আঞ্চলিক রাজনীতির অস্থিরতা বান্দরবানের দিকে
 
                 
ডেস্ক রিপোর্টঃ
রাতের আঁধারে হামলা, অপহরণ ও খুনের ঘটনায় আতঙ্ক এবং ভয়ে দিনানিপাত করছেন বান্দরবানের রাজবিলা ও কুহালং ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। নিরাপত্তাজনিত কারণে ইতিমধ্যেই এলাকা ছেড়ে জেলা সদরের ভাড়া বাসায় উঠেছেন অনেকে। আর দূর্গম এলাকার বাসিন্দারা রয়েছেন সংশয়ে।
গত দেড় মাসে জেলা সদরের আশে-পাশে বেশ কয়েকটি হত্যাকান্ডের ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। বাহির থেকে আসা ব্যবসায়ীরাও নিরাপত্তাজনিত কারণে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন এসব এলাকা থেকে। ফলে অর্থনীতিতেও ধীরে ধীরে নেমে আসছে স্থবিরতা। নিজেদের উৎপাদিত পন্য নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় উপজাতিরা।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অপর ২ জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির চেয়ে বান্দরবানকে সবাই একসময় সম্প্রীতির বান্দরবান হিসেবেই চিনতেন। নির্বিঘ্নে ব্যবসা বানিজ্য করা সম্ভব হতো, কিন্তু সময়ের সাথে আঞ্চলিক রাজনীতির ধরণ পাল্টেছে। সবার দৃষ্টি এখন বান্দরবানের দিকে। সম্প্রতি অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় তারা সেসব এলাকায় যেতে নারাজ। তাদের ভাষ্যমতে, “ প্রয়োজনে এসব এলাকায় ব্যবসা করবো না”।
সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, য়ই সা প্রু মারমা বলেন, এলাকাগুলোতে বর্তমানে আতঙ্কে দিন যাচ্ছে এলাকাবাসীর, সন্ধ্যার পরপরই এলাকা ত্যাগ করছেন পুরুষরা। তিনি জানান, বিভিন্ন এলাকার লোকজন ইতিমধ্যে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। তিনি বলেন, “আমরা বান্দরবানে সংঘাত চাইনা, সম্প্রীতি চাই।”
ধারণা করা হচ্ছে, পাশ্ববর্তী জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে নিরাপত্তাবাহিনীর ব্যাপক অভিযানের মুখে সম্প্রতি বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসীকে আটক ও অস্ত্র উদ্ধারের পর সেখানে কোনঠাসা হয়ে পড়া পাহাড়ের আঞ্চলিক উপজাতি সংগঠন জেএসএস (সন্তু) ও ইউপিডিএফ (প্রসীত)’র সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সম্প্রীতির বান্দরবানকে বর্তমানে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বেঁছে নিয়েছে। তাই সেখানে আতঙ্ক তৈরী ও তাদের অবস্থান জানান দিতেই একের পর এক হত্যাকান্ড চালাচ্ছে।
তবে নিরাপত্তাবাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, বান্দরবানে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি অপহরণ ও খুনের ঘটনায় তারা অভিযান পরিচালনা করছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে অপহৃতদের উদ্ধার ও সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া বান্দরবানে যে কোন মূল্যে সম্প্রীতি ধরে রাখতে নিরাপত্তাবাহিনী বদ্ধপরিকর বলেও জানিয়েছে সূত্রটি।
