পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার আদিবাসী পরিচয়ের দাবি, তীব্র প্রতিক্রিয়া পিসিসিপির
 
                 
নিউজ ডেস্ক
‘আদিবাসী’ পরিচয়ের দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার সাম্প্রতিক বক্তব্য এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটি।
পিসিসিপির দপ্তর সম্পাদক মো. জমির উদ্দিন স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়, গত ২৩ জুন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন, ২০১০’ সংশোধনের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। সভায় প্রস্তাবিত ‘নৃ-বৈচিত্র্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর আওতায় সাতটি ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন করে ‘জাতি-বৈচিত্র্য ইনস্টিটিউট’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সুপ্রদীপ চাকমা ‘আদিবাসী’ পরিচয়ের পক্ষে বক্তব্য দেন এবং বলেন, “আমরা আদিবাসী শব্দটি চাচ্ছি শুধু আমাদের আইডেন্টিফিকেশনের জন্য। আমরা পাহাড়ি-বাঙালি একসাথে থাকতে চাই। কারণ বাঙালিরা না থাকলে আমাদের উন্নয়ন সম্ভব নয়।”
এ বক্তব্যকে সংবিধানবিরোধী ও বিভাজনমূলক দাবি করে পিসিসিপি জানিয়েছে, একজন দায়িত্বশীল পদে থেকে এমন বক্তব্য প্রদান অনভিপ্রেত এবং রাষ্ট্রের একক জাতিসত্তার ধারণার পরিপন্থী। সংগঠনটির দাবি, বাংলাদেশের সংবিধানের ৬(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী “রাষ্ট্রের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি এবং নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের নাগরিক”—এই নীতির বাইরে গিয়ে আদিবাসী পরিচয়ের দাবিকে উসকে দেওয়া রাষ্ট্রীয় স্বার্থের পরিপন্থী।
বিবৃতিতে পিসিসিপি আরও আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছে, সভায় ৭(ঘ) ধারা সংশোধনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির প্রস্তাব একপাক্ষিকতা তৈরি করতে পারে, যা পার্বত্য অঞ্চলে বাঙালিদের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিত্ব সংকুচিত করার ঝুঁকি তৈরি করবে।
পিসিসিপি চারটি প্রধান দাবি উত্থাপন করেছে—‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যবহার বন্ধে রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা, রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান নেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা, সাংস্কৃতিক অধিকার যেন সাংবিধানিক কাঠামোর বাইরে গিয়ে গোষ্ঠীগত আধিপত্য বিস্তারে ব্যবহৃত না হয় এবং পার্বত্য অঞ্চলে সহাবস্থান ও সমবিকাশ নিশ্চিতে রাষ্ট্রীয় সক্রিয়তা।
এছাড়া, উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার অতীত কর্মকাণ্ড নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। পিসিসিপির দাবি, বিভিন্ন বরাদ্দে অনিয়ম ও সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তিনি ইতোমধ্যেই বিতর্কিত হয়ে উঠেছেন। ভবিষ্যতে তিনি যেন রাষ্ট্রবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত না নেন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ জানিয়েছে—দেশের স্বার্থ বিরোধী কোনো উদ্যোগ বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে তারা ছাত্র ও জনতাকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।
