে মালিতে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা আরও গভীর হয়ে উঠল, কারণ মাত্র কয়েকমাস আগে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল।
মালির কূটনৈতিক ও সরকারি সূত্রগুলো রয়টার্সকে বলেছে, সরকারের মন্ত্রিসভা রদবদলের পদক্ষেপে সামরিক বাহিনীর দুই কর্মকর্তা তাদের অবস্থান হারানোর কয়েক ঘণ্টা পর প্রেসিডেন্ট বাহ এনদাও, প্রধানমন্ত্রী মোক্তার উয়ান ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী সুলেইমানে দৌকৌরেকে রাজধানী বামাকো থেকে আটক করে নিকটবর্তী কাতির সামরিক ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে গত বছরের অগাস্টে সামরিক বাহিনী প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বৌবাকার কেইতাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল।
দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় মরুভূমির বিশাল এলাকা আল কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সম্পর্কিত জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো দখলে থাকার মধ্যে রাজধানীতে পরপর এসব ঘটনায় পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে চলা অস্থিরতা আরও ডালপালা মেলতে পারে।
অগাস্টে ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর বেসামরিক শাসন ফেরানোর লক্ষ্যে এনদাও ও উয়ানকে ১৮ মাসের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব দেয় সামরিক বাহিনী, কিন্তু তারা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদের ওপর সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে যাচ্ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে মালির এক সাবেক সরকারি আমলা রয়টার্সকে বলেন, “অভ্যুত্থানের স্তম্ভদের পদচ্যুত করা বড় ধরনের ভুল ছিল। সম্ভবত তাদেরকে তাদের নিজ জায়গায় ফেরানোর লক্ষ্যেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।”
সামরিক বাহিনীর মূল উদ্দেশ্য তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের ওই প্রধানদের গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে সামরিক বাহিনীর একজন কর্মকর্তা কাতি থেকে জানিয়েছেন।
রয়টার্সকে তিনি বলেন, “তারা যা করেছে তা ভালো করেনি। সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, আমরা তাদের তা জানিয়ে দিচ্ছি।”
আঞ্চলিক নিরাপত্তাহীনতায় ভূমিকা রেখে চলা দরিদ্র দেশ মালিকে পতনের হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করছে প্রতিবেশী দেশ ও পশ্চিমা শক্তিগুলো। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে অর্ন্তদন্দ্ব তাদের উদ্যোগকে জটিল করে তুলেছে।
মালিতে থাকা জাতিসংঘ মিশন দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের নেতাদের ‘অবিলম্বে শর্তহীন’ মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, যারা এই নেতাদের আটক করে রেখেছে নিজেদের কর্মকাণ্ডের জন্য তাদের জবাব দিতে হবে।
এদিকে, সোমবারের এ ঘটনায় আটকদের দ্রুত মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। এক টুইট বার্তায় সংস্থাটির পক্ষ থেকে এই আহ্বান জানানো হয়।
নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়ে মালির সামরিক বাহিনীর এক শীর্ষ সদস্য এ খবর নিশ্চিত করেছেন। গতকাল সোমবার দেশটির মন্ত্রিসভার পুনর্গঠনের পর এ ঘটনাকে দৃশ্যত সামরিক অভ্যুত্থান হিসেবে দেখছে বিশ্ব মিডিয়া।
