ধর্মীয় উপাসনালয় নির্মানের নামে শত একর জমি দখলের অভিযোগ ভান্তের বিরুদ্ধে!
![]()
নিউজ ডেস্কঃ
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মানের নামে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সরকারী খাস ভূমি দখলের পর এবার সম্প্রীতির বান্দরবানে ধর্মীয় উপাসনালয়ের নামে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের শত একর ভূমি দখলের অভিযোগ উঠেছে বান্দরবানের এক প্রভাবশালী ধর্মীয় গুরুর বিরুদ্ধে।
১২জুন বুধবার সকালে বান্দরবান শহরের রাজমাঠ এলাকায় একটি রেষ্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা বান্দরবানের রাম জাদির ধর্মীয় গুরু উচাহ্লা ভান্তের বিরুদ্ধে ভূমি দখলের এ অভিযোগ তুলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বান্দরবান শহরের রোয়াংছড়ি সড়কের পাচঁ কিলোমিটার নামক স্থানে ধর্মীয় গুরু উপঞাঞা জোত মহাথেরো (প্রকাশ উচাহ্লা ভান্তে) এবং তার অনুসারীরা ২০০৬ সাল থেকে আইন অমান্য করে এবং প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে বিভিন্ন ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১শত একর জমি জবর দখল করে নিজস্ব বলয় তৈরী করেছে বলে অভিযোগ করেন কয়েকটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্মীয় যেকোন বিষয় স্পর্শকাতর হওয়ায় এবং এ বিষয়ে পাহাড়ের প্রশাসন নমনীয় হওয়ায়, ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে উচাহ্লা ভান্তে বেশ কয়েকবছর ধরে বান্দরবানের উক্ত এলাকাগুলোতে নিরীহ লোকজন ও প্রতিষ্ঠানের ভূমি দখল করে ধর্মীয় বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করে যাচ্ছেন। কেউ কিছু বলতে চাইলে তার ওপর নেমে আসে করুন নির্যাতন ও হুমকি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বড়ুয়া কল্যাণ সমিতির প্রেসিডেন্ট দীলিপ বড়ুয়া বলেন- বান্দরবান ফাতিমা রাণী গীর্জা (ক্যাথলিক মিশন) এর ৫ একর ৫৭ শতক ধানী জমিতে উৎপাদিত শস্য থেকে প্রায় তিনশর বেশি অসহায় শিশু কিশোরদের খাবারের ব্যবস্থা হতো। কিন্তু উচাহ্লা ভান্তে ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে ২০১৪ সালের ৫ এপ্রিল উক্ত জমি জবর দখল করেছেন। যার কারনে সেই প্রতিষ্ঠান শিশুদের ভরণ পোষনে হিমশিম খাচ্ছে।
এভাবে উচাহ্লা ভান্তে কর্তৃক রাজপুত্র নুমং প্রু চৌধুরীর ৮একর, বাহাদুরের ৫ একর, সুলতান আহমদের ৫একর, মহিদুর রহমানের ৫একর, তৈদুহা ত্রিপুরার ৫ একর, মিরাজ শাহ নেওয়াজের ৫ একর, মজিবুর রহমানের ৪.৫০একর, আবুল হাশেম, জোবায়ের, আমেনা, বাবুল ও আব্দু রহিমের ১.৭২একর, সোয়াংহ্লা প্রুর ৪একর, নবাব মিঞার ১ একর, কাজী মুজিবুর রহমানের ১.৩৬একর, হ্লাপাই মং মার্মা, অতুল আসাম, জয়চন্দ্র ত্রিপুরা, হাকিলা ত্রিপুরা, ইমারু ত্রিপুরার ৪একর, সড়ক ও জনপথ বিভাগের মোট ৩.৫০ একর, আমিনুল হকের ৩একর, র.ক.ম নুরুল আলমের ৪.৫০ একরসহ অনেক ভুক্তভোগীর জমি জবর দখলের অভিযোগ তালিকা উপস্থাপন করা হয়।
সংবদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- রাজপুত্র নু মং প্রু (হেডম্যান), চট্টগ্রাম ক্যাথলিক ধর্মপ্রদেশ এর ফাদার জেরোম ডি’রোজারিও, বড়ুয়া কল্যাণ সমিতির প্রেসিডেন্ট পৌর কাউন্সিলর দিলীপ বড়ুয়া , স্থানীয় ব্যবসায়ী মো: নুরুল আলম।
এসময় উচাহ্লা ভান্তের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নমনীয়তার কারণ জানতে চেয়ে ভুক্তভোগীরা ন্যায় বিচারের জন্য সরকারের উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।