রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর মৃত্যুতে আরসার শোক, আটক ১ - Southeast Asia Journal

রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর মৃত্যুতে আরসার শোক, আটক ১

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

আততায়ীদের গুলিতে রোহিঙ্গাদের অন্যতম নেতা মুহিবুল্লাহর নিহত হওয়ার ঘটনায় শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)। তবে বিবৃতিটি নিয়ে সাধারণ রোহিঙ্গাদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। হঠাৎ করে আরসার এমন ভূমিকাকে সাজানো নাটক বলছেন তাঁদের অনেকে।

এর আগে মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের দিন গত বুধবার রাতে গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে রোহিঙ্গা এই নেতার আপন ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বলেন, মাস্টার আব্দুর রহিম, লালু, মুরশিদ, এই তিনজন আরসার সদস্য। আরসাই তাঁর ভাইকে খুন করেছে। যদিও পরবর্তী দিন কারও নাম উল্লেখ না করে ২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে উখিয়া থানায় হাবিবুল্লাহ নিজে বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এরপর গত শুক্রবার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে সলিম উল্লাহ প্রকাশ লম্বা সলিম (২৬) নামে একজনকে উখিয়ার ৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আটক করে পুলিশ। সলিম আরসার সদস্য কি’না সে প্রশ্নের জবাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা কোনো উত্তর দিতে রাজি হননি। তবে ৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা জানান, আটক হওয়া সলিম আরসা’র সক্রিয় সদস্য।

সলিম আটকের দিন শুক্রবার (১লা অক্টোবর) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরসার বিবৃতিটি প্রকাশ পায়। আরসা বা আল ইয়াকিন হিসেবে পরিচিত সংগঠনটির কমান্ডার ইন চিফ আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনি স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে মুহিবুল্লাহর মৃত্যুতে শোক জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এই কমিউনিটি লিডারের অকালমৃত্যুর জন্য প্রচণ্ডভাবে মর্মাহত এবং দুঃখিত, যিনি অজ্ঞাত বহুজাতিক ও সীমান্ত কেন্দ্রিক সন্ত্রাসীদের দ্বারা নিহত হয়েছেন।

আরসাকে মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত করার ব্যাপারে বিবৃতিতে সরাসরি কিছু বলা না হলেও উল্লেখ্য করা হয়, ভিত্তিহীন ও শোনা অভিযোগের প্রেক্ষিতে আঙুল তোলার বদলে প্রকৃত অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনার সময় এসেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি রোহিঙ্গা সংগঠনের নেতা বলেন, এটি আরসার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। তাঁরা ঘটনার মোড় অন্যদিকে নিয়ে যেতে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা ভাষায় আরসার মুখপাত্র দাবি করা মোহাম্মদ ছোহাইব নামে এক ব্যক্তির অডিও বার্তাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেই অডিও বার্তাটিতে মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

ভিডিওটি প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুহিবুল্লাহর ঘনিষ্ঠজন জানান, এটি আরসার বানানো পরিকল্পিত ভিডিও। বক্তব্য দেওয়া কেউই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। এ ধরনের আইনের আওতায় আনলে প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন হবে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে উখিয়ার কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা শিবিরে নিজ অফিসে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে মৃত্যু অবধি সরব থাকা মুহিবুল্লাহর জানাজায় ঢল নামে হাজার হাজার রোহিঙ্গার।